সিলেট-৩ আসনের উপ-নির্বাচন, ইভিএমে ভোট দিতে পেরে ভোটারগণ খুশি

সিলেটের দক্ষিণ সুরমা ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলার আংশিক অংশ নিয়ে গঠিত সিলেট-৩ আসনের উপ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। আজ শনিবার সকাল ৮টা হতে শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ৮ ঘন্টা সময় ওই আসনে ভোট গ্রহন চলে।এতে নারী পুরুষ ভোটারগন অত্যন্ত শান্তিপুর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে নিজ নিজ পছন্দের প্রার্থীকে ভোট প্রদান করেন। ওই আসনের মোট ১৪৯ টি ভোটকেন্দ্রে শান্তিপুর্ণ ভাবে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে এ ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়। এতে করে ডিজিটাল এ পদ্ধতির মাধ্যমে জীবনের প্রথমবারের মতো ভোট দিতে পেরে নবীন ও প্রবীণ ভোটারগণ খুবই খুশি।

আসনের দক্ষিণ সুরমা মখন স্কুল ভোট কেন্দ্রে ২০ বছর বয়সী নতুন ভোটার কলেজ ছাত্র সোহান বলেন, আমি এবার প্রথম ভোটার হয়ে ভোট দিয়েছি, এতে আমার খুবই আনন্দ লাগছে যে ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যাবহারের মাধ্যমে আমি অত্যন্ত স্বচ্ছভাবে আমার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পেরেছি।

ফেঞ্চুগঞ্জের মাইজ গাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় বেশ উৎসাহ নিয়ে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে ভোট দিচ্ছেন। এখানে ভোট দিতে আসেন ৭৫ বছর বয়সী মালেকা খাতুন নামের একজন বৃদ্ধ মহিলা। তিনি জানান, তাঁর পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে এসেছেন। এবার জীবনের প্রথম ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দিতে পেরে তিনি বেশ খুশি। তিনি বলেন ভোট দিতি তাঁর কোন ঝামেলা হয়নি।

সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ভোট চলাকালীন সময়ে কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার কোন খবর পাওয়া যায়নি। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্হান ছিলো লক্ষনীয়।

সিলেট জেলার দক্ষিণ সুরমা, বালাগঞ্জ ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার একাংশ এলাকা নিয়ে গঠিত সিলেট-৩ আসন। এতে মোট ৩টি উপজেলার ২১টি ইউনিয়নের মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৮৭৩। মোট ভোট কেন্দ্র ১৪৯টি। এরমধ্যে দক্ষিণ সুরমা উপজেলার ৭৯টি কেন্দ্রে মোট ভোটার ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩শ। বালাগঞ্জ উপজেলার ৩৪টি কেন্দ্রে মোট ভোটার রয়েছে ৮৬ হাজার ৮৪৩ এবং ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ৩৬টি কেন্দ্রের মোট ভোটার সংখ্যা ৭৯ হাজার ৭৩০।

উপ-নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের হাবিবুর রহমান হাবিব, লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে জাতীয় পার্টির মো. আতিকুর রহমান আতিক, মটরগাড়ি প্রতীক নিয়ে বিএনপি থেকে সদ্যবহিস্কৃত সাবেক এমপি স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ্ব শফি আহমদ চৌধুরী এবং বাংলাদেশ কংগ্রেসের জুনায়েদ মোহাম্মদ মিয়া ডাব প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১১ মার্চ সিলেট-৩ আসনের এমপি মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরী কয়েস করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে আসনটি শূন্য হয়।

নির্বাচনকালীন সময়ে সকল অনিয়ম প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তাগণের সমন্বয়ে ২ সদস্যবিশিষ্টি একটি ‘নির্বাচনী তদন্ত কমিটি’ গঠন করেছে নির্বাচন কমিশন। কমিটিতে রয়েছেন সিলেটের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ তাসলিমা শারমিন ও সিনিয়র সহকারী জজ নির্জন কুমার মিত্র। এছাড়া আসনটির ভোটগ্রহণ উপলক্ষে ৩ জন ম্যাজিস্ট্রেটও নিয়োগ দিয়েছে ইসি।

আসনের সাধারণ ভোটকেন্দ্রে রয়েছে পুলিশ, আনসার ও গ্রাম পুলিশের ১৭ থেকে ১৮ জন সদস্য। আর ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে নিয়োজিত ছিলেন ১৮ থেকে ১৯ জন সশস্ত্র সদস্য। তারা সার্বক্ষণিক ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা দিচ্ছেন।পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে গঠিত মোবাইল ফোর্স ২১টি, স্ট্রাইকিং ফোর্স ১২টি, র‌্যাবের ১২টি টিম ও ১২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে আগামী ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। বিজিবির সঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা মোকাবিলায়। ভোটগ্রহণের দিন নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালন নিশ্চিতকরণ ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত ছিলেন ২১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি ইউনিয়নে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করেন। তথ‌্য-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান