অর্থনীতিতে পুঁজিবাজারের অবদান বাড়াতে ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশনের সিদ্ধান্ত অত্যন্ত সময়োপযোগী

সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক-ভাবে বাংলাদেশ বিদেশি বিনিয়োগের জন্য অত্যন্ত আকর্ষনীয় স্থান। দেশের নীতিনির্ধারকগন জাতীয় অর্থনীতিতে পুঁজিবাজারের অবদান বৃদ্ধির লক্ষ্যে পুঁজিবাজার ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যা অত্যন্ত সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত৷ ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশনের বিধান মতে কৌশলগত বিনিয়োগকারীর অন্তর্ভূক্তি দেশের অর্থনীতিতে পুঁজিবাজারের অবদান বৃদ্ধির পথ সুগম করেছে। কৌশলগত বিনিয়োগকারীর খোঁজে পৃথিবীর ৩৮টি প্রতিষ্ঠানের আগ্রহ দেখে এটাই প্রমাণিত হয় যে, বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। দেশের পুঁজিবাজারের মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন জিডিপির ২০ শতাংশ, যা প্রতিবেশি দেশ ভারতে ৮০ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় ৬০ শতাংশ৷

গতকাল সোমবার (২৯ অক্টোবর) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ট্রাস্ট্রিজ এর ৬০ বছর পুর্তিতে ডিসিসিআই ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এর যৌথ উদ্যোগে দেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও চীনা কোম্পানি মধ্যে আয়োজিত “গন্তব্য বাংলাদেশ-বৈদেশিক বিনিয়োগের সুযোগ” শীর্ষক ব্যবসায়িক সম্মেলনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এ এম মাজেদুর রহমান এসব কথা বলেন৷

তিনি আরো বলেন, সাংহাই ও শেনঝেন স্টক এক্সচেঞ্জের সমন্বয়ে গঠিত কনসোর্টিয়ামকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে পাওয়া ডিএসইর জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়৷ যাদের সম্বলিত মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন ৮ ট্রিলিয়ন ডলার। চীনের এই কনসোর্টিয়ামের সরাসরি বিনিয়োগের ফলে শুধু ডিএসই উপকৃত হবেনা বরং দেশের সমগ্র অর্থনীতি উপকৃত হবে।

এর আগে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর প্রেসিডেন্ট আবুল কাসেম খান স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ ৬০ বছরের সময়কালে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় অবদান রাখতে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করছে।

বাংলাদেশ সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের জন্য অত্যন্ত আকর্ষনীয় গন্তব্য হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দক্ষতা ও উৎপাদন খরচ বিবেচনায় বিদেশি বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ অনেক সম্ভবনাময়। এশিয়ার অন্যান্য উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের প্রবৃদ্ধির ধারার সাথে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির ধারার অনেক মিল রয়েছে উল্লেখ করে আবুল কাসেম খান বলেন, পণ্য উৎপাদনের জন্য বাংলাদেশের শ্রমমূল্য চীনসহ অন্যান্য দেশের জন্য অত্যন্ত আকর্ষনীয়। চীনের শেনঝেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাথে যুক্ত হওয়া সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত। আর বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ, অবকাঠামো উন্নয়নে স্টক এক্সচেঞ্জ হতে পারে অর্থায়নের বড় উৎস। তার মতে বাংলাদেশ আশিয়ানে যোগ দিলে বাংলাদেশ দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার প্রবেশ পথ হিসেবে বিবেচিত হবে।

পরবর্তীতে শেনঝেন স্টক এক্সচেঞ্জের ইন্টারন্যাশনাল ডিপার্টমেন্ট এর পরিচালক মিঃ লি ফুজং চীনা প্রতিনিধিবৃন্দের পক্ষ থেকে এধরনের ব্যবসায়িক বৈঠক আয়োজনের জন্য ডিসিসিআই ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ অত্যন্ত অনুকূল। ব্যক্তি মালিকানাধীন খাতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে ও বিনিয়োগে চীনা উদ্যোক্তরা আগ্রহী৷

পরে বাংলাদেশে বিনিয়োগ সুযোগ সুবিধা ও সম্ভাবনা নিয়ে চীনের নিউ হোপ লিউই কোম্পানি লিমিটেড, ঝেজিয়াং ওয়েশিং ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড, নিংবো সিজিং কোম্পানি লিমিটেড, চায়না সিএএমসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড এবং এসডিআইসি পাওয়ার হোল্ডিংস লিমিটেড কোম্পানির প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের গার্মেন্টস এক্সেসরিজ, নিটিং, এগ্রিকালচারাল, পাওয়ার এবং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি সমুহের প্রতিনিধিবৃনদের সাথে ব্যবসায়িক বৈঠক করেন এবং বাংলাদেশী এবং চাইনীজ কোম্পানিজ সমুহের মধ্যে পারস্পরিক দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন৷

আজকের বাজার/এমএইচ