আত্মঘাতী’ না হতে শরিকদের মেননের সতর্কবার্তা

আগামী নির্বাচনে ক্ষমতাসীন জোটের কোনো দল ‘একলা চল’ নীতিতে চললে সেটি আত্মঘাতী হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন সদ্য বিমান মন্ত্রণালয় হারানো ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।

বৃহস্পতিবার ৪ জানুয়ারি সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে দলের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন ক্ষশতাসীনদের শরিক দলের নেতারা।

ওয়ার্কার্স পার্টির উদ্যোগে ঘোষিত ২১ দফার কর্মসূচিকে এগিয়ে নিতে ও ৩ মার্চ শনিবার দুপুরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়। তবে মেননের কাছে সাংবাদিকদের বেশিরভাগ প্রশ্নই ছিল মন্ত্রিসভায় রদবদল নিয়ে।

বুধবার মন্ত্রিসভায় চার মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর দপ্তর বদল করা হয়। এর মধ্যে তিন জনই শরিক দল অথবা বিরোধী দলের। আর এর মধ্যে সবচেয়ে বড় চমক মেননকে বিমান মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে সমাজকল্যাণে পাঠানো। তিনি এই সিদ্ধান্তকে বিমান থেকে মাটিতে নামার সঙ্গে তুলনা করেছেন।

এই অবস্থায় ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতির কাছে জানতে চাওয়া হয়, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাদের ঐক্য ভেঙে যাওয়ার কোনো আশঙ্কা আছে কি না।

জবাবে মেনন বলেন, ‘আন্দোলন ও নির্বাচন জোট হিসেবে একসাথেই করতে চাই। আমি মনে করি চৌদ্দ দলের ঐক্য অব্যাহত থাকবে এবং চৌদ্দদলের ঐক্যকে সঠিকভাবে কার্যকর করতে হবে।’

‘একলা চল নীতিতে বিজয় আনা সম্ভব না’-এমন মন্তব্য করে মেনন বলেন, ‘আমি বলব ঐক্যটাকে সঠিকভাবে কার্যকর করতে হবে। আমিও যদি এখন একলা চলতে চাই সেটাও আত্মঘাতী হবে।’

নির্বাচনকে সামনে রেখে মন্ত্রিসভায় রদবদলকে কীভাবে দেখছেন-এমন প্রশ্নে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন, ‘নির্বাচন যখন আসে তখন নানাবিধ ইকোয়েশন (সমীকরণ) আসে। এই পরিবর্তন একটা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্যে অনেক হিসাব নিকাশ থেকে।’

‘বিমানমন্ত্রী হিসেবে আমি সফল’

গত চার বছর ধরে বিমান মন্ত্রী হিসেবে সব চ্যালেঞ্জ সফলভাবে মোকাবেলা করে ওই মন্ত্রণালয়কে লাভজনক অবস্থানে রাখতে পেরেছেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন মেনন।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়াকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন সাবেক বিমানমন্ত্রী। বলেন, ‘এখানে আরো বেশি কাজ করার সুযোগ রয়েছে বলে আমি মনে করি।’

‘এই মন্ত্রণালয়ে এসে আমি একদম সাধারণ মানুষ, দলিত, সংখ্যালঘুসহ সকল পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে নিয়ে কাজ করতে পারব। আমি মনে করি এই মন্ত্রণালয়েও আমার জন্য অনেক বড় বড় চ্যালেঞ্জ আসবে। এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়ে আমি আনন্দিত। আশা করি এখানেও সফলভাবে কাজ করতে পারব।’

বিমান মন্ত্রণায়ের দায়িত্ব পালনের বিষয়ে মেনন বলেন, ‘কিছু সমস্যার সমাধান করা যায়নি। এটার কারণ ছিল আমাদের বিমানবন্দরের অবকাঠামোর কারণে। তবে রাত একটার দিকে কেউ আমাকে ফোন করে বলেনি, আপনার বিমান আটকে আছে। এ মন্ত্রণালয়ে চার বছরের দায়িত্ব পালনে আমি তৃপ্ত বলে মনে করি।’

‘আমি দাবি করি যে, এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়া বাংলাদেশ বিমান পর পর তিন বছর মুনাফা করেছে। এছাড়া শিডিউল বিপর্যয় এড়িয়ে ৭৫ শতাংশ বিমান শিডিউল অনুযায়ী চলাচল করছে। ৭৬.৪ শতাংশ রিজিওনাল পার্কিং ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

২০১০ সালে দেশে পর্যটন নীতিমালা করা হয় জানিয়ে এই মন্ত্রণালয়ের সদ্য বিদায়ী মন্ত্রী বলেন, ‘এর মধ্যে বাংলাদেশের পর্যটনখাত একটি শিল্পে পরিণত হয়েছে। শুধুমাত্র গত এক বছরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এক কোটি পর্যটক ভ্রমণ করেছেন।’

আজকের বাজার : এলকে / ৪ জানুয়ারি ২০১৮