সীমান্তবাসী সচেতন হলে কমতে পারে সীমান্ত হত্যা : বিজিবি ডিজি

সীমান্তের জনগণকে সচেতন এবং আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে তুলতে পারলে সীমান্ত হত্যা কমবে বলে মনে করেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম।
বিজিবি দিবস-২০২০ উপলক্ষে রোববার সকালে রাজধানীর পিলখানায় স্মৃতিস্তম্ভ ‘সীমান্ত গৌরবে’ পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিজিবির ডিজি বলেন, সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে বিজিবি সবসময় চেষ্টা করে যাচ্ছে।
১৭ ডিসেম্বর ভারত-বাংলাদেশ শীর্ষ বৈঠকে এবং এরআগে দুই দেশের সীমান্তরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, এ বিষয়ে কূটনৈতিকভাবে এবং বিজিবির পক্ষ থেকে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে, যেন সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা যায়। সেজন্য সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের সচেতন করার চেষ্টাও অব্যাহত রয়েছে এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম না করার জন্য তাদের বলা হচ্ছে।
সীমান্তের জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমেও জনগণকে ‘বোঝানোর চেষ্টা’ করা হচ্ছে জানিয়ে সাফিনুল বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, সীমান্তবর্তী জনগণকে শিক্ষা দীক্ষায় এবং অর্থনৈতিকভাবে যদি স্বাবলম্বী করা যায়, তাহলেই সীমান্ত হত্যা কমে যাবে।’
বিশ^ টেকনোলজির দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। সে সঙ্গে বাংলাদেশও প্রযুক্তিগত দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে, যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতি হয়েছে। সেটার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিজিবিকে সময়োপযোগী করাটা জরুরি বলে তিনি মনে করেন।
বিজিবি দিবস উদযাপন উপলক্ষে আজ রাজধানীর পিলখানস্থ বিজিবি সদর দপ্তরে বিজিবি মহাপরিচালক সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজিবির রেজিমেন্টাল পতাকা উত্তোলন করেন এবং পিলখানাস্থ ‘সীমান্ত গৌরব’ এ মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এ উপলক্ষে সকালে মহাপরিচালকের বিশেষ দরবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ জনিত স্বাস্থ্য ঝুঁকি বিবেচনায় ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে বিজিবি দিবস-২০২০ এর বিশেষ দরবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে দেশের সকল প্রান্ত হতে বিজিবি সদস্যরা যুক্ত ছিলেন।
বিজিবি মহাপরিচালক বৈশ্বিক করোনা মহামারিতে বিজিবি সদস্যদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আগামি দিনগুলোতে সরকারের অর্পিত যে কোন দায়িত্ব আরও দৃঢ় মনোবল, সততা, নিষ্ঠা ও আত্মপ্রত্যয়ের সাথে পালন করতে সর্বদা সচেষ্ট থাকার আহ্বান জানান।
তিনি বিজিবির মূলনীতিতে দীক্ষিত হয়ে সুসংগঠিত, শক্তিশালী এবং যুগোপযোগি বাহিনী হিসেবে দেশ ও জনগণের উন্নয়ন ও কল্যাণে সবাই একযোগে কাজ করবে বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
দরবার শেষে অনারারী সুবেদার মেজর হতে অনারারী সহকারি পরিচালক এবং অনারারি সহকারি পরিচালক হতে অনারারি উপ পরিচালক পদে পদোন্নতি প্রাপ্তদের র‌্যাংক ব্যাজ পরিধান, শ্রেষ্ঠ রিক্রুট প্রশিক্ষক অথবা প্রশিক্ষণে অসাধারণ কৃতিত্ব অর্জনকারী বা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দলগত বা ব্যক্তিগত পুরস্কার প্রদান, অপারেশনাল কার্যক্রম, চোরাচালান নিরোধ এবং মাদকদ্রব্য আটকের ক্ষেত্রে কৃতিত্বপূর্ণ কাজের জন্য পুরস্কার প্রদান, শ্রেষ্ঠ ব্যাটালিয়ন ও রানারআপ ব্যাটালিয়নকে পুরস্কার প্রদান, শ্রেষ্ঠ কোম্পানী ও বিওপি কমান্ডারদের পুরস্কার প্রদান এবং মহাপরিচালকের অপারেশন ও প্রশাসনিক ইনসিগনিয়াসহ প্রশংসাপত্র প্রদান করা হয়।
এছাড়াও বিজিবি দিবস উদযাপন উপলক্ষে পিলখানাসহ বিজিবির সকল রিজিয়ন, সেক্টর, ব্যাটালিয়ন ও প্রতিষ্ঠানসমূহে কেক কাটা ও প্রীতিভোজের আয়োজন করা হয় এবং মাগরিবের নামাজের পর বিজিবির সকল মসজিদে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে মিলাদ ও বিশেষ দোয়া করা হয়।