রোহিঙ্গা গণহত্যা: তদন্তের নির্দেশ দিল আইসিসি

রোহিঙ্গাদের ওপর সংঘটিত অপরাধ এবং তাদের জোরপূর্বক দেশত্যাগের ঘটনার তদন্তে সবুজ সংকেত দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। আইসিসির প্রাক বিচারিক আদালত-৩ এ অনুমোদন দিয়েছে। আইসিসির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চলতি বছর জুলাই মাসে তদন্ত শুরুর জন্য প্রসিকিউটর যে আবেদন করেছিলেন প্রাক বিচারিক আদালত তাতে সম্মতি জানিয়েছে। আইসিসির নথি অনুযায়ী নির্যাতনের শিকার হওয়া ব্যক্তিরা সর্বসম্মতভাবে তদন্ত শুরু করার দাবি জানিয়েছেন। তাদের মতে, বিচার ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা গেলেই কেবল এই ধরনের সহিংসতা ও নির্যাতনের অবসান ঘটতে পারে।

বাংলাদেশ ২০১০ সালে আইসিসি’র রোম সনদে অনুস্বাক্ষর করলেও মিয়ানমার এখন পর্যন্ত এতে স্বাক্ষর করেনি। আইসিসি’র প্রাক বিচারিক আদালতের ৫৮ পৃষ্ঠার রায়ে বলা হয়েছে, এটা বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে ব্যাপক ভিত্তিক এবং পদ্ধতিগত সহিংসতার কারণে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জোরপূর্বক দেশত্যাগের মতো ঘটনা ঘটেছে, যা মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

প্রাক বিচারিক আদালত মনে করে পরিস্থিতি ভয়াবহ পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। ছয় লাখ থেকে দশ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম জবরদস্তিমূলক কার্যক্রমের কারণে মিয়ানমার থেকে বাস্তুহারা হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। প্রসিকিউটরের অফিস এখন স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহের কাজ শুরু করবে। আলামত সংগ্রহের ক্ষেত্রে তাকে কোনো সময় বেঁধে দেয়া হয়নি। তথ্যপ্রমাণ পাওয়া সাপেক্ষে প্রসিকিউটর প্রাক বিচারিক আদালতে অভিযুক্ত ব্যক্তির নামে সমন বা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করতে পারবেন। রোম সনদ অনুযায়ী প্রতিষ্ঠিত এ আদালত অবশ্য অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার বা দণ্ড কার্যকর করতে পারে না।

সংস্থাটি এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানাতে পারে। এই প্রথমবারের মতো রোহিঙ্গা নির্যাতনের ঘটনায় কোনো আন্তর্জাতিক আদালতে তদন্ত হচ্ছে। তদন্ত শুরুর অনুমোদনকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রসিকিউটর ফাতু বেনসুদা। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, এটি মিয়ানমারসহ বিশ্বের অন্যত্র নৃশংস অপরাধের শিকার ও নিপীড়তদের জন্য ইতিবাচক বার্তা।ভিওএ

আজকের বাজার/লুৎফর রহমান