সাগরে ঘূর্ণিঝড় ‘মারুথা’, বন্দরে ২ নম্বর সতর্ক সংকেত

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি শক্তিসঞ্চয় করে গভীর নিম্নচাপ এবং শেষে ঘূর্ণিঝড় ‘মারুথা’য় পরিণত হয়েছে। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন ঘূর্ণিঝড়টির বাংলাদেশে আঘাত হানার সম্ভাবনা একেবারেই কম। এটি মিয়ানমার উপকূলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

ভারত মহাসাগর এলাকায় এটাই বছরের প্রথম সাইক্লোন।

রবিবার দুপুরে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘মারুথা’ আরও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি রবিবার বেলা ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৯০ কি.মি. দক্ষিণে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫০৫ কি.মি. দক্ষিণে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭০৫ কি.মি. দক্ষিণ-পূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬২০ কি.মি. দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে রবিবার মধ্যরাত নাগাদ মিয়ানমারের স্যান্ডিওয়েউপকূল অতিক্রম করতে পারে।

আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘন্টায় ৬২ কি.মি. যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তিনি আরও জানান, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারী সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। যাতে স্বল্প সময়ের নোটিশে তারা নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারে।

২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেতের মানে হল- দূরে গভীর সাগরে একটি ঝড় সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার। বন্দর এখনই ঝড়ে কবলিত হবে না। তবে বন্দর ত্যাগকারী জাহাজ পথিমধ্যে বিপদে পড়তে পারে।

ভারতের আবহাওয়া অধিদফতর রবিবার জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি সোমবার সকাল নাগাদ মিয়ানমারের সিত্তুই এবং স্যান্ডিওয়ে উপকূলের মাঝখান দিয়ে অতিক্রম করতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টি উপকূল অতিক্রমের সময় মাঝারি ধরণের ভারী থেকে অতি ভারি বৃষ্টি ঝড়াতে পারে।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) অধীন জাতিসংঘের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর তীরের আট দেশের (বাংলাদেশ, মিয়ানমার, ভারত, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও ওমান) আবহাওয়াবিদদের সংস্থা এস্কেপ ঘূর্ণিঝড়ের নাম দিয়ে থাকে। ‘মারুথা’ নামটি শ্রীলঙ্কার দেওয়া।

রবিবার সকালে ঢাকায় এক পশলা বৃষ্টি হয়েছে। রবিবার সকাল ৬ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হয়েছে। এতে কয়েকদিন ধরে চলমান তাপপ্রবাহ প্রশমিত হয়েছে। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, আগামী কয়েক দিনে বৃষ্টির প্রবণতা আরও বাড়াবে, এতে তাপমাত্রা আরও কমে যাবে।

রবিবার সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসাথে কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টি হতে পারে।

সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পেতে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।