বুধবার ভয়াবহ কোকো ট্রাজেডি দিবস

আগামীকাল ২৭ নভেম্বর ভয়াবহ কোকো ট্রাজেডি দিবস। ভোলার ইতিহাসে শোকাবহ একটি দিন।
১০ বছর আগে ২০০৯ সালের এই দিনে জেলার লালমোহন উপজেলায় কোকো লঞ্চ দুর্ঘটনায় ৮২জন যাত্রী প্রাণ হারায়। মর্মান্তিক ওই দুর্ঘটনায় স্বজনহারা মানুষের কান্না এখনো থামেনি। সেদিনের কথা মনে করে আজও মানুষ আতঁকে উঠেন।
কোকো ট্রাজেডি দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠনের আয়োজনে বিশেষ স্বরণসভা, দোয়া-মানাজাত, কালো পতাকা উত্তোলনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঈদের আগে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইয়ের কারণে এই লঞ্চ দুর্ঘটনা ঘটে।
কোকো-৪ দুর্ঘটনায় নিহত হন লালমোহন উপজেলার চর ছকিনা গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে নূরে আলম সাগর, তার সদ্য বিবাহিত স্ত্রী ইয়াসমিন ও শ্যালিকা হ্যাপি বেগম। নূরে আলম ঈদুল আজহা উপলক্ষে নববধূ ও শ্যালিকাকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন। কিন্তু সেই দুর্ঘটনায় ৩ জনই মারা যায়।

আব্দুর রশিদের পরিবারের মত কোকো-৪ দুর্ঘটনায় স্বজন হারা অন্যান্যরাও স্বজন হারানোর শোকে কাতর ওই সকল পরিবার এখন বাকরুদ্ধ।

একই এলাকার বাকলাই বাড়ির শামসুন নাহার স্বামী, সন্তান, দেবরসহ একই বাড়ির ১৬ জন নিয়ে কোকো লঞ্চে রওনা হয়েছিলেন বাড়িতে ঈদ করার জন্য। বাড়ির কাছের ঘাটে এসেই লঞ্চডুবিতে নিহত হয় তার মেয়ে সুরাইয়া (৭), ভাসুরের মেয়ে কবিতা (৩) ও দেবর সোহাগ (১৩)। শামসুন নাহারের মত এ লঞ্চ দুর্ঘটনায় কোকো-৪ লঞ্চ দুর্ঘটনায় কেউ হারিয়েছেন পিতা-মাতা, কেউ হারিয়েছে সন্তান, কেউবা ভাই-বোন আর পরিবারের উপর্জনক্ষম একমা
ব্যাক্তিকে। স্বজনদের কান্না যেন এখনও থামেনি। সেদিনের সেই মর্মান্তিক ট্রাজেডির কথা মনে করে শোক সাগরে ভাসছে পুরো দ্বীপজেলা, বিশেষ করে লালমোহন উপজেলার বাসিন্দারা।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মাহমুদুর রহমান বলেন, দূর্ঘটনায় নিহত পরিবারের সদস্যদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে আর কোন দূর্ঘটনা না ঘটে বিশেষ করে ঈদের সময় অতিরিক্ত যাত্রী ও ফিটনেসবিহীন লঞ্চ চলাচল না করতে পারে সে ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রয়েছে বলে তিনি জানান।

২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর ঢাকা থেকে ঈদে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ভোলার লালমোহনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে লঞ্চটি। লালমোহনের নাজিরপুর ঘাটের কাছে এসে যাত্রী চাপে ডুবে যায় ওই লঞ্চ। খবর-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান