আপিল বিভাগে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের হট্টগোল, বিচার কার্যক্রম ব্যাহত

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি আজ (বৃহস্পতিবার) অনুষ্ঠিত হওয়ার দাবিতে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আপিল বিভাগের এজলাস কক্ষে অবস্থান নিয়ে হট্টগোল করেছেন। এতে সকাল থেকে বিচার কার্যক্রম কার্যত বন্ধ রয়েছে।

শারীরিক অবস্থার মেডিকেল প্রতিবেদন না আসায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদার জামিন আবেদনের শুনানি ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত পিছিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা জানতে মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদন জমাদানের নির্দেশও দেন আপিল বিভাগ। খালেদার মেডিকেল প্রতিবেদন জমা দিতে সময় আবেদন করা হলে বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে ছয় বিচারকের আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এরপরপরই বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। শুনানি পেছানোর প্রতিবাদে বিএনপিপন্থী প্রায় ২০০ জন আইনজীবী সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আদালতের কক্ষে প্রবেশ করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। এসময় আপিল বিভাগের ছয় সদস্যের বেঞ্চের বিচারকরা নিয়মিত বিরতির আগেই আদালত কক্ষ ত্যাগ করতে বাধ্য হন।

নিয়মিত বিরতির পরে আপিল বিভাগ বেঞ্চের বিচারকরা আবার আদালত কক্ষে ফিরে আসলে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আবারও হট্টগোল শুরু করেন। তারা এজলাস কক্ষে অবস্থান নিয়ে ‘আমরা ন্যায়বিচার চাই’ স্লোগান দিতে থাকেন। এই প্রতিবেদন লেখার সময় দুপুর ১২টা পর্যন্ত আদালতের বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল।

এর আগে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম খালেদা জিয়ার মেডিকেল প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য সময় চেয়ে আবেদন করেন। তিনি বলেন,‘বিএনপি প্রধানের স্বাস্থ্য প্রতিবেদন এখনও প্রস্তুত হয়নি। কিছু পরীক্ষা শেষে প্রতিবেদন দিতে হবে বলে আরও সময় প্রয়োজন।’

গত ২৮ নভেম্বর আপিল বিভাগ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি পিছিয়ে ৫ ডিসেম্বর নির্ধারণ করে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে ছয় বিচারকের আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেন। একই বেঞ্চ ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা জানতে মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদন জমাদানের নির্দেশ দেন।

গত ১৪ নভেম্বর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টে খারিজ হওয়া বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল আবেদনটি দায়ের করেন। গত ৩১ জুলাই জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের সশ্রম দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে কারাবন্দী আছেন বিএনপি প্রধান। অরফানেজের মামলায় পাঁচ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে ২০১৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান তিনি। পরে হাইকোর্ট সাজার মেয়াদ বাড়িয়ে ১০ বছর করে। এ রায়ের বিরুদ্ধে তার আপিল সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারাধীন রয়েছে।

গত ৬ অক্টোবর আদালতের আদেশে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে(বিএসএমএমইউ)ভর্তি করা হয়। ৮ নভেম্বর তাকে চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অনুমোদনের পরে খালেদাকে বিএসএমএমইউ থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয় এবং নাইকো দুর্নীতি মামলায় পুরানো কেন্দ্রীয় কারাগারে একটি অস্থায়ী আদালতে হাজির করা হয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বর্তমানে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সূত্র-ইউএনবি

আজকের বাজার/আখনূর রহমান