রায় শুনে অঝোরে কাঁদলেন দীপনের স্ত্রী

দীপন হত্যা মামলার রায় শোনার সঙ্গে সঙ্গে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার স্ত্রী ডা. রাজিয়া রহমান।
আজ সকালে আদালতে আসেন ডা. রাজিয়া রহমান, তার সাথে আসেন আতিকা রুমা ও সৈয়দ হাসান ইমামের মেয়ে সৈয়দা তানজুমা ইমাম। কেঁদেছেন তারাও ।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাজিয়া রহমান পলাতক আসামি মেজর জিয়া ও আকরামকে দ্রুত গ্রেফতার করে রায় কার্যকরের দাবি জানান।
ঢাকার একটি আদালত আজ জাগৃতি প্রকাশনীর মালিক ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যা মামলায় মেজর সৈয়দ জিয়াউল হকসহ আট আসামিকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন।
সেনাবাহিনীর চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হকসহ মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত ৮জনই নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সদস্য বলে আদালত সূত্রে জানা যায়।
বুধবার ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন- মইনুল হাসান শামীম ওরফে সিফাত সামির, আবদুস সবুর ওরফে আবদুস সামাদ, খাইরুল ইসলাম ওরফে জামিল রিফাত, আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব সাজিদ, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন, শেখ আবদুল্লাহ ওরফে জুবায়ের ও আকরাম হোসেন ওরফে হাসিব।
এদের মধ্যে জিয়া ও আকরাম পলাতক।
রায় উপলক্ষে আজ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কাশিমপুর কারাগার থেকে ছয় আসামিকে আদালতে আনা হয়। এ সময় তাদের কোর্ট হাজতে রাখা হয়। বেলা ১১টার পরে তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। আসামিদের প্রত্যকের গায়ে ছিল বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, মাথায় হেলমেট।
রায় ঘোষণা উপলক্ষে আদালত প্রাঙ্গণে আজ নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এছাড়াও আদালত এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নজরদারি ছিল।
আদালত সূত্র জানায়, ২৪ জানুয়ারি সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মুজিবুর রহমান রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য এদিন ধার্য করেন।
২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর রাজধানীর শাহবাগে আজিজ সুপার মার্কেটের নিজ অফিসে খুন হন ফয়সাল আরেফিন দীপন। সেদিন বিকেলে তার স্ত্রী শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর সন্ত্রাসবিরোধী আইনে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি দক্ষিণের সহকারি পুলিশ কমিশনার ফজলুর রহমান। চার্জশিটে আটজনকে অভিযুক্ত ও ১১ জনকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়।
২০১৯ সালের ১৩ অক্টোবর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুজিবুর রহমান নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সদস্য সেনাবাহিনীর চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হকসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, আসামি মইনুল হাসান শামীম জিজ্ঞাসাবাদের সময় স্বীকার করেন, তিনিসহ অন্য সহযোগীরা মিলে এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছেন। এ ঘটনা ছাড়াও তারা বাংলাদেশের আরও কয়েক জায়গায় ব্লগার, প্রকাশক ও লেখকদের হত্যাকান্ডে জড়িত। এসব হত্যাকান্ডের মূল হোতা চাকরিচ্যুত মেজর জিয়া।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন গোলাম ছারোয়ার খান এবং আসামিপক্ষে এ বি এম খায়রুল ইসলাম।