বিজন কুমার ফিরে গেলেন সিঙ্গাপুরে

ওয়ার্ক পারমিট জটিলতার কারণে রবিবার সিঙ্গাপুরে ফিরে গেছেন করোনাভাইরাস পরীক্ষায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের (জিকে) র‌্যাপিড কিট আবিষ্কারের নেতৃত্বদানকারী বিশিষ্ট মাইক্রোবায়োলজিস্ট বিজন কুমার শীল।

ডা. বিজন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর ত্যাগ করেন বলে জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্যের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু।

মিন্টু বলেন, ‘বাংলাদেশে ফিরে আসার জন্য ভিসা পেতে তাকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করবে। বাংলাদেশে কাজ করার জন্য সবসময়ই আগ্রহী, আশা করি, শিগগিরই তিনি ফিরে আসবেন। ’

নাটোরে জন্ম নেয়া ডা. বিজন সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব নিয়েছেন। তিনি প্রায় দেড় বছর ধরে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান হিসাবে কাজ করছেন। গত জুলাইয়ে তার ভিসা ও ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ শেষ হয়েছে।

জাহাঙ্গীর বলেন, করোনভাইরাসের কারণে ঘোষিত ভ্রমণ বিধিনিষেধের কারণে তার ওয়ার্ক পারমিট শেষ হওয়ার পরেও বাংলাদেশ থাকতে হয়েছে এ মাইক্রোবায়োলজিস্টকে।

তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে ডা. বিজনের ওয়ার্ক পারমিটের জন্য গণ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় সকল নথি জমা দিয়ে আবেদন করেছে। আমরা আশা করি, মাতৃভূমির জন্য কাজ করার জন্য তাকে ওয়ার্ক পারমিট দেয়া হবে।’

ডা. বিজন বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন ২০০২ সালে সিঙ্গাপুরের নিয়ম অনুযায়ী সেখানকার সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন। তার স্ত্রী এবং দুই সন্তান সিঙ্গাপুরে বসবাস করেন।

তিন বছরের চুক্তিতে ২০১৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তাকে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দেয়া হয়। বিজনের নেতৃত্বে একটি গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি দল করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি এবং অ্যান্টিজেন কিট আবিষ্কার করে।

গত ১৩ মে, জিআর কোভিড-১৯ র‌্যাপিড ডট ব্লট অ্যান্টিজেন এবং অ্যান্টিবডি কিটের নমুনা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষের কাছে পারফরম্যান্স ট্রায়ালের জন্য জমা দেয়।

তবে, নমুনা সংগ্রহের পদ্ধতিতে কিছু অসঙ্গতি শনাক্ত হওয়ার কারণে পরে বিএসএমএমইউকে ২ জুন তাদের করোনাভাইরাস-টেস্টিং অ্যান্টিজেন কিটের পারফরম্যান্স পরীক্ষা স্থগিত করার জন্য আবেদন করেন।

পরে, বিএসএমএমইউ অ্যান্টিবডি কিটের পরীক্ষা চালায় এবং করোনা শনাক্তে এটি পুরোপুরি কার্যকর নয় বলে জানায়। বিএসএমএমইউয়ের প্রতিবেদনের পরে, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তররের মহাপরিচালক (ডিজিডিএ) এ কিট ব্যবহারের অনুমোদন দেয়নি।

ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডা. বিজন ১৯৯৯ সালে ছাগলের প্লেগ নিয়ন্ত্রণের জন্য পিপিআর ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছিলেন। তিনি ২০০২ সালে দ্রুত পরীক্ষা পদ্ধতি এবং ২০০৩ সালে সার্স ভাইরাস দ্রুত পরীক্ষা পদ্ধতিও উদ্ভাবন করেছেন। সিঙ্গাপুরের সরকারের একজন বিজ্ঞানী হিসাবে ডা. বিজন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সার্স ভাইরাস প্রতিরোধেও মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন। সূত্র-ইউএনবি

আজকের বাজার/আখনূর রহমান