বিশ্বকাপের নয়নাভিরাম ১২ স্টেডিয়াম

অবশেষে সময়ের কাটা নেমে আসছে। আর মাত্র তিন দিন পরই রাশিয়ায় বসছে ফুটবল বিশ্বকাপের ২১তম আসর। এ নিয়ে ফুটবল দর্শকদের মধ্যে তুমুল উন্মাদনা ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এবারের ফুটবলমঞ্চে ৩২ দল পারফরম করবে। ১১টি শহরের ১২টি স্টেডিয়ামে এক মাস ধরে চলবে এই লড়াই।

২০১৮ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচ হবে লুঝনিয়াকি স্টেডিয়ামে। এ স্টেডিয়ামেই ফাইনালি লড়াই দিয়ে এর পর্দা নামবে।

এ ছাড়া গ্রুপ পর্বের ৪টি, শেষ ষোলোর একটি এবং সেমিফাইনালের একটি ম্যাচ হবে। এর দর্শক ধারণক্ষমতা ৮১ হাজার। স্টেডিয়ামটির পূর্ব নাম ছিল সেন্ট্রাল লেনিন স্টেডিয়াম।

এটি রাশিয়ার সবচেয়ে বড় ও জাতীয় স্টেডিয়াম। যার অবস্থান মস্কোর কামোভনিকিতে এলাকায়। জাতীয় ফুটবল দলের অনুশীলনের জন্য সেটি ব্যবহৃত হয়। ১৪ জুন স্বাগতিক রাশিয়া ও সৌদি আরবের মধ্য দিয়ে বিশ্বকাপ ফুটবল ম্যাচ আয়োজনের সাক্ষী হবে লুঝনিয়াকি।

সেন্ট পিটার্সবার্গ স্টেডিয়াম : এটি ক্রেস্টবস্কাই স্টেডিয়াম নামেও পরিচিত। স্টেডিয়ামটিকে জেনিথ অ্যারেনাও বলা হয়। এর অবস্থান সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরের ক্রিস্টভস্কাই আইল্যান্ডে। স্টেডিয়ামটির দর্শক ধারণক্ষমতা প্রায় ৬৭ হাজার। এখানে সাতটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। ১৫ জুন মরক্কো ও ইরানের মধ্যকার লড়াই দিয়ে বিশ্বকাপ ফুটবলের ম্যাচ আয়োজনের সাক্ষী হবে এটি। এ ছাড়া সেমিফাইনালের একটি এবং তৃতীয় স্থান নির্ধারণের ম্যাচটিও হবে সেখানে।

সোচি স্টেডিয়াম : এটি ফিস্ট অলিম্পিক স্টেডিয়াম নামেও পরিচিত। এর অবস্থান ক্রাসনোডারস্কি ক্রাই এলাকায়। স্টেডিয়ামটির যাত্রা হয় ২০১৩ সালে। এটির দর্শক ধারণক্ষমতা ৪৭ হাজার ৬৫৯ জন। বিশ্বকাপের ছয়টি ম্যাচ হবে এখানে। ১৫ জুন পর্তুগাল ও স্পেন লড়াই দিয়ে বিশ্বযাত্রা শুরু হবে সোচির। এ ছাড়া কোয়ার্টার ফাইনালের একটি ম্যাচ হবে সেখানে।

একতেরিনবার্গ অ্যারেনা : এটি সেন্ট্রাল স্টেডিয়াম ইয়েকাতেরিনবার্গ নামেও পরিচিত। স্টেডিয়ামটির অবস্থান ইয়েকাতেরিবার্গের ইউলিটসা রেফিনা এলাকায়। এর দর্শক ধারণক্ষমতা ৩৫ হাজার ৬৯৬ জন। বিশ্বকাপের চারটি ম্যাচ হবে এ স্টেডিয়ামে। ১৫ জুন মিসর ও উরুগুয়ের ম্যাচ দিয়ে বিশ্বযাত্রা শুরু হবে এটির।

ক্যাজান অ্যারেনা : এর যাত্রা শুরু হয় ২০১৩ সালে। এটির অবস্থান তাতারাস্থানে। স্টেডিয়ামটির দর্শক ধারণক্ষমতা ৪৫ হাজার ৩৭৯ জন। বিশ্বকাপের পাঁচটি ম্যাচ হবে এখানে। ১৬ জুন ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচ দিয়ে বিশ্ব পথচলা শুরু হবে এটির। কোয়ার্টার ফাইনালের একটি ম্যাচ হবে এ স্টেডিয়ামে।

