অধিক ফসল উৎপাদন ও বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হবার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অধিক ফসল উৎপাদন ও বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হবার পাশাপাশি  সঞ্চয় করার এবং দেশব্যাপী খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে যে কোন সংকট মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
মহামারি করোনাভাইরাস এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মুদ্রাস্ফীতির ক্রমবর্ধমান প্রবণতা, বিদ্যুতের অভাব এবং বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকটের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের শুরু থেকেই সতর্ক থাকতে হবে। আমরা যদি সাবধানে এগিয়ে যাই, ইনশাআল্লাহ আমাদের কোন সমস্যা হবে না, এটা আমার বিশ্বাস।’
প্রধানমন্ত্রী আজ সকালে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের (পিজিআর) ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি’র ভাষণে এ কথা বলেন।
তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢাকা সেনানিবাসের পিজিআর সদর দপ্তরের অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
সরকার প্রধান বলেন, চলমান করোনাভাইরাস এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমেরিকা, ইংল্যান্ড, গ্রেট ব্রিটেনের মতো উন্নত দেশগুলোসহ বিশ্বব্যাপী মূদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাশাপাশি কয়লা না পাওয়া এবং গ্যাস ও ডিজেলের মতো বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী উপাদানের অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধির কারণে সেখানেও এখন বিদ্যুতের তীব্র সংকটের সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, যুদ্ধের কারণে নিয়মিত জাহাজ চলাচল না করায় বিশ্ব বর্তমানে পরিবহন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে, পরিবহন ব্যয় অত্যাধিক বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত জ্বালানির ব্যবহার কমাতে এলাকাভিত্তিক নির্দিষ্ট সময়ের লোডশেডিং করে বিদ্যুতের ব্যবহার কিছুটা কমানো যায় কি-না সে চিন্তাও করছেন তিনি। তবে সে ক্ষেত্রে আকস্মিক নয়, মানুষকে প্রস্তুত থাকার সময়টা দিয়েই তা করা যেতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিদ্যুতের ব্যাপারে আমাদের শুধু সাশ্রয়ীই হলে চলবে না। আমি যেমন চিন্তাও করেছি কিছুটা সময় বিদ্যুৎ উৎপাদন একটু কমিয়ে দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের যে উপাদানগুলো সে গুলো যেন আমরা কম ব্যয় করতে পারি।’
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে দেশবাসী প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা লোডশেডিং প্রত্যক্ষ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন বিশ^ পরিস্থিতির কারণে সংকট উত্তরণে এলাকা ভিত্তিক কিছুটা লোডশেডিং চলতে পারে।
সরকার প্রধান বলেন, ‘এখন আমরা একটা সুনির্দিষ্ট সময় যদি ধরে দেই যে একেক এলাকাভিত্তিক কিছুক্ষণের জন্য সেখানে বিদ্যুতের কিছুটা লোড শেডিং হবে, হঠাৎ যাবে হঠাৎ আসবে না, মানুষ প্রস্তুতি নিতে পারবে। সেভাবেই আমাদের কিছু কিছু পদক্ষেপ এখন থেকেই যদি আমরা নেই তাহলে আগামী দিনে যে আরো সমস্যাটা দেখা দিতে পারে সে পরিস্থিতি থেকে আমরা নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারবো।’
‘অনেক উন্নত দেশে দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে,’ উল্লেখ করে তিনি দেশের প্রতি ইঞ্চি জমি এবং জলাশয়কে কাজে লাগানোর মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ব্যক্তি থেকে প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে সকলের প্রতি আহবান জানান।
তিনি আরও যোগ করেন, ‘সে ক্ষেত্রে, আমরা যদি সাশ্রয়ী হয়ে উঠি এবং আমাদের সঞ্চয় বাড়াতে পারি তাহলে যে কোনও পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারবো।’
সরকার প্রধান বলেন, তাঁর সরকার প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে এবং দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে প্রতিটি গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষকে ঘর-বাড়ি করে দিচ্ছে।