স্বপ্ন নম্বর ১০

আলোহীন একটা বাগান-বাড়িতে আমরা কয়েক বন্ধু একত্রিত হলাম। বন্ধুত্ব এবং শৈশবে একসাথে বেড়ে উঠাই আমাদেরকে এখানে টেনে এনেছে একসাথে। বাগান-বাড়িটি আমাদের সবারই খুব পরিচিত। অন্ধকারেও ভয় পাবার কিছুই নেই এখানে। সুতরাং রাত বাড়ার সাথে সাথে আমাদের আনন্দের আতিশয্যও বাড়তে লাগল। সবাই হাসি-ঠাট্টা শুরু করলাম। কেউ কেউ কৌতুক ও গল্প বলতে লাগল।

এক সময়ে আমরা ভূতের গল্প শুরু করলাম। সবাই যেহেতু পরস্পরকে গলার কণ্ঠস্বর দিয়ে চিনি, সেহেতু অন্ধকারের ভেতরেও আমাদের ভয় করল না। বরং আমাদের অট্টহাসি বাগানের চারদিকের দেয়াল পেরিয়ে বাইরের ঘুমন্ত অধিবাসীদেরকে জাগিয়ে দিতে লাগল। গল্প বলতে বলতে আমরা পরস্পরের কাছে আসতে লাগলাম। এই সময়েই খেয়াল করলাম যে, বাগানবাড়িটি ক্রমশ বিস্তৃত হচ্ছে। চারদিকে। চারদিকের ঘুটঘুটে অন্ধকারও এই প্রসারণ কমাতে পারছে না। মনে হলো যে, আমাদের আজকের এই আড্ডা এই বাগান-বাড়িতে শেষ হবে না। শেষ হবে অন্য কোথাও। হতে পারে কোনো বিশাল মাঠ বা প্রধান সড়কের ওপরে।

আমাদের একজন ফারাও রাণীর গল্প বলছিল। রাণী তার ধর্মযাজকদের ওপরে প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিলেন। কারণ, তারা তার স্বামীকে হত্যা করেছিল। তিনি তাদেরকে একটা জায়গায় আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। জায়গাটি দেখতে ছিল অনেকটা আমাদের আজকের মিলনস্থলের মতো। সেটি পানির নীচে ডুবে গিয়েছিল। রাণী ও ধর্মযাজকদের নিয়ে। গল্পটি শেষ হবার আগেই আমরা অনুভব করলাম আকাশ থেকে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সাথে প্রবল বাতাস ও বিদ্যুতের চমকানি। কিছুক্ষণ পর সবাই অনুভব করলাম যে, আমাদের পা ডুবে যাচ্ছে বৃষ্টির পানিতে এবং তা আমাদের পায়ের গোড়ালি বেয়ে ওপরের দিকে উঠছে। ক্রমশ আমরা বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যেতে লাগলাম। অন্ধকারের ভেতরে। আমাদের সমস্ত কৌতুক ও হাসিঠাট্টা উবে গেল। কোনো আশাও রইল না – একমাত্র আকাশে উড়ে যাওয়া ছাড়া। খবর-ডেইলি বাংলাদেশ

আজকের বাজার/আখনূর রহমান