আমির খসরুকে দুই সপ্তাহ সময় দিল দুদক

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তলবে হাজির হতে দুই সপ্তাহ সময় পেয়েছেন। এক মাসের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুদক এ সময় দিয়েছে। এব্যাপারে দুদকের জনসংযোগ বিভাগ জানিয়েছে, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে ১০ সেপ্টেম্বর দুদকে হাজির হতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৮ আগস্ট) দুদকের পরিচালক কাজী শফিকুল আলম এ সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছেন।সূত্র জানায়, ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে এক মাসের সময় আবেদন করেন তিনি।

এর আগে দুদকের মামলায় সাজা পেয়ে এখন কারাগারে রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এ ছাড়া বিএনপির ২৫ জনের বেশি জ্যেষ্ঠ নেতার বিরুদ্ধেও দুদকের করা দুর্নীতির মামলা চলছে। দলটি দীর্ঘদিন ধরেই দুদকের সমালোচনায় মুখর। এর মধ্যে জ্যেষ্ঠ আরেক নেতার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নামল দুদক।

এর মধ্যে চলতি বছরের এপ্রিলে বিএনপির শীর্ষ ৮ নেতার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নামে দুদক। তাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং, সন্দেহজনক ব্যাংক লেনদেনসহ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে বলে দুদক বলেছে।

এপ্রিলে বিএনপির যেসব নেতার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে তারা হলেন, স্থায়ী কমিটির চার সদস্য—খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও মির্জা আব্বাস; দুই ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু ও এম মোর্শেদ খান; যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল, আবদুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে ও দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল। এ ছাড়া এম মোর্শেদ খানের ছেলে খান ফয়সাল মোর্শেদ খানের বিরুদ্ধেও অনুসন্ধান হচ্ছে।

চলতি ১৩ আগস্ট সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির জ্যেষ্ঠ এ নেতার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদকে হাজির হতে চিঠি দেওয়া হয়।

গত ১৬ আগস্ট দুদকের পরিচালক কাজী শফিকুল আলমের স্বাক্ষরিত ওই চিঠি আমির খসরুর চট্টগ্রামের মেহেদীবাগের বাসার ঠিকানায় পাঠানো হয়। আজ তার হাজির হওয়ার তারিখ ছিল।

চিঠিতে বলা হয়, বেনামে পাঁচ তারকা হোটেল ব্যবসা, ব্যাংকে কোটি কোটি টাকার অবৈধ লেনদেনসহ মানিলন্ডারিং করে বিভিন্ন দেশে অর্থপাচারের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ ছাড়া স্ত্রী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যসহ নিজ নামে শেয়ার কেনাসহ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগও অনুসন্ধান করা হচ্ছে।

এর আগে, চলতি মাসের শুরুর দিকে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭(২) ধারায় এবং বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয় চট্টগ্রামে। মামলার এজাহারে বলা হয়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছিলেন। ইলেকট্রনিকস ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে রাষ্ট্রে নৈরাজ্য সৃষ্টির উদ্দেশে তিনি উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়। এটি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বলে অভিযোগ উঠে। সেই ক্লিপে কুমিল্লা থেকে নওমী নামের এক কর্মীর সঙ্গে একজনকে কথা বলতে শোনা যায়। নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে লোকজনকে নামানোর জন্য কথা বলতে শোনা যায় তাকে।

আজকের বাজার/এমএইচ