সফলভাবে ভয়েস ওভার এলটিই (VoLTE) পরীক্ষা করল রবি

দেশে প্রথমবারের মতো ভয়েস ওভার লং টার্ম ইভোল্যুশন (ভিওএলটিই) প্রযুক্তির সফল পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে শীর্ষ ডিজিটাল সেবা প্রদানকারী কোম্পানি রবি। এর ফলে দেশের প্রথম অপারেটর হিসেবে ৪.৫জি নেটওয়ার্কে ভয়েস সেবা প্রদান করার জন্য প্রস্তুত হলো কোম্পানিটি।

রাজধানীর রবি কর্পোরেট অফিসে আজ বুধবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০১৯ ভিওএলটিই পরীক্ষামূলক ব্যবহার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। বিশেষ অতিথি ছিলেন- বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের- বিটিআরসি চেয়ারম্যান মো: জহুরুল হক।

বিটিআরসি’র কমিশনার, ইঞ্জিনিয়ারিং ও অপারেশন্স, মোঃ রেজাউল কাদের, কমিশনার, স্পেকট্রাম ম্যানেজম্যান্ট, মো. আমিনুল হাসান এবং রবি’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, হেড অব কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স, শাহেদ আলমসহ রবি’র ম্যানেজম্যান্ট টিমের সিনিয়র কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

টেলিযোযোগ মন্ত্রী রবি’র ৪.৫জি নেটওয়ার্কে বিটিআরসি’র চেয়ারম্যানকে ভয়েস কল দিয়ে ভিওএলটিই প্রযুক্তি পরীক্ষা করেন।

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, “দেশে ভিওএলটিই প্রযুক্তির প্রথম পরীক্ষায় উপস্থিত থাকতে পেরে আমি আনন্দিত। প্রযুক্তি গ্রহণের দিক দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বে অনেক ক্ষেত্রেই অগ্রসর অবস্থানে আছে। ডিজিটাল প্রযুক্তি গ্রহণের ক্ষেত্রে সবসময়ই এগিয়ে আছে রবি। দেশজুড়ে ৪.৫জি নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করায় রবিকে আমি অভিবাদন জানাই। এখন আমি তাদের ৪.৫জি নেটওয়ার্ককে গ্রামে গ্রামে পৌঁছে দেয়ার আহ্বান জানাই। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত হতে রবি’কে আমাদের পাশে প্রয়োজন।”

দেশব্যাপী ৪.৫জি নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখায় রবিকে ধন্যবাদ জানান বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান জহুরুল হক।

দেশব্যাপী বিস্তৃত রবি’র ৪.৫জি নেটওয়ার্কে ভিওএলটিই সেবা কার্যকর হলে গ্রাহকরা এইচডি (হাই ডেফিনিশন) ভয়েস কল উপভোগের পাশাপাশি দ্রুততর কল সংযোগের সুবিধা পাবেন। ভিওএলটিই প্রযুক্তির মাধ্যমে গ্রাহকরা ভয়েস ও ডেটা উভয় সেবাই উপভোগ করতে পারবেন। এলটিই ডেটা নেটওয়ার্কে আলাদাভাবে ভয়েস সেবাকেও কার্যকর রাখে ভিওএলটিই প্রযুক্তি।

ভিওএলটিই প্রযুক্তির সুবিধা এখানেই শেষ নয়। মোবাইল ফোন অপারেটরদের বৈশ্বিক সংগঠন জিএসএমএ’র একটি গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার, ইমো ইত্যাদি ওভার দ্যা টপ (ওটিটি) সেবার চেয়ে ভিওএলটিই সেবায় ব্যাটারি লাইফ ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেশি পেয়ে থাকেন গ্রাহকরা।

বাণিজ্যিকভাবে ভিওএলটিই চালু করার জন্য রবি’র ইকো-সিস্টেম পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সেবাটি চালু হলে কোন রকমের বাড়তি মূল্য পরিশোধ ছাড়াই রবি’র ৪.৫ জি গ্রাহকরা দ্রুততম সময়ে সবচেয়ে ভালো মানের ভয়েস সেবা উপভোগ করতে পারবেন। এ সেবার জন্য আলাদা কোন ডেটা চার্জ প্রয়োজন হবে না এবং ভয়েস কলের ক্ষেত্রে বর্তমান ট্যারিফ প্ল্যান বা প্যাকই বহাল থাকবে।

অনুষ্ঠানে রবি’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা অত্যন্ত আনন্দিত এবং গর্বের সাথে বলতে পারছি যে, দেশের সবচেয়ে বড় ৪.৫জি নেটওয়ার্কে আমরা ভয়েস ওভার এলটিই ভিত্তিক ভয়েস সেবার সফল কারিগরি প্রস্তুতি শেষ করেছি। আমরা বিশ্বাস করি, এটি ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।’’

তিনি বলেন, “আমাদের ৪.৫ জি নেটওয়ার্কে ভয়েস ওভার এলটিই’র পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন করার পর আমরা আত্মবিশ্বাসী যে, আমরা খুবই অল্প সময়ের মধ্যে সারা দেশে আমাদের গ্রাহকদের ভয়েস ওভার এলটিই সেবা দিতে সক্ষম হবো। বাণিজ্যিকভাবে সেবাটি দেওয়ার জন্য আমাদের পুরো ইকো-সিস্টেম প্রস্তুত।”

রবি’র এমডি ও সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ ভয়েস ওভার এলটিই’র পরীক্ষা চালাতে রবি’কে সহায়তা করার জন্য ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন-বিটিআরসি, জাতীয় টেলিযোগাযোগ মনিটরিং সেন্টার-এনটিএমসি’র সকলকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান।

রবি’র এমডি ও সিইও বলেন, “আমি একই সাথে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং বিটিআরসি’কে অনুরোধ করবো যাতে ভয়েস ওভার এলটিই ব্যবহার উপযোগী ডিভাইসের ব্যবহার বাড়াতে তারা প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেন; তাহলে আমাদের সকল গ্রাহক ভয়েস ওভার এলটিই চালুর পরে সেবার মানের ক্ষেত্রে যে বৈপ্লবিক পরির্বতন হয়েছে তা উপভোগ করার সুযোগ পাবেন। ’’