একজন শিল্পী যখন গান গায় তার কাছে নিজের গাওয়া গানটি সবার চাইতে বেশ মনে হয়। আর একজন দেশপ্রেমিকের কাছে তার দেশ সবার প্রিয় ও বেশ বলে মনে হয়। আমার দেশ আমার কাছে সবার চাইতে বেশ, আমার সংগীতও বিশ্বের সবার চাইতে বেশ।
আমি আমার জন্য গান গাই, শ্রোতাদের গান শুনানোর সৌভাগ্য হয়ে উঠেনি, এমন যদি শ্লোগান হত তবে এক বাক্যে পৃথিবির সবাই শিল্পী হয়ে যেতেন। কোন বাক্য আর শুধু বাক্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতো না, সকল বাক্য ভেঙেচুড়ে সঙ্গীতে রুপ ধারণ করতো। সংগীতের একটি আলাদা শক্তি রয়েছে। এর ধ্বনি, সুর, তাল, লয় প্রাণকে উজ্জীবিত ও চেতনাকে শাণিত করে কাল থেকে কালান্তরে সংগীতের সুধায় আচ্ছন্ন হয়ে মানুষের মনে অন্য রকম স্বস্তি ও স্বাদ লাভ করে আসছে বলেই সংগীত আজ সর্বাঙ্গীন প্রিয়।
এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুস্কর ও কষ্ট সাধ্য হবে যে সংগীতকে ভালোবাসে না। সকল ব্যস্ততার মধ্যে থেকে মানুষ সংগীতের মূর্ছনায় ভেসে বেড়ায় ও সংগীতকে আপন করে নেয় হৃদয়ের মনিকোঠায়। সংগীত অনুরাগীর কাছে সংগীত এতটাই প্রিয় যে প্রিয় সঙ্গীর মতই সঙ্গী হয় সংগীত। সংগীতকে সংগীত অনুরাগীরা ভালোবেসে একমাত্র ধ্যান-জ্ঞানের সাধনায় অতিবাহিত করে যায় এমন উদাহরণ আমরা যুগে যুগে সংগীত সাধাক ও পণ্ডিতের মাঝে খুজে পাই।
বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে এই ধারণাটি নিয়ে হয়তোবা অনেকেই একমত পোষণ করবেন যে শিল্পীদের মেধা বিকাশের সংগীতের আজ জয়জয়কার দিন। খুব সহজে গান গেয়ে আমরা প্রচারে চলে আসি। বিশ্বায়নের ফলশ্রুতিতেই বিশ্বায়নকে কেন্দ্র করেই বেড়েছে মুক্তবাণিজ্য। প্রতিদিন নতুনত্ব সৃষ্টি আর তথ্য-প্রযুক্তির নতুন নতুন সংগীত অনুরাগীদের সৃজনশীল আবিষ্কার মানুষের মাঝে খুব সহজে যেভাবে পৌছে যাচ্ছে, ঠিক সেই ভাবেই হারিয়েও যাচ্ছে কিছু সংগীত। কথায় আছে সব সংগীত সংগীত নয় কিছু কিছু সংগীত জীবনে স্মরনী হয়ে রয়। সময় মেধা নিয়ে যে কাজ সৃষ্টি হয় সে কাজের ফলাফল শ্রুতি মধু ও চীরস্থায়ী বনে যায়।
সংগীতকে জনসম্মুখে উপস্থাপন করতে হবে একটু সতর্ক ও আত্মবিশ্বাসী কন্ঠে। একটি সংগীতের মধ্য দিয়ে ঐতিহ্য, দেশপ্রেম, সমাজ ও পরিবেশ এবং প্রকৃতির সঙ্গে পরিচিত হওয়া খুব সহজ এবং এর মাধ্যমে নিবিড় সম্পর্কে উদ্দীপ্ত হওয়া যায়। সংগীতের ভাষা হতে হবে শালিনতা এবং সংগীতের সংজ্ঞা কি আমাদের তা জানতে হবে। যন্ত্রে, কন্ঠে নৃত্য নাট্যে পরিবেশনের জন্য যে ধ্বনি দ্বারা নির্মিত শিল্প সৃষ্টি হয় তাই আমরা সংগীত বলে মনে করে থাকি। কিন্তু এর সংজ্ঞা ব্যাপক, যা সংক্ষেপে বলে কহে শেষ করা সম্ভব নয়।
আমি কোন সংগীত বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষিত শিল্পী নই, সংগীতকে ভালোবেসেই সংগীত অঙ্গনে জড়িয়ে যাই। তবে শ্রোতাদের গান শুনানোর মত দুঃসাহসিকতা আমার হয়ে উঠেনি। আমি আমার জন্য গান গাই। শ্রোতাদের গান শুনানোর সৌভাগ্য হয়ে উঠেনি এখনো। আমি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, কোন এক দিন বিশ্ব সংগীত দিবসে গেয়ে উঠবে আমার কন্ঠস্বর।
আজ শুক্রবার, ২১ জুন বিশ্ব সংগীত দিবস ২০১৯। দেশে প্রতি বছরের মত এবারো বিভিন্ন সংগীত অনুরাগীরা যার যার মত করে
দিবসটি পালন করবেন।
১৯৮২ সালে ফরাসি মন্ত্রী জ্যাক ল্যাং সর্বপ্রথম বিশ্ব সংগীত দিবস পালনের প্রস্তাব করেন। ১৯৮৫ সালের ২১ জুন প্রথম গোটা ইউরোপ এবং পরে সারা বিশ্ব এই সংগীত দিবস পালন করে। এরপর থেকে দিনটি বিশ্ব সংগীত দিবস হিসেবে পালন করা হয়। আর প্রথম থেকেই আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দিবসটি পালন করে আসছে।
আমিনুল ইসলাম টুববুস
সভাপতি, বাংলাদেশ সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদ।