অনুমতি ছাড়া অন্যের ছবি ব্যবহারের শাস্তি কি?

সম্প্রতি বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময়ে বেশ কিছু ছবি ব্যাপক প্রচার হয়েছে ফেসবুকে। যদিও অভিযোগ আছে যে অনেকে সেটি ব্যবহার করেছেন সংশ্লিষ্ট আলোকচিত্রীর অনুমতি ছাড়াই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এই যুগে ছবির এমন কপিরাইট নিয়ে মুশকিলে পড়ছেন অনেক পেশার মানুষজন। অর্থাৎ যার ছবি তার অনুমতি ছাড়াই ব্যবহার ঠেকানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে দিন দিন। আর এতে করে সবচেয়ে হুমকির মুখে রয়েছেন আলোকচিত্রীরা । ছাপা হওয়া অথবা ফেইসবুকে তাদের শেয়ার করা ছবি অন্য কেউ অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করছেন এমন প্রচুর নজির রয়েছে।

অনুমতি ছাড়া ছবি ব্যবহার হয়েছে এমন এক ঘটনার শিকার বাংলাদেশের আলোকচিত্রী সাহাদাত পারভেজ। বিবিসি বাংলাকে তিনি জানিয়েছেন, তার তোলা বাংলাদেশী বাউলের একটি ছবি ছাপা হয়েছিলো একটি আন্তর্জাতিক ম্যাগাজিনে এবং এরপর এটি ছড়িয়ে যায় বিভিন্ন জায়গায়। পরে একটি প্রতিষ্ঠান এটি ব্যাংকের বিজ্ঞাপনের কাজে ব্যবহার করে। যা দেখে সেই বাউল সন্দেহ প্রকাশ করে যে তার ছবি তার অনুমতি ছাড়া আমিই দিয়েছি বিজ্ঞাপনের জন্য। পরে সেই প্রতিষ্ঠান জানায় যে বিজ্ঞাপনটি তাদের বানিয়ে দিয়েছে একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থা। আর সেই সংস্থার সাথে যোগাযোগ করলে তারা বলেন তারা ছবিটি ব্যবহারের লোভ সামলাতে পারেনি।

শাহাদত পারভেজ বলছেন, এসব ঘটনা অহরহ ঘটছে। বিশেষ করে ফেসবুক বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে যায় কিন্তু বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করলে ধরা পড়ে যায়। ছবি চুরি হয় , নানা রকম ভাবে নিয়ে যায়। ব্যক্তিগত ব্যবহার করলে সেটি ধরাও যায়না। কিন্তু অনুমতি ছাড়া কেউ ছবির বাণিজ্যিক ব্যবহার করলে ছবির যা মূল্য তার তিনগুণ অর্থ দিতে হবে। ধরুন আপনার একটি ছবির মূল্য দশ হাজার টাকা আর অনুমতি ছাড়া ব্যবহারের জন্য জরিমানা এবং ক্রেডিট লাইন না দেয়ার আরেকটি জরিমানা- এ তিনগুণ অর্থ দিতে হবে।

তিনি জানান, কিছু ফটো এজেন্সি নানা সময় এমন জরিমানা আদায় করেছে কিন্তু সাধারণের মধ্যে কপিরাইট নিয়ে ধারণা একদমই নেই বলে মনে করেন ঢাকার এই আলোকচিত্রি। কপিরাইট নিয়ে ধারণা থাকলে ছবি তোলাই কঠিন হয়ে যেতো। যেমন কারও ছবি তুললে তার অনুমতি নিতে হবে আবার কোন জায়গায় গিয়ে ছবি তুললে তার জন্য অনুমতি নিতে হবে। বাংলাদেশে আসলে ছবি তোলা হয় পারস্পারিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে।

আজকের বাজার/ এমএইচ