শ্রীলঙ্কার মতো সংকটে পড়বে না বাংলাদেশ : প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার পথে যেতে পারে এমন উদ্বেগ প্রত্যাখ্যান করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোভিড-১৯ মহামারী এবং ইউক্রেনের সংঘাত সত্ত্বেও দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী অবস্থায় রয়েছে এবং বাংলাদেশ কোন ঋণ গ্রহণ করার সময় তার সরকার অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছে।
দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষস্থানীয় নিউজ এজেন্সি এএনআই-এর সাথে আলাপচারিতায় তিনি বলেন, বর্তমানে সমগ্র বিশ্ব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে যা শুধুমাত্র বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ নয়।
তিনি বলেন, “আমাদের অর্থনীতি, এখনও যথেষ্ঠ শক্তিশালী। যদিও, আমরা কোভিড-১৯ মহামারীর মুখোমুখি হয়েছি। এখন ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাব এখানে রয়েছে। কিন্তু ঋণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সবসময় সময়মতো সকল ঋণ পরিশোধ করে। তাই আমাদের ঋণের হার খুবই কম। শ্রীলঙ্কার প্রেক্ষাপটে, আমাদের অর্থনৈতিক গতিধারা এবং উন্নয়ন প্রয়াস খুবই পরিকল্পিত।
শেখ হাসিনা দঢ়তার সঙ্গে বলেন, এই পরিমাপক পদ্ধতির কারণেই তার দেশ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নিরাপদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশ প্রকল্পের সুফল পাবে বলে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কোনো ঋণ নেয়নি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি মনে করি পুরো বিশ্ব অর্থনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন। আমরাও আছি। কিন্তু হ্যাঁ, কিছু লোক আছে যারা এই বিষয়টি তুলে ধরেছে। বাংলাদেশ হবে শ্রীলঙ্কা ইত্যাদি। কিন্তু আমি নিশ্চিত করতে পারি, তা হবে না। কারণ আমরা পরিকল্পনা অনুযায়ী আমাদের সকল উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করি, সর্বদাই আমরা দেখি যে রিটার্ন কী হবে? মানুষ কীভাবে সুবিধাভোগী হবে? নইলে আমি শুধু টাকা খরচ করে কোনো প্রকল্প গ্রহণ করি না।”
তিনি বলেন, বাংলাদেশে যখনই সরকার কোনো ঋণ গ্রহনের বিষয়টি বিবেচনা করে, তখন প্রকল্পটি শেষ হলে দেশের জন্য কী লাভ হবে তা অনুমান করার একটি সুস্পষ্ট নীতি অনুসরণ করে।
শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের অর্থনীতি কীভাবে বিকশিত হবে এবং জনগণ কতটা সুবিধাভোগী হবে সেটাই অগ্রাধিকার পায়। সেভাবেই আমরা সব পরিকল্পনা ও কর্মসূচি নিচ্ছি। অপ্রয়োজনীয় কোনো টাকা আমরা খরচ করি না।”
শেখ হাসিনা বাংলাদেশ যেভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সম্পন্ন করে সে বিষয়ে তার মতামত ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, তার সরকার পদ্ধতিগতভাবে বিবেচনার ভিত্তিতে পরিকল্পনা গ্রহণ করে।
তিনি বলেন, “আমরা একটি খুবই সুবিবেচনামূলক উপায়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করি যা আমরা বিকশিত করেছি। আমি মনে করি যে, আমরা শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতির মুখোমুখি হব না। শুধু তাই নয়, নীতিগত ক্ষেত্রে, কোভিড-১৯ মহামারী শুরু হওয়ার মুহূর্তে, আমরা গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত সব ধরনের সহায়তা এবং সামগ্রী প্রদান করেছি এবং আমাদের লোকেদেরকে আরও বেশি করে খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন বাড়াতে উৎসাহিত করেছি। আমি আমাদের জনগণকে আহ্বান জানিয়েছি, আপনি আপনার খাদ্য উৎপাদন বাড়ান যাতে আমরা অন্যের উপর নিভর্র না করি।”
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন যে, ইউক্রেনের সংঘাত তার দেশের জন্য কিছু সমস্যা তৈরি করেছে। “এতে সম্পর্কে সন্দেহ নেই যে, বিশেষ করে আমরা অন্যান্য দেশ থেকে যেসব আমদানি করি এ সংঘাত সেক্ষেত্রে খারাপ প্রভাব ফেলছে ।”