বিশ্বব্যাংক আরেকটি গাড়ি শুল্ক গোয়েন্দাকে ফেরত দিয়েছে

শুল্কমুক্ত সুবিধার অপব্যবহারের অভিযোগে বিশ্বব্যাংক তাদের একজন সাবেক কর্মকর্তার ব্যবহৃত গাড়ি শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের কাছে হস্তান্তর করেছে। রবিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে কাগজপত্র যাচাইশেষে শুল্ক গোয়েন্দা গাড়িটি জব্দ দেখিয়েছে।

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ড. মঈনুল খান জানান, গাড়িটি গত ২২ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৫ টায় বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশ অফিস থেকে একজন কর্মকর্তার মাধ্যমে কাকরাইলে শুল্ক গোয়েন্দার সদর দফতরে প্রেরণ করা হয়। সাথে বিশ্ব ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর Qimia Fan এর একটি চিঠিও দেওয়া হয়। এতে স্বেচ্ছায় গাড়ি সমর্পনের কথা বলা হয়। শুল্ক গোয়েন্দার চলমান তদন্তে সার্বিক সহযোগিতার অঙ্গীকারের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে। প্রাথমিকভাবে অনুসন্ধানে তথ্য অনুযায়ী গাড়িটির ব্যবহারকারী ছিলেন নিহাল ফারনান্দো। নিহাল ফারনান্দো ২০০৮ সালের এপ্রিল থেকে ২০১০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশে সিনিয়র রুরাল ডেভেলপমেন্ট স্পেশালিস্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

তিনি আরও জানান, বাংলাদেশে অবস্থানকালে তিনি ব্যক্তিগত ব্যবহারের উদ্দেশ্যে এ গাড়িটি শুল্কমুক্ত সুবিধায় কিনেন। নিহাল ফারনান্দোর (কাস্টমস পাশবুক নম্বর ৫০/০৮) ব্যবহৃত গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর- AJB-066, চেসিস নম্বর- ZZT240-0119638, ইঞ্জিন নম্বর- 1ZZ-2605975, CC- 1800, মডেল নম্বর- Toyota Allion, তৈরি সাল- 2006। ২০১০ সালের ডিসেম্বরে নিহাল ফারনান্দো অ্যাসাইনমেন্ট শেষ করে স্থায়ীভাবে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন। কিন্তু আইনানুযায়ী তিনি বাংলাদেশ ত্যাগের আগে ব্যবহৃত কাস্টমস পাশবুক ও ব্যবহৃত গাড়িটি কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে যাননি। এতে শুল্ক আইন ভঙ্গ হয়েছে এবং তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। শুল্ক গোয়েন্দার পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত শুরু করলে বিশ্বব্যাংক আগে দুটি গাড়ি হস্তান্তর করে। এ নিয়ে মোট ৩ টি গাড়ি জব্দ হলো।

শুল্ক গোয়েন্দা ডিজি বলেন, বাংলাদেশে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিদেশি সংস্থায় কর্মরত প্রিভিলাইজড পার্সনদের শুল্কমুক্ত সুবিধার অপব্যবহার সংক্রান্ত চলমান তদন্তের প্রয়োজনে শুল্ক গোয়েন্দা সদর দফতর থেকে বিশ্বব্যাংকের কাছে তথ্য চাওয়া হয়। এ পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকায় বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশ দফতর থেকে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল শুল্ক গোয়েন্দা দফতরে উপস্থিত হয়ে তাদের পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন। এতে শুল্ক গোয়েন্দার তদন্তে সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেওয়া হয়। আরো বেশ কিছু গাড়িতে গরমিল রয়েছে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে তথ্য মিলেছে। এগুলোর ক্ষেত্রে বিশ্ব ব্যাংকের সহযোগিতায় পর্যায়ক্রমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সুত্র: দ্য রিপোর্ট