সিরিয়া থেকে নিজ দেশ যুক্তরাষ্ট্রে ফিরতে আইএস নববধুর ফের আবেদন

ইসলামিক স্টেট গ্রুপে যোগ দেয়ার জন্য দুঃখ প্রকাশকারিনী এক নারী সিরিয়ার শরণার্থী শিবির থেকে দেশে ফিরে আসতে ফের আবেদন করেছেন। তিনি সিরিয়ায় তার ছোট সন্তানকে নিয়ে একটি শরণার্থী শিবিরে রয়েছেন। জন্মসূত্রে তিনি নিজেকে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে দাবি করছেন। খবর এএফপি’র।
কিন্তু ওই নারী আমেরিকান নাগরিক নয় এমন যুক্তি দেখিয়ে সরকার হদা মুতহানার যুক্তরাষ্ট্রে ফেরতের আবেদন অনুমোদনে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে।
শনিবার প্রকাশিত এনবিসি নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে মুতহানা বলেন, ‘আইএস-এ যোগ দিয়ে যা কিছু করেছি তার জন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।’ আলাবামায় তার পরিবারের সাথে বসবাস করার সময় কট্টরপন্থী মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে ২০১৪ সালে তিনি আইএস-এ যোগ দেন।
মুতহানা বলেন, পাপ যত বড়ই হোক না কেন, সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসী প্রত্যেকের তা শোধরানোর দ্বিতীয়বার সুযোগ রয়েছে।
সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে কুর্দি বাহিনী নিয়ন্ত্রিত আল-রোজ শরণার্থী শিবিরে তার এ সাক্ষাতকার নেয়া হয়। সেখানে তার দু’বছরের সন্তান আদম রয়েছে।
মুতহানা বলেন, তিনি তার জীবন নিয়ে শঙ্কিত এ কারণে যে এ শরণার্থী শিবিরে আইএস ত্যাগ করেনি এমন লোকজনের নজরে পড়তে পারেন তিনি।
মুতহানা বলেন, ‘আমি আইএসে যোগ দেয়ার প্রথম দিন থেকেই তাদের (আইএস) শিরñেদ করার নীতি সমর্থন করি না। আমি তাদের অপরাধ ও আত্মঘাতি হামলাও সমর্থন করি না।’

যুক্তরাষ্ট্র সরকার এইএস’র সাথে সংশ্লিষ্ট অনেক আমেরিকান নারীকে তাদের সন্তানসহ যুক্তরাষ্ট্রের পুনর্বাসিত করলেও তারা মুতহানাকে নেয়নি।
তার ব্যাপারে ওয়াশিংটনের ভাষ্য, মুতহানা যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করলেও তিনি মার্কিন নাগরিক নন। কারণ তিনি হচ্ছেন ওই সময় ইয়েমেন সরকারের পক্ষে দায়িত্ব পালন করা এক কূটনীতিকের কন্যা।

মার্কিন আইনে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক বিদেশী কূটনীতিকদের সন্তানরা জন্মসূত্রে আমেরিকার নাগরিকত্ব লাভের সুযোগ পায় না।
মুতহানা যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসার জন্য আবেদন করেছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্টে সিরিয়া সফর করেছিলেন।
মুতহানা এনবিসি’কে বলেন, ‘আমি একজন মার্কিন নাগরিক। এটা প্রমাণে আমার কাগজপত্র রয়েছে। আমি আমেরিকানদের মতোই দেখতে স্বর্ণকেশী ও নীলাভ চোখের বালিকা। আমি আমার দেশে থাকতে এবং আমেরিকানদের মতো কাজ করতে চাই। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও মুতহানাকে একজন সন্ত্রাসী হিসেবে অভিহিত করেছেন। মুতহানা আইএসের তিন যোদ্ধাকে বিয়ে করেন। তাদের সকলেই যুদ্ধে নিহত হন।

কাউন্টার এক্সট্রিমিজম প্রজেক্টের তথ্য অনুযায়ী, তিনি সক্রিয়ভাবে আইসের মতাদর্শগত প্রচারণায় সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি সর্বশক্তি দিয়ে আমেরিকানদের নিঃশেষ করতে জিহাদিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলন। মুতহানা ২০১৫ সালে ফ্রান্সে ম্যাগাজিন শার্লি হেবদোর দপ্তরে হামলার প্রশংসা করেন। ওই হামলায় ১২ জন প্রাণ হারায়। এনবিসিকে দেয়া সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, ‘এটি ছিল একটি মতাদর্শ- যা ছিল মাত্র একটি অধ্যায়। তিনি তার আগেকার মন্তব্যগুলো নিয়ে আলোচনা করতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি বলেন, তাকে দেশে ফেরার সুযোগ দেয়া হলে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে ইচ্ছুক।