প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্ক্যান্ডিনেভীয় দেশ সুইডেনে তিন দিনের দ্বিপক্ষীয় সফরে লন্ডনের উদ্দেশে আজ ১৩ জুন ঢাকা ত্যাগ করবেন। সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন লোফভেনের আমন্ত্রণে তিনি এ সফরে যাচ্ছেন। সুইডেনে বাংলাদেশের কোন সরকার অথবা রাষ্ট্রপ্রধানের এটিই হবে প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিম জানান, ‘এই সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন লোফভেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হবেন।’ ১৩ মঙ্গলবার দুপুরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবে। একই দিন স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় ব্রিটেনের রাজধানী লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে ফ্লাইটটির অবতরণের কথা রয়েছে।
যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার নাজমুল কাউনাইন বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন। লন্ডনে ২৪ ঘণ্টা যাত্রাবিরতির পর শেখ হাসিনা ১৪ জুন স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমের উদ্দেশে রওনা হবেন। একই দিন স্থানীয় সময় রাত ৯টা ৪০ মিনিটে স্টকহোম অরিয়ান্দা বিমানবন্দরে ফ্লাইটটির অবতরণের কথা রয়েছে।
সুইডেনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম সারোয়ার বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন। বিমানবন্দর থেকে একটি সুসজ্জিত মোটর শোভাযাত্রার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে গ্র্যান্ড হোটেলে নিয়ে যাওয়া হবে।
সুইডেনে সফরকালে এই হোটেলেই তিনি অবস্থান করবেন। ১৫ জুন প্রধানমন্ত্রী সুইডিশ পার্লামেন্টে যাবেন এবং পার্লামেন্টের ভারপ্রাপ্ত স্পিকার টোবিয়াস বিলস্ট্রমের সঙ্গে বৈঠক করবেন। পরে শেখ হাসিনা রয়্যাল ক্যাসল-এ সুইডিশ রাজা ষোড়শ কার্ল-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। প্রধানমন্ত্রী সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন লোফভেন-এর সঙ্গে ১৫ জুন দুপুরে তার কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করবেন। বৈঠক শেষে তিনি সুইডিশ প্রধানমন্ত্রীর দেয়া মধ্যাহ্ন ভোজে যোগ দেবেন। সুইডিশ উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসাবেলা লেভিন এবং বিচার ও অভিবাসন মন্ত্রী মরগান জোহানসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করবেন।
প্রধানমন্ত্রী ১৫ জুন সন্ধ্যায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। তিনি আগামী ১৬ জুন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-সুইডেন ব্যবসা ও বিনিয়োগ ফোরামে যোগদান করবেন। তিনি এইচ অ্যান্ড এম কার্ল-জোহান পার্সন এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং প্রেসিডেন্ট অফ ইনভেস্টর জ্যাকব ওয়ালেনবার্গ, ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্কাস ওয়ালেনবার্গ এবং এবিবি সুইডেনের সিইও জোহান সোডারস্টর্মের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
সুইডেনে তিন দিনের দ্বিপক্ষীয় সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী আগামী ১৭ জুন লন্ডন হয়ে দেশে ফিরে আসবেন। এ সফরে প্রধানমন্ত্রী একটি ব্যবসায়ী দলসহ ৪৭ সদস্যের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন।
জানা গেছে, এ সফরকালে দুই নেতার শীর্ষ বৈঠক শেষে বাংলাদেশ-সুইডেন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করে একটি যৌথ ইশতেহার কিংবা ঘোষণাপত্র সই হতে পারে। এছাড়া দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সহযোগিতা জোরদারে সুইডেন-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল (এসবিবিসি) এবং নর্ডিক চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এনসিসিআই, ঢাকা) মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারকও স্বাক্ষরিত হতে পারে। সরকারের পক্ষথেকে আশা করা হচ্ছে, এ সফর দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণ, বাংলাদেশ ও সুইডেনের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ (এজেন্ডা ২০৩০) অর্জন এবং দুই দেশের মধ্যে অভিবাসন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার মতো ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করবে।
আজকের বাজার:এলকে/এলকে/ ১৩ জুন ২০১৭