মুফতি হান্নানের ফাঁসি কার্যকরে কারাগার প্রস্তুতি নিচ্ছে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

রাষ্ট্রপতি হরকাতুল জিহাদের নেতা মুফতি হান্নানের প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ করে দেওয়ায় ফাঁসি কার্যকরে কারাগার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। রবিবার (৯ এপ্রিল) সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন মামলায় বিশেষ করে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা, প্রধানমন্ত্রীর প্রাণনাশের মামলাসহ অনেক মামলা তার (মুফতি হান্নান) নামে ছিল। এরমধ্যে কয়েকটি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। একটি মামলায় তাকে মৃত্যুদণ্ডদেশ দেওয়া হয়েছিল। সেটা সুপ্রিম কোর্ট ও আপিল বিভাগে বহাল থাকাতে তিনি মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়েছিলেন, রাষ্ট্রপতি সেটা না মঞ্জুর করেছেন।’

‘না মঞ্জুর করাতে এখন আমরা আদালতের রায় কার্যকর করতে যে সমস্ত ফরমালিটি (আনুষ্ঠানিকতা), জেল কোড অনুযায়ী যা যা করণীয় সেই প্রক্রিয়াগুলো আমার করে যাচ্ছি।’

আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, ‘রায় কার্যকর করার জন্য আমাদের কারাগার প্রস্তুতি নিচ্ছে।’

চূড়ান্ত রায়ের পর ফাঁসি কার্যকরে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা আছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জেল কোড অনুযায়ী (রিভিউ খারিজ আদেশের কপি হাতে পাওয়ার) ২১ দিনের কমে নয় ও ২৮ দিনের ঊর্ধ্বে নয়, এই সময়ের মধ্যেই কার্যাদেশ পালন (ফাঁসি কার্যকর) করতে হবে। আমরা সেই জন্যই অপেক্ষা করছি। আমাদের সব প্রস্তুতি রয়েছে। সব ফর্মালিটি শেষ হলেই আমরা রায় কার্যকর করব।’

মন্ত্রী বলেন, ‘সব কিছু সময় মতো হবে। আমরা কোন নিয়মের ব্যত্যয় ঘটাব না। আপনারা জানেন ২১ দিন হতে হলে কতদিন লাগবে। আমরা প্রহর গুণছি। শেষ হলেই আপনারা দেখবেন।’

মুফতি হান্নানের ফাঁসি উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি কোন নির্দেশনা আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী সব সময়ই প্রস্তুত রয়েছে। মাঝে মাঝে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে আমাদের অ্যাটাক করার আগেই আস্তানা দেখে ফেলেছে। তাদের চিহ্নিত করে, আমরা নিষ্ক্রিয় করেছি। এ বিষয়ে এখনও আমাদের কাছে কোন থ্রেট আসেনি। নতুন কোন তথ্য আসেনি যে এ ধরণের নাশকতা হতে পারে।’

পহেলা বৈশাখে আশঙ্কা নেই

এবার পহেলা বৈশাখ উদযাপনের নিরাপত্তা নিয়ে বিশেষ কোন প্রস্তুতি আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের গোয়েন্দারা কাজ করছেন। গোয়েন্দাদের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত কোন থ্রেট কিংবা আশঙ্কা বা আতঙ্কের কথা আসেনি। থ্রেট আসুক আর না আসুক আমরা আমাদের প্রস্তুতি নিয়েছি।’

মঙ্গল শোভাযাত্রার শুরুর পর কেউ ঢুকতে পারবে না। তবে কি নিরাপত্তাবাহিনী পাহারা দিয়ে শোভাযাত্রা এগিয়ে নেবে- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মঙ্গল শোভাযাত্রায় ভিন্ন স্থান থেকে যাতে সংযুক্ত হতে না পারে, যাতে বিশৃঙ্খলা না হয় সেজন্য যারা শুরু করবেন তারা যাতে সুন্দরভাবে উদ্দীপনা নিয়ে পালন করতে পারেন সেই দিকে আমরা খেয়াল রাখছি।’

‘ভেতরে যাতে কোন দুষ্কৃতিকারী না ঢুকতে পারে, নাশকতা করার জন্য যাতে কেউ না ঢুকতে না পারে- এজন্যই আমরা বলেছি শুরু থেকেই আসবে মাঝখানে যাতে কেউ না ঢুকতে পারে।’

এতে উৎসবে ভাঁটা পড়বে কিনা- এ বিষয়ে আসাদুজ্জামান কামাল বলেন, ‘এতে উৎসবে কোন ভাঁটা পড়বে না, আমরা মনে করি এটা বাঙালির প্রাণের উৎসব, এই উৎসব সর্বাত্মকভাবে পালন হবে। এখানে কোন ধর্মের বালাই নেই, এখানে কোন বয়সের বালাই নেই। উৎসব ভালভাবে পালনে গত বছর থেকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি বোনাসও দেওয়া হচ্ছে।’