সারাদেশে ৪৫০ কিলোমিটার মহাসড়ক চারলেনে উন্নিত হয়েছে: ওবায়দুল কাদের

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, গত ১২ বছরে সারাদেশে প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার মহাসড়ক চারলেনে উন্নিত হয়েছে আরও প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার চারলেনে উন্নিতকরণের কাজ চলমান রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আপনাদের নজরে আনতে চাই, সড়ক-মহাসড়ক উন্নয়ন আমাদের অনেক হয়েছে। গত বারো বছরে প্রায় সাড়ে চারশ’ কিলোমিটার মহাসড়ক চারলেনে উন্নিত হয়েছে। আরও প্রায় সাড়ে চারশ’ কিলোমিটার চারলেনে উন্নিতকরণের কাজ চলমান রয়েছে।’

ওবায়দুল কাদের আজ বৃহষ্পতিবার ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার ওপর খাতওয়ারি আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আলোচনা সভায় যুক্ত হন।
নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়নের সাথে শুধু সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয় জড়িত নয়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং সংস্থা জড়িত উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ওসেতুমন্ত্রী বলেন, পরিকল্পনা দলিলে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে সকল অংশীজনের সমন্বয়ের বিষয়টি আনা যেতে পারে স্পষ্ট ভাবে। সড়ক দূর্ঘটনা এখন আমাদের বড় দুর্ভাবনা এবং সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ নিরাপদ সড়কের।

২০৩০ সালের মধ্যে ৬টি মেট্রোরেল রুট নির্মাণের সময়বদ্ধ পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে সরকার জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, একটি রুটের কাজ এগিয়ে চলছে, ২ টি রুটের ভৌত কাজ শীঘ্রই শুরু হবে এবং বিআরটি প্রকল্পের কাজও দ্রুত এগিয়ে চলছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, মহানগরীতে পরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে বাস রুট রেশনালাইজেশনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং এফিশিয়েন্ট ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমের জন্যও সমন্বয় জরুরি।
তিনি বলেন, পদ্মাসেতুতে ইতিমধ্যে ৩৪ টি স্প্যান বসানো সম্পূর্ণ হয়েছে, যা দৃশ্যমান এখন ৫ দশমিক ১ কিলোমিটার। বঙ্গবন্ধু কর্ণফুলী টানেলেরও ২ টি টিউবের মধ্যে ১টি টিউবের খনন কাজ শেষ হয়েছে। অপরদিকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রথম ধাপের কাজ প্রায় ৫৬ ভাগ শেষ হয়েছে।

যোগাযোগ অবকাঠামো দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে অনুঘটক হিসেবে কাজ করে এবং এক্সটার্নাল ইকনোমি ক্রিয়েট করে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, পণ্য ও যাত্রী পরিবহনের পাশাপাশি শিল্প বিকাশে সহায়তা করে এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করে, হ্রাস করে দারিদ্র্যতা। বাড়ায় আর্থিক ক্ষমতা এবং জীবনমান।

সরকার বিরাজনীতিকরণের পথে হাঁটছে এবং ষড়যন্ত্র করছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা আগেও বলেছি, এখনও বলছি। বিরাজনীতিকরণ তো নয়ই, বরং সরকার গণতন্ত্রের স্বার্থে, সুস্থ রাজনীতির স্বার্থে আরও সক্ষম এবং শক্তিশালী বিরোধীদল চায়।

তিনি বলেন, ‘আমরা আরও বলতে চাই, আওয়ামী লীগ কারও বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে না। বরং জন্মলগ্ন থেকে আওয়ামী লীগকে ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হয়েছে অনেকবার। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আওয়ামী লীগ দেশ, মাটি ও মানুষের পাশে থেকে এদেশে উন্নয়নের কাজ করে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। জনগণের আস্থা নিয়েই এগিয়ে চলেছে সমৃদ্ধ আগামী নির্বাচনে। এ অগ্রযাত্রায় বিরোধীদলের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি তাদের ভুল রাজনীতির খেসারত দিতে গিয়ে নির্বাচন কমিশন ও সরকারের ওপর মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে। নির্বাচনকে ভয় পেয়ে যারা নির্বাচনের দিন হঠাৎ করে সরে দাঁড়ায় এটা তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। তারা জনগণ থেকে স্বাভাবিকভাবে বিচ্ছিন্ন। তাদের হঠকারিতাই তাদেরকে জনগণ থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। এই বিচ্ছিন্নতা বুঝতে পেরে বিএনপি বিরাজনীতিকরণের কল্পিত অভিযোগ আনছে সরকারের বিরুদ্ধে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকার বিএনপিকে শক্তিশালী ও দায়িত্বশীল ভূমিকায় দেখতে চায়, পেতে চায় গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় সহযোগী শক্তি হিসেবে। কোনো দলকে রাজনীতি বিমূখ করা সরকারের কাজ নয়, কোনো এজেন্ডা নেই। কোনো দল অন্য দলকে বিরাজনীতিতে নিতে পারে না যতক্ষণ ওই দল জনগণের কথা বলে। বিএনপির আসলে জনবিরোধী ভূমিকা তাদের আত্মবিশ্বাসে চির ধরিয়েছে। সেই জন্য বিরাজনীতিকরণের কথা বলছে। তাদের সিনিয়র নেতারাই রাজনীতিতে অনেকে এখন নিষক্রিয় হয়ে যাচ্ছেন। নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থায়। তাদের নেতারাই এখন বলছেন বিএনপি একটা কোমর ভাঙা রাজনৈতিক দল।

৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার ওপর খাতভিত্তিক ভার্চুয়াল সভায় পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ও সিনিয়র সচিব সামসুল আলমের সভাপতিত্বে এতে আরও সংযুক্ত ছিলেন রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বারসহ আইসিটি বিভাগ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব এবং দফতর প্রধানরা।