লকডাউন আর কোয়ারেন্টিন বিশ্বজুড়ে বেড়েছে পারিবাহিক কলহ

পারিবারিক সহিংসতা বাড়ছে বিশ্বজুড়ে। যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রানসিসকোতে এমন ঘটনায় মামলা বেড়েছে, ৬০ শতাংশ। চিলিতে ৭০, ফ্রান্সে ৩২ ও আর্জেন্টিনায় এই হার ৩০ শতাংশ। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, করোনার কারণে দেশে দেশে লকডাউন আর কোয়ারেন্টিনে ঘরবন্দি কোটি কোটি মানুষ। কর্মহীন এ সময়টায় ঘরে থাকায় মনস্তাত্বিক দূরত্ব বাড়ছে স্বামী-স্ত্রীর। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে দাম্পত্য জীবনে।
করোনা বদলে দিয়েছে সকল সমীকরণ। শুধু মৃত্যুর মিছিলই ভারি হচ্ছে না। ভেঙে যাচ্ছে চিরায়ত পারিবারিক বন্ধনও। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, লকডাউন আর কোয়ারেন্টিন লাইফে পারিবারিক সহিংসতা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি এখন বিশ্বজুড়ে।

বলা হচ্ছে, শুধু যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রানসিসকো রাজ্যে পারিবারিক কলোহের মামলা বেড়েছে প্রায় ৬০ শতাংশ।

লা কাসা দে লাস মাদ্রেসের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথি ব্ল্যাক বলেন, মূলত এক ঘরে অনেকদিন বন্দিদশায় থাকার কারণে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছে অনেক দম্পতি। কেউই এক স্থানে থাকতে চান না। এ অবস্থায় শারীরিক, মানসিক নিপীড়নও বেড়ে চলছে।

যুক্তরাজ্যেও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে পারবারিক সংঘাত।

দাতব্য সংস্থা-রিফিউজির কমিউনিকেশন পরিচালক লিসা কিং বলেন, কেবল আমাদের প্রতিষ্ঠানের হেল্পলাইনের কল বেড়েছে ২৫ শতাংশ। এই সংখ্যাটা ভয়াবহ। কারণ পারিবারিক কলোহের কারণে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে প্রতি সপ্তাহে দুই জন নারী প্রাণ হারান।

অবশ্য, সবচেয়ে বাজে অবস্থা লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে। নারী নিপীড়ন পর্যবেক্ষনকারী দেশটির সংস্থা কাসা দেল এনকুয়েন্ত্রো জানায়, কেবল গেলো এক সপ্তাহেই আর্জেনিয়ায় নিপীড়নে মারা গেছে ১২ নারী। মূলত কোয়ারেন্টিন অবস্থাতেই পারিবারিক সহিংসতা বেড়েছে ৩০ শতাংশ। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল আর্জেন্টিনা জানায়, সবচেয়ে বেশি ৬০ শতাংশ বুয়েন্স আয়ার্সে। চিলিতে সংঘাত বেড়েছে ৭০ শতাংশ।

জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, নারীরা যখন নিজের বাড়িতেই নিরাপদ নয় তখন হুমকির মাত্র অনেক বেড়ে যায়। তাই আমি বিশ্বের সকল মানুষের কাছে আহবান জানাই পারিবারিক কলহ থেকে বিরহ থাকুন।

ফ্রান্স জুড়ে পারিবারিক সহিংসতা বেড়েছে ৩২ শতাংশ। এর মধ্যে কেবল প্যারিসে এক সপ্তাহেই সহিংসতার হার ৩৬ শতাংশ। রাশিয়ার চিত্রটাও একই ধরনের।

আজকের বাজার/ লুৎফর রহমান