গৃহকর্মীকে ঠকানো ও ভিসা জালিয়াতির অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন জাতিসংঘের বাংলাদেশি কর্মকর্তা হামিদুর রশীদ।
গত ২০ নভেম্বর নিউ ইয়র্কের সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্টে অবস্থিত ফেডারেল কোর্টের কোর্টের বিচারপতি অ্যান্ড্রু জে প্যাক কূটনীতিক হামিদুর রশীদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা না পেয়ে মামলাটি খারিজ করে দেন। তবে ওই ঘটনার এক মাস পর তা গণমাধ্যমের সামনে এল।
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি অফিসের প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা জেমস এম মারগলিন হামিদুর রশীদকে খালাসের তথ্য নিশ্চিত করেন।
হামিদুর রশীদ জাতিসংঘের উন্নয়ন সংস্থা ইউএনডিপির ডেভেলপমেন্ট স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড পলিসি অ্যানালাইসিস ইউনিটের প্রধান।
২০১৩ সালের শুরুতে হামিদুরের বাসায় কাজ শুরু করলেও চুক্তি অনুযায়ী পারিশ্রামিক পাননি বলে ওই বছরই তার বাসা ছেড়ে যান বলে অভিযোগ করেছিলেন বাংলাদেশি এক গৃহকর্মী।
এরপর গত ২০ জুন সকালে তার নিউইয়র্ক সিটির ম্যানহাটনের বাসা থেকে হামিদুরকে গ্রেফতার করেছিল যুক্তরাষ্ট্র পুলিশ।
গ্রেফতারের সাত ঘণ্টা পর একইদিন বিকালে শর্ত সাপেক্ষে জামিন পেয়েছিলেন তিনি।
অভিযোগে বলা হয়, সপ্তাহে ৪২০ ডলার মজুরিতে নিয়োগের চুক্তি করে গৃহকর্মীর ভিসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে চুক্তিপত্র দাখিল করেন হামিদুর। ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে গৃহকর্মী যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছালে তিনি নতুন একটি চুক্তিতে তার সই নেন, যেখানে সাপ্তাহিক মজুরি ২৯০ ডলার লেখা হয়।
হামিদুর রশীদ ওই গৃহকর্মীর পাসপোর্ট নিয়ে নেন এবং অন্য কোথাও কাজ করলে তাকে প্রথমে কারাগারে ও পরে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে বলে বিভিন্ন সময় হুমকি দেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
হামিদুর প্রথম দিকে ওই গৃহকর্মীর হাতে কোনো টাকা দেননি অভিযোগ করে মামলায় বলা হয়, ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত কাজের জন্য বাংলাদেশে তার স্বামীকে মাসে ৬০০ ডলারের সমপরিমাণ টাকা পাঠাতেন। ওই বছর অক্টোবরে সরাসরি তার হাতে ৬০০ ডলার দেন।
ইউএনডিপির এই বাংলাদেশি কর্মকর্তা কখনোই তার গৃহকর্মী বা তার স্বামীকে মূল চুক্তি অনুযায়ী সপ্তাহে ৪২০ ডলার দেননি বলে অভিযোগে বলা হয়।
মামলায় বলা হয়, গৃহকর্মীকে যথাযথ বেতন দেওয়া হচ্ছে দেখাতে তার নামে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া হলেও তা আসলে হামিদ ও তার স্ত্রী নিয়ন্ত্রণ করতেন।ওই গৃহকর্মী ২০১৩ সালে হামিদের বাসা থেকে চলে যান এবং আর ফেরেননি বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
কাজ ছেড়ে চলে যাওয়ার চার বছর পর কেন মামলা করা হল আদালতে সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলে আদালতে হামিদুরের পক্ষ থেকে চুক্তি অনুযায়ী পারিশ্রমিক দেয়ার প্রমাণপত্রও দেখানো হয়। এতে সন্তুষ্ট হয়ে বিচারক মামলাটি খারিজ করে দেন।
আজকের বাজার: এলকে/ ২০ ডিসেম্বর ২০১৭