নিঝনি নবোগরদ স্টেডিয়াম : ২০১৮ বিশ্বকাপ উপলক্ষেই এটি নির্মাণ করা হয়। এর অবস্থান ইউলিটসনা ডলসহানসকাইয়া এলাকায়। এটির দর্শক ধারণক্ষমতা ৪৫ হাজার। বিশ্বকাপের ছয়টি ম্যাচ হবে এখানে। এর মধ্যে রয়েছে কোয়ার্টার ফাইনালের একটি। ১৮ জুন সুইডেন ও কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের ম্যাচ দিয়ে অভিযাত্রা শুরু হবে স্টেডিয়ামটির।

রোস্তভ-অন-ডন স্টেডিয়াম : যে কটি স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের ম্যাচ হবে, এর মধ্যে সৌন্দর্যের দিক দিয়ে অন্যতম রোস্তভ-অন-ডন। এর অবস্থান রোস্তভ অভলাস্টে। স্টেডিয়ামটির দর্শক ধারণক্ষমতা ৪৫ হাজার। এখানে পাঁচটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। ১৭ জুন ব্রাজিল ও সুইজারল্যান্ডের লড়াই দিয়ে এটির বিশ্বযাত্রা শুরু হবে। এ ছাড়া শেষ ষোলোর একটি ম্যাচ হবে স্টেডিয়ামটিতে।

সামারা অ্যারেনা : এটি কসমস অ্যারেনা নামেও পরিচিত। এর অবস্থান সামারা অবলাস্টে। মূলত বিশ্বকাপ ফুটবল উপলক্ষেই এটি নির্মাণ করা হয়েছে। স্টেডিয়ামটির দর্শক ধারণক্ষমতা প্রায় ৪৫ হাজার। বিশ্বকাপের ছয়টি ম্যাচ হবে এখানে। এর মধ্যে রয়েছে কোয়ার্টার ফাইনালের একটি ম্যাচও। ১৭ জুন কোস্টারিকা ও সার্বিয়ার ম্যাচ দিয়ে বিশ্বযাত্রা শুরু হবে এটির।

মরডোভিয়া অ্যারেনা : বিশ্বকাপ সামনে রেখে এটি তৈরি হয়েছে। এর অবস্থান ভলগোগ্রাডস্কিয়াতে। স্টেডিয়ামটির দর্শক ধারণক্ষমতা প্রায় ৪৫ হাজার। বিশ্বকাপের চারটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে এ স্টেডিয়ামে। ১৬ জুন পেরু ও ডেনমার্কের লড়াই দিয়ে বিশ্বকাপ ফুটবল ম্যাচ আয়োজনের সাক্ষী হবে স্টেডিয়ামটি।

ভলগোগ্রাড অ্যারেনা : এর অবস্থান ভলগোগ্রাড অঞ্চলে। বিশ্বকাপ সামনে রেখেই এটি নির্মাণ করা হয়েছে। স্টেডিয়ামটি দর্শক ধারণক্ষমতা ৪৫ হাজার। বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের চারটি ম্যাচ হবে এখানে। যার মধ্যে প্রথম ম্যাচটি হবে ১৮ জুন। সেই ম্যাচে মুখোমুখি হবে তিউনিশিয়া ও ইংল্যান্ড।

স্পার্টাক স্টেডিয়াম : এটি অটক্রিটাই অ্যারেনা নামে পরিচিত। এর অবস্থান মস্কোর থোসিনো অঞ্চলে। স্টেডিয়ামটির দর্শক ধারণক্ষমতা ৪৫ হাজারেরও বেশি। বিশ্বকাপের পাঁচটি ম্যাচ হবে এখানে। অন্যতম ফুটবল পরাশক্তি আর্জেন্টিনা এবং প্রথমবার সুযোগ পাওয়া আইসল্যান্ড যুদ্ধ দিয়ে বিশ্বকাপ ম্যাচ আয়োজনের সাক্ষী হবে স্টেডিয়ামটি। এ ছাড়া শেষ ষোলোর একটি ম্যাচও হবে স্পার্টাকে।

কিলিনিনগ্রাদ স্টেডিয়াম : এর অবস্থান রাশিয়ার অন্যতম প্রসিদ্ধ অঞ্চল কিলিনিনগ্রাদে। এটি মূলত বিশ্বকাপ ফুটবল সামনে রেখে তৈরি করা হয়েছে। স্টেডিয়ামটির দর্শক ধারণক্ষমতা প্রায় ৩৫ হাজার। তবে যেসব স্টেডিয়ামে ২০১৮ বিশ্বকাপের ম্যাচ হবে, এর মধ্যে সবচেয়ে ছোট হল এ স্টেডিয়াম। বিশ্বকাপের চারটি ম্যাচ হবে এখানে। ১৬ জুন ক্রোয়েশিয়া ও নাইজেরিয়ার লড়াই দিয়ে বিশ্বকাপের ম্যাচ আয়োজনের সাক্ষী হবে কিলিনিনগ্রাদ।

আজকের বাজার/আরআইএস