আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দরপতন, বাংলাদেশে বৃদ্ধি

মাত্র তিন সপ্তাহের ব্যবধানে আান্তর্জাতিক বাজারে চালের দামের উপর বড় ধরনের দরপতন হয়েছে। প্রতি টন চালের দাম ৪৩৫ ডলার বা তার উপরে থাকলেও এখন তা ৪০০ ডলারের নিচে নেমে এসেছে। সে হিসেবে প্রতি টন চালের দাম কমেছে ৩৫ ডলার।

তবে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে বাংলাদেশে চালের দাম না কমে উল্টো বেড়ে গেছে। গত তিন সপ্তাহে দেশে মোটা চালের দাম ৫ শতাংশ বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

চালের দাম পর্যবেক্ষণকারী আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে, গত বছর বন্যায় বোরোতে ফসলহানির ফলে বাংলাদেশকে চাল আমদানি করতে হয়। সরকার চালের আমদানি শুল্ক ২৮ শতাংশ তুলে দেয়। চার বছর পর বাংলাদেশ চালের আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে রপ্তানিকারকেরা চালের দাম বাড়াতে থাকে।

প্রতি টন চালের দাম ৪০০ ডলার থেকে বেড়ে ৫০০ ডলারে পৌঁছায়। এ অবস্থায় বাংলাদেশে ব্যবসায়ীরা ভারত, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও মিয়ানমার থেকে ৪০ লাখ টন চাল আমদানি করেন। এর মধ্যে ভারত থেকে আনা হয় ৩০ লাখ টন।

দেশে বোরোর বাম্পার ফলন হওয়ায় ৬ জুন সরকার আবার চালের ওপর ২৮ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করে। ইউএসডিএর হিসাবে, পরের দুই সপ্তাহে ভারতে চালের রপ্তানিমূল্য ৪৩০ ডলার থেকে কমতে কমতে ৩৯৪ ডলারে নেমে আসে। সবচেয়ে বড় দরপতন হয়েছে থাইল্যান্ডে। দেশটি প্রতি টন চালের দাম প্রায় ৪০ ডলার কমিয়ে দিয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশ আমদানির ওপর ২৮ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়ার তিন সপ্তাহের মধ্যে বিশ্ববাজারে চালের এ দরপতন হয়েছে। এতে সবচেয়ে বেশি দুশ্চিন্তায় পড়েছে ভারত। দেশটি বছরজুড়ে বাংলাদেশের কাছে এককভাবে প্রায় ৩০ লাখ টন চাল বিক্রি করেছিল। এ অর্থবছরে ভারত বিভিন্ন দেশে ১ কোটি ২০ লাখ টন চাল রপ্তানির পরিকল্পনা করেছে। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা ইতিমধ্যে ভারত থেকে ৪০ লাখ টন চাল আমদানির ঋণপত্র খুলেছেন। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁরা ওই চাল আনবেন কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। কারণ, দেশে চাহিদার চেয়ে বেশি চাল আছে।

এই পরিস্থিতিতে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল সম্প্রতি চীন সফর করেছে। ৯ জুন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের আলোচনার প্রধান বিষয় ছিল চাল। চীনকে এ বছর ৭০ লাখ টন চাল আমদানি করতে হবে। চীনের এই চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে চাল রপ্তানি করতে চায় ভারত।

আজকের বাজার/এমএইচ