যানজট নিরসনে ঢাকার চতুর্দিকে বৃত্তাকার রেলপথ

যানজট নিরসনকল্পে রাজধানীর ঢাকার চতুর্দিকে বৃত্তাকার রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলপথমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক। তিনি বলেন, বৃত্তাকার এ রেলপথ নির্মাণের নিমিত্তে ২০১৫ সালের ২৯ জুন একটি সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে প্রেরণ করা হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সভা অনুষ্ঠানের পর কমিটির সুপারিশের আলোকে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সোমবার জাতীয় সংসদে টেবিলে উত্থাপিত মাহফুজুর রহমানের (চট্টগ্রাম-৩) এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব তথ্য জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিকেল ৫টা ২ মিনিটে সংসদের অধিবেশন শুরু হয়।

মূল অবকাঠামোতে বাঁশ ব্যবহার হয় না

একেএম মাঈদুল ইসলামের (কুড়িগ্রাম-৩) আরেক প্রশ্নের জবাবে রেলপথ মন্ত্রী জানান, সেতুর মূল অবকাঠামোতে কখনোই বাঁশ ব্যবহার হয় না। ট্রেন চলাচলের ফলে কোনো কোনো স্লিপার আঁকাবাকা হয়ে যাওয়া রোধকল্পে স্থানীয়ভাবে রেল কর্মচারীরা বাঁশ ব্যবহার করতে পারেন, যা বিপদজনক নয়। ব্যবহৃত এ বাঁশ কোনোরূপ ভার বহন করে না।

রেলওয়েতে কন্টেইনার পরিবহনের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে

মিসেস আমিনা আহমেদের (মহিলা আসন-৩৪) আরেক প্রশ্নের জবাবে মো. মুজিবুল হক জানান, বাংলাদেশ রেলওয়েতে কন্টেইনার পরিবহনের হার প্রতিবছরই তুলনামূলকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত অর্থবছরের জুলাই ২০১৫ থেকে ডিসেম্বর ২০১৫ পর্যন্ত রেলযোগে ৩২ হাজার ১২৩ টিইউস কন্টেইনার পরিবাহিত হয়। সেই তুলনায় চলতি অর্থবছরের জুলাই ২০১৬ থেকে ডিসেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত রেলযোগে ৩৩ হাজার ৪৩০ টিইউস কন্টেইনার পরিবাহিত হয়েছে। অর্থাৎ চলতি অর্থবছরে এক হাজার ৩০৭ ইউনিট কন্টেইনার বেশি পরিবাহিত হয়েছে। ঢাকা আইসডিতে পরিবহনের জন্য অধিক সংখ্যক কন্টেইনার চট্টগ্রাম বন্দরে আসলে রেলওয়েতে কন্টেইনার পরিবহন আরও বৃদ্ধি পাবে।

টিকেট কালোবাজারী রোধে প্রতিরোধ কার্যক্রম

মো. সোহরাব উদ্দিনের (কিশোরগঞ্জ-২) এক প্রশ্নের জবাবে রেলপথমন্ত্রী জানান, রেলওয়ের টিকেট কালোবাজারী রোধসহ টিকেটের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার স্বার্থে নানাবিধ প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে রেলওয়ের আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেটের উপর যাত্রীর বয়স ও জেন্ডার উল্লেখ করা হচ্ছে। টিকেটের উপর যাত্রীদের নাম লেখার বিষয়টি পরীক্ষাধীন পর্যায়ে রয়েছে।

২৩৫ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণ

সামশুল হক চৌধুরীর (চট্টগ্রাম-১২) এক প্রশ্নের জবাবে রেলপথ মন্ত্রী দেশে নতুন রেললাইন সম্প্রসারণে সরকারের গৃহীত নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে জানান, বর্তমানে রেলওয়েতে ৮৬ হাজার ৩০ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়ে মোট ৪৩টি প্রকল্প চলমান রয়েছে। এ প্রকল্পগুলোতে থোক বরাদ্দসহ ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ৯ হাজার ১১৪ কোটি ৯৬ লাখ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। রেলওয়ের লাইন ক্যাপাসিটি বৃদ্ধির লক্ষ্যে ডাবল লাইনে উন্নত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, বর্তমান সরকার ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ২৩৫ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণ করেছে। প্রায় ২১৪ কিলোমিটার মিটারগেজ রেললাইনকে ডুয়েলগেজ লাইনে রূপান্তর করা হয়েছে।

রেলকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে নানা উদ্যোগ

রহিম উল্লাহর (ফেনী-৩) এক প্রশ্নর জবাবে মুজিবুল হক বলেন, রেলকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে রেলওয়ের লাইন ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি, রেলপথ পুনর্বাসন ও নতুন রেলপথ নির্মাণ, রেলওয়ের আয় বৃদ্ধি এবং সেবামূলক কর্মসূচি গ্রহণের নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

সেক্ষেত্রে রেলে ভাড়া বৃদ্ধি সমন্বয়ের কথা জানান তিনি।

সুত্র: দ্য রিপোর্ট