মৃত্যুশূন্য ১৭ তম দিনে চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত ৬৬ জন

চট্টগ্রামে করোনায় গতকাল পর্যন্ত একটানা ১৭ দিনে করোনায় কারো মৃত্যু হয়নি, বুধবার ১৭ তম দিনে নতুন ৬৬ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমণের হার ৪ দশমিক ১৭ শতাংশ।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সর্বশেষ রিপোর্টে বলা হয়, বুধবার নগরীর আটটি ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলার আওতাধীন বিভিন্ন উপজেলার ১ হাজার ৫৮২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন সংক্রমিত ৬৬ জনের মধ্যে ৫৭ জন শহরের এবং ছয় উপজেলার ৯ জন। এদের ৪ জন হাটহাজারীর এবং ফটিকছড়ি, সীতাকু-, আনোয়ারা, পটিয়া ও বোয়ালখালীর ১ জন করে রয়েছেন। জেলায় এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ৩৩ হাজার ৭২৭ জন। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ২৬ হাজার ৩৬১ জন ও গ্রামের ৭ হাজার ৩৬৬ জন।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। ফলে মৃতের সংখ্যা ৩৬৯ জনই রয়েছে। এতে শহরের বাসিন্দা ২৬৮ জন ও গ্রামের ১০১ জন। সুস্থতার ছাড়পত্র দেয়া হয় ৪৬ জনকে। ফলে মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা ৩১ হাজার ২৪৬ জনে উন্নীত হলো। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪ হাজার ৩০৬ জন ও ঘরে আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হন ২৬ হাজার ৯৪০ জন। হোম আইসোলেশন বা কোয়ারেন্টাইনে যুক্ত হন ১০ জন ও ছাড়পত্র নেন ১৫ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৯৭৩ জন।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে গতকালসহ একটানা ১৭ দিন করোনায় কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। সর্বশেষ একজনের মৃত্যু হয় ২৪ জানুয়ারি। অন্যদিকে, গত নয়দিন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা একশ’র নিচে ছিল। পহেলা ফেব্রুয়ারি ১০৮ জন করোনা আক্রান্ত চিহ্নিত হয়। এর আগে ১২ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত একটানা ১৯ দিন করোনা ভাইরাসের বাহক সংখ্যা একশ’র নিচে ছিল। ১২ জানুয়ারি ১২৭ জন ভাইরাস বাহক শনাক্ত হয়। সেদিন ২ রোগীর মৃত্যু হয়। সংক্রমণের হার ছিল ১০ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। করোনাকালের সর্বনি¤েœর রেকর্ডটিও এ মাসের ৬ ফেব্রুয়ারি। এদিন ১ হাজার ২২৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২১ জনের দেহে ভাইরাসের উপস্থিতি মেলে। সংক্রমণ হার ১ দশমিক ৭১ শতাংশ।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি নমুনা পরীক্ষা হয় ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে। এখানে ৭১১ জনের নমুনায় ১৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ৫৭৪ জনের নমুনায় ১৭ জন পজিটিভ শনাক্ত হন। চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে ২০ টি নমুনা পরীক্ষা হলে ২ টিতে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি মিলে। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে ৭১ নমুনার মধ্যে ১২ টিতে করোনার অস্তিত্ব পাওয়া যায়। নগরীর বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিতে (আরটিআরএল) ৫ জনের নমুনা পরীক্ষা হলে ১ জনের নমুনায় ভাইরাস থাকার প্রমাণ মেলে।
বেসরকারি তিন ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ১৩৮, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৪৭ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে যথাক্রমে ৬, ১৩ ও ১ জন করোনার ভাইরাসবাহক চিহ্নিত হন।
চট্টগ্রামের ৮ টি নমুনা এদিন কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় সবক’টিরই রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে বিআইটিআইডি’তে ১ দশমিক ৯৭ শতাংশ, চমেকে ২ দশমিক ৯৬, চবিতে ১০, সিভাসুতে ১৬ দশমিক ৯০, আরটিআরএলে ২০, শেভরনে ৪ দশমকি ৩৫, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ২৭ দশমিক ৬৬ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।