সাংবাদিকদের ওপর হামলায় আইপিআই’র উদ্বেগ, প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি

সম্পাদক, মিডিয়া নির্বাহী ও নেতৃস্থানীয় সাংবাদিকদের বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্ক আন্তর্জাতিক প্রেস ইনস্টিটিউট (আইপিআই) সাংবাদিকদের ওপর সাম্প্রতিক হামলা এবং আন্তর্জতিক খ্যাতি সম্পন্ন  আলোকচিত্রী সাংবাদিক শহিদুল আলমকে আটকের ঘটনায় বাংলাদেশ সরকারের কাছে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

এক চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সাংবাদিকদের ওপর সহিংসতা বন্ধে দৃঢ় পদক্ষেপ, শহিদুল আলমের মুক্তির নিশ্চয়তা এবং তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সব অভিযোগ প্রত্যাহারের আহ্বান জানায় আইপিআই। আইপিআইয়ের ওয়েবসাইটে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। খবর ইউএনবি।

আইপিআই হেড অব এডভোকেসি রাভি আর প্রাসাদ বলেন, সম্প্রতি দায়িত্বরত সাংবাদিকদের ওপর সিরিজ হামলায় আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। হামলাকারীদের মধ্যে অনেকেই আপনার দলের সমর্থক বলে অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে তারা নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারাও হামলার শিকার হন।

প্রাসাদ চিঠিতে বলেন, এই হামলা এটাই নির্দেশ করে যে আপনার দল মুক্ত সাংবাদিকতা এবং সমালোচনাকে সহ্য করতে পারছে না, যা আপনার সরকারের গণতান্ত্রিক সরকারব্যবস্থার দাবির বিপরীতি।

শহিদুল আলমকে গ্রেপ্তার বাংলাদেশের স্বাক্ষর করা আন্তর্জাতিক মুক্ত গণমাধ্যম চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন উল্লেখ করে চিঠিতে আরো বলা হয়, ফেসবুকে এবং আল জাজিরাতে সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য এবং গুজব ছড়ানোয় আলমকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের বিতর্কিত ৫৭ ধারায় শহিদুলকে অভিযুক্ত করাটা হলো তার সমালোচনামূলক মতামতের জন্য প্রতিশোধ।

চিঠিতে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের খবর প্রচারে স্বাধীন গণমাধ্যম যে ভূমিকা পালন করেছে তা স্মরণ করা হয়। পাকিস্তানি আর্মিদের গণহত্যার খবর বিশ্ববাসীর সামনে তুলে আনে কয়েকজন সাংবাদিক। যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে শক্তিশালী জনমত গঠনে সাহায্য করেছিল। বাংলাদেশের সংবিধানেও মুক্ত গণমাধ্যমের গুরুত্বকে স্বীকৃতি দিয়েছে।

প্রাসাদ বলেন, আমরা আপনাকে এই মর্ম মনে রাখতে এবং সংবিধানে যে মুক্ত গণমাধ্যমের স্বীকৃতি রয়েছে তা বহাল রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।

আইসিটি আইনের পরিবর্তে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন প্রবর্তনের বিষয়ে চিঠিতে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। দুটি আইনই সমান বা ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনটি আরও বেশি কঠোর বলে উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, এতে করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাংবাদিকরা খবর প্রকাশ করতে পারবে না। অথচ হাসিনার সরকার দুর্নীতি দূর করার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন।

চিঠিতে আরও বলা হয়, বর্তমান আইনটি সংসদে পাস হলে এটি কেবল সাংবাদিকদের নয় বরং বাংলাদেশের সকল নাগরিকের ওপর গুরুতর, নিপীড়নমূলক প্রভাব ফেলবে।

আজকের বাজার/এমএইচ