আমাদের প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন বাসচালক

২০০৯ সালে পাকিস্তান সফরে শ্রীলংকা ক্রিকেট দলের উপর সন্ত্রাসী হামলা হয়েছিলো। পাকিস্তানের লাহোরে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয় বাসে থাকা শ্রীলংকা দল। বন্দুকধারীদের অবিরাম গুলিবর্ষণে ছয় লংকান ক্রিকেটার আহত হয়েছিলেন। ১১ বছর পর সেই ভয়াবহ হামলার স্মৃতিচারণ করলেন ঐ সময়ে দলের উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান ও সাবেক অধিনায়ক কুমার সাঙ্গাকারা।

২০০৯ সালের ৩ মার্চ, সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের তৃতীয় দিন বাসে করে হোটেল থেকে গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছিল সফরকারী শ্রীলংকা দল। কিন্তু স্টেডিয়ামের কাছে পৌঁছাতেই ১২ জন বন্দুকধারী শ্রীলংকার বাসে গুলিবর্ষন করেন। আর সেদিন, বাস চালকের বুদ্ধিমত্তায় পুরো দল বেঁচে যান বলে জানান সাঙ্গাকারা।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম স্কাই স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাঙ্গাকারা বলেন, ‘বাসচালক মেহের মোহাম্মদ খলিলের সাহসিকতায় সেদিন প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলাম।’

তিনি জানান, ‘ঐ সফরে পাকিস্তান সফরে সুরক্ষা নিয়ে আমাদের উদ্বেগের বিষয়টি তাদেরকে লিখিতভাবে জানিয়েছিলাম আমরা। কোনো খারাপ কিছু ঘটার আশঙ্কায় খেলোয়াড়দের জন্য জীবন-বীমা করার কথাও বলেছিলাম। তবে আমাদের আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়। আমাদেরকে জানানো হয়, সকল নিরাপত্তা দেয়া হবে।

স্টেডিয়ামে কাছে পৌছাতেই আমরা গুলির শব্দ শুনতে পাই। আমরা ভেবেছিলাম, পটকা ফোটানো হচ্ছে। কিন্তু আমাদেরকে বলা হয়, শুয়ে পড়ো, বাসে গুলি চালানো হচ্ছে। তিলকরতে দিলশান ছিল সামনে, আমি ছিলাম মাঝে। মাহেলা জয়াবর্ধনে একেবারে শেষে বসেছিল। মুত্তিয়া মুরালিধরন আমার ঠিক পিছনে ছিল।

গুলি ও গ্রেনেড বর্ষনে আমরা একজন আরেক জনের গায়ের উপর শুয়ে পড়েছিলাম। তারা বাসকে লক্ষ্য করে গুলি-গ্রেনেড-রকেটচালিত গ্রেনেডও ছুঁড়েছে। এরপরও কী ভাবে আমরা বেঁচে গিয়েছিলাম, জানি না।

থিলান-অজান্থা আহত হয়েছিলো, পারানাভিথানার বুক থেকে রক্তক্ষরণে হয়েছে। তবে হামলার মাঝেই ড্রাইভার খলিল অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে সর্বোচ্চ গতিতে বাস চালিয়েছিলো। দ্রুত চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে ৫শ মিটার দূরে অবস্থিত স্টেডিয়ামের ভেতরে ঢুকে যেতে পেরেছিলেন তিনি।

সন্ত্রসীরা বাসচালককে গুলি করার চেষ্টা করেছিলো, কিন্তু তার গায়ে লাগেনি। আমরা সম্ভবত তার জন্যই বেঁচে গিয়েছিলাম। এরপর হেলিকপ্টারে আমাদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। ঐ স্মৃতি কোনদিনও ভুলতে পারবো না।’ খবর-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান