হালান্ডের জোড়া গোলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ আটে ডর্টমুন্ড

দুর্দান্ত ফর্মে থাকা নরওয়েজিয়ান তরুণ স্টাইকার আর্লিং ব্রট হালান্ডের দুই গোলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। মঙ্গলবার লা লিগার ক্লাব সেভিয়ার সাথে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচটি ২-২ গোলে ড্র হলে দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৪ গোলে এগিয়ে ডর্টমুন্ডের শেষ আট নিশ্চিত হয়।
এর আগে প্রথম লেগে ৩-২ গোলের জয়ের মাচটিতেও দুই গোল করেছিলেন হালান্ড। গতকাল সিগন্যাল ইডুনা পার্কে দর্শকবিহীন স্টেডিয়ামে প্রথমার্ধে এক গোলের পর পেনাল্টি থেকে বিরতির পর আরো এক গোল করে দলকে দারুনভাবে এগিয়ে দেন হালান্ড। ম্যাচ শেষে স্কাই স্পোর্টসকে হালান্ড বলেছেন, ‘এটা একটি কঠিন ম্যাচ ছিল। আমি চেষ্টা করেছি, পরের রাউন্ডে খেলতে পারার অভিজ্ঞতা সত্যিই দারুন। জয়টা আমাদের প্রাপ্য ছিল।’
সেভিয়ার হয়ে কাল দুই গোল পরিশোধ করেছে মরোক্কান ফরোয়ার্ড ইউসেফ এন-নেসরি। ৬৯ মিনিটে স্পট কিক থেকে প্রথম গোলের পর শেষ মিনিটে এন-নেসরির গোলে সমতা ফেরায় সেভিয়া। কিন্তু আগের লেগে এগিয়ে থাকায় শেষ পর্যন্ত ভাগ্য সহায় হয় ডর্টমুন্ডের। এন-নেসরি বলেছেন, ‘এই ফলাফলে আমরা মোটেও খুশী নই। মূল কথা হচ্ছে কাল ভাগ্য আমাদের সহায় ছিলনা। তারা একটি সুযোগ পেয়েছে এবং সেটাই গোল করেছে। শেষ মিনিট পর্যন্ত আমরা লড়াই করে গেছি।’
ম্যাচ সেরা হালান্ড এ পর্যন্ত ৬ ম্যাচে ১০ গোল করে এবারের মৌসুমে এখনো গোলদাতার তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন। ২০ বছর বয়সী এই তরুণ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে মাত্র ১৪ ম্যাচে ২০ গোল করার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। এর আগে এই রেকর্ডটি ছিল কিলিয়ান এমবাপ্পের দখলে।
সেভিয়া কোচ জুলেন লোপেতেগুই বলেছেন, ‘আমরা এমন একজন খেলোয়াড়ের কাছে হেরে গেছি যার জন্য উজ্জ্বল একটি ভবিষ্যত অপেক্ষা করছে।’
এর আগে চারবারের মোকাবেলায় তিনবারই পরাজিত হয়েছিল সেভিয়া। কিন্তু তারপরেও ম্যাচের শুরুতে আধিপত্য দেখিয়েছে সেভিয়া। ম্যাচের লিড নেবার আগে সেভিয়াকে বারবার আটকাতে বাধ্য হয়েছে স্বাগতিকরা। সেভিয়া যখন তাদের নিজেদের অর্ধে পজিশন হারাতে শুরু করে সেই সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগিয়েছে ডর্টমুন্ড। বিরতির আগে এক গোলে করলেও রেফারি সিদ্ধান্ত দেয় গোলের আগে সেভিয়া ডিফেন্ডার ফার্নান্দোকে ফাউল করেছেন হালান্ড। ৩৫তম মিনিটে প্রথম সুযোগেই এগিয়ে যায় ডর্টমুন্ড। মাহমুদ দাহুদের থ্রু বল ডি-বক্সে পেয়ে মার্কো রেয়াসকে পাস দেন ছয় গজ বক্সের সামনে। সহজেই ফাঁকা জালে বল পাঠান হালান্ড।
৫৪ মিনিটে আরেকটি আক্রমন থেকেই পেনাল্টি আদায় করে নেন হালান্ড। ডর্টমুন্ডের হয়ে সাধারনত স্পট কিক নিয়ে থাকে মার্কো রেয়াস। কিন্তু কাল তিনি হালান্ডকেই সেই দায়িত্ব দেন। প্রথম শটটিতে ব্যর্থ হন হালান্ড। কিন্তু সেভিয়া গোলরক্ষক ইয়াসি বুনু তার পজিশন থেকে সড়ে আসায় শটটি পুনরায় নিতে হয়েছে। দ্বিতীয় প্রচেষ্টার কোন ভুল করেননি হালান্ড। বিরতির আগে হালান্ড ও সেভিয়া মিডফিল্ডার ইয়োহান জর্ডান একে অপরের সাথে বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ায় হলুদ কার্ড দেখেছেন।
সেভিয়া ফরোয়ার্ড লুক ডি জংকে ডি বক্সের মধ্যে ফাউলের অপরাধে ডর্টমুন্ড ডিফেন্ডার এমরে কানের বিপক্ষে পেনাল্টি পায় সফরকারীরা। ৬৮ মিনিটে স্পট কিক থেকে সেভিয়াকে প্রথম সাফল্য এনে দেন এন-নেসরি। ম্যাচ শেষের পাঁচ মিনিট আগে দাহুদের শট দারুনভাবে আটকে দেন বুনু। ম্যাচ শেষের আগ মুহূর্তে এন-নেসরির শক্তিশালী হেডে সেভিয়া স্বপ্ন দেখতে শুরু করলেও শেষ রক্ষা হয়নি।