শুল্ক ফাঁকিতে সহায়তা: কাস্টমস কর্মকর্তা বরখাস্ত

শুল্ক ফাঁকিতে সহায়তার অভিযোগে ভুইঞা মফিজুর রহমান নামের এ রাজস্ব কর্মকর্তাকে (আরও) সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই ঘটনায় জড়িত সিএন্ডএফ এজেন্ট মেসার্স তৌফিক এন্ড সন্সের লাইসেন্সও স্থগিত করা হয়।

বৃহস্পতিবার ২৭ এপ্রিল কাস্টমসের শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

জানা গেছে, ইস্কাটন (ঢাকা) রোডের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান সালমান এন্টারপ্রাইজ মূলধনী যন্ত্রপাতি (ক্যাপিটাল মেশিনারিজ) ঘোষণা দিয়ে উচ্চ শুল্ক হারের বিভিন্ন ধরনের ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য আমদানি করে। এক্ষেত্রে মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি করার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েই আমদানি পণ্যের চালান অনুসন্ধান করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখিত সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠান গত ৮ ফ্রেব্রুয়ারি বিল অব এন্ট্রি (নং- ১৮৯৬৯২) দাখিল করে। পরে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে চালানটি খালাসের চেষ্টা চালায় আমদানিকারকের সিএন্ডএফ এজেন্ট মেসার্স তৌফিক এন্ড সন্স।

এবিষয়ে সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠান মেসার্স তৌফিক এন্ড সন্সের স্বত্বাধিকারী তৌফিকুর রহমান বলেন, আমদানিকারকের তথ্য অনুযায়ী চালানটি খালাসের জন্য নিয়ম অনুযায়ী ডকুমেন্ট জমা দেই।

চালানটি খালাসের জন্য আনস্টাফিং শাখা থেকে ছাড়পত্রও দেয়া হয়। তবে চালানটিতে মিথ্যা ঘোষণার বিষয়ে আমাদের জানার সুযোগ নেই। কারণ আমরা শুধু খালাসের দায়িত্ব পালন করি।

জানা গেছে, আমদানিকারক চালানটি গ্রাইন্ডিং মেশিন (ক্যাপিটাল মেশিনারিজ) হিসেবে ঘোষণা দেয়, যার শুল্কহার মাত্র ১ শতাংশ। আমদানিকারকের ঘোষণা অনুযায়ী শুল্ক নির্ধারণ করা হয় মাত্র এক লাখ ৪০ হাজার ৬৯৮ টাকা। কাস্টমস কর্তৃপ চালানটি গ্রাইন্ডিং মেশিন হিসেবেই শুল্কায়ন করে। তবে খালাস পর্যায়ে আনস্টাফিং শাখা কর্তৃক পরীা করে ছাড় দেয়ার শর্ত আরোপ করে? কাস্টমসের আর.ও ভুইঞা মফিজুর রহমান চালানটির আনস্টাফিং পরীণ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন। এ কারণে অনিয়মের দায় তার উপর পড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

পরে অনুসন্ধানে শুল্ক গোয়েন্দারা জানতে পারেন রেভিনিউ অফিসার (আর.ও) ভুইঞা মফিজুর রহমানের সহযোগিতায় ফটোকপিয়ার, ওয়াকিটকিসহ ১৬টি বিভিন্ন প্রকারের উচ্চ শুল্ক হারের ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য বন্দর থেকে বের করে ট্রাকে বোঝাই করা হয়। এরপর ১৬ ফেব্রুয়ারি বন্দর থেকে বের হওয়ার সময় শুল্ক গোয়েন্দারা পণ্যবাহী ট্রাকটি আটক করে। এ সময় পরীা করে ফটোকপিয়ার ও ওয়াটকিসহ ১৬ প্রকারের উচ্চ শুল্ক হারের ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য পাওয়া যায়। এসব পণ্যের শুল্ক হার ছিল ২৫ শতাংশ। এতে প্রায় কোটি টাকার মতো শুল্ক আদায় হওয়ার কথা।

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বলেন, কোটি টাকার শুল্কের জায়গায় মাত্র এক লাখ ৪০ হাজার ৬৯৮ টাকা শুল্ক দিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছিল আমদানিকারক। খবর পেয়ে আমরা তৎপর হই। এরপর প্রাথমিক প্রাথমিক তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতেই উল্লেখিত কর্মকর্তা ও সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

আজকের বাজার: আরআর/ ২৭ এপ্রিল ২০১৭