আওয়ামীলীগকে আয়নায় মুখ দেখতে বললেন ফখরুল

বিএনপিকে ‘দুর্নীতিপরায়ণ দল’ হিসেবে আখ্যায়িত করে আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে বক্তব্য আসার পর দলটিকে আয়নায় নিজেদের মুখ দেখার পরামর্শ দিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

১ মার্চ রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে আওয়ামীলীগকে উদ্দেশ করে তিনি এ কথা বলেন। খালেদা জিয়া ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে এই প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে ‘জাতীয় গণতান্ত্রিক অধিকার মঞ্চ’ নামের একটি সংগঠন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সংসদে প্রধানমন্ত্রী বেশকিছু আপত্তিকর কথা বলেছেন। একটি বৃহত্তম রাজনৈতিক দল (বিএনপি) যা প্রতিষ্ঠার পর থেকে পাঁচবার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছে, যে দল বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে, সংসদীয় গণতন্ত্র নিয়ে এসেছে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দিয়েছে, সেই দলটিকে তিনি বললেন দুর্নীতিপরায়ণ দল।’

অনুষ্ঠানে ফখরুল বলেন, ‘এসব কথা বলার আগে তো আয়নায় নিজের মুখ দেখতে হবে। মানুষ কী বলে আপনাদের সম্পর্কে তা শুনতে হবে তো। প্রয়াত সাংবাদিক এ বি এম মুসা বলে গিয়েছিলেন যে, ‘আওয়ামীলীগ দেখলেই বলবা চোর’। বদরউদ্দিন ওমর সাহেব কয়েকদিন আগে কলকাতার এয়ারপোর্টে একেবারে নাম ধরে বলেছেন চোর। মেগা প্রজেক্টের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট হয়ে যাচ্ছে। ব্যাংকগুলো থেকে হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে। দেশের মানুষ খুব ভালো করে জানে, কারা দুর্নীতি করছে, কারা দুর্নীতি করছে না।’

‘যেনতেন নির্বাচন করতে’ খালেদা জিয়াসহ বিএনপির নেতাকর্মীদের কারাগারে নিচ্ছে সরকার এই অভিযোগ করে দলটির মহাসচিব বলেন, ‘দেশনেত্রীর নামে চারটি মামলা। আর প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ছিল পনোরটা। ১৫টি মামলা তুলে নিয়ে এই চারটি রেখে দিলেন। আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হওয়া সাত হাজার মামলা তুলে নিয়েছেন। আর আমাদের মামলা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৮ হাজার। আসামির সংখ্যা একমাস আগে পর্যন্ত ছিল ১৮ লাখের ওপরে। গোটা কারাগার ভরে গিয়েছে বিএনপির নেতা-কর্মীতে।’

খালেদা জিয়াসহ নেতাকর্মীদের মুক্তি ও একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবি আদায়ে নেতাকর্মীদের আরো বেশি ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান বিএনপির মহাসচিব।

‘আমাদের কাজ এখন খালেদা জিয়াসহ নেতাকর্মীদের মুক্ত করে আনা। আরেকদিকে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আদায় করার সংগ্রাম। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এই দানব সরকারকে পরাজিত করে সত্যিকার অর্থে একটি নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’

বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট নিপুন রায় চৌধুরীর সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য দেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ প্রমুখ।