আমি সব মুসলমানকে হত্যা করতে চাই

‘আমি সব মুসলমানকে হত্যা করতে চাই। কিন্তু খুব অল্পই পেরেছি।

পুলিশের হাতে আটক হওয়ার পর চিৎকার করে এই কথা বলছিলেন লন্ডনে ফিন্সবুড়ি পার্ক এলাকায় মসজিদ ফেরত মুসল্লীদের উপর হামলাকারী ড্যারেন অসবর্ন। সম্ভত মসজিদের সামনের সব মানুষকেই গাড়িচাপা দিয়ে হত্যা করার ইচ্ছা ছিল তার। তাই ধরা পড়ার পর, সে এমন আক্ষেপ করেছে। আর এই আক্ষেপ থেকে সে পুলিশ ও তাকে আটককারী মুসলিমদের উদ্দেশ্যে বলছিলেন, আমাকে হত্যা করো। আমাকে হত্যা করো।

খবর দ্যা ডেইলি মেইলের।

১৮ জুন রোববার রাতে তারাবীহ নামাজ শেষে মসজিদ ফেরত মুসল্লীদের উপর ভ্যান (মিনি ট্রাক) তুলে দেয় ড্যারেন অসবর্ন ও তার দুই সহযোগী। ঘটনার পর অন্য দুই সহযোগী পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও উপস্থিত মুসল্লীরা অসবর্নকে ধরে ফেলতে সক্ষম হয়। পরে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন তারা।

ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে হত্যাকারী ড্যারেন অসবর্নের সংক্ষিপ্ত পরিচয় তুলে ধরা হয়েছে। দক্ষিণ ওয়েলসের বাসিন্দা ৪৭ বছর বয়সী ড্যারেন অসবর্ন চার সন্তানের জনক। হামলার মাস ছয়েক আগে স্ত্রীর সঙ্গে তার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।

দক্ষিণ ওয়েলস থেকে অসবর্ন দৈনিক ৮০ ডলার হিসেবে হামলায় ব্যবহৃত ভ্যানটি ভাড়া করেন। সেখান থেকে লন্ডন পর্যন্ত চালিয়ে এসে ফিন্সবুড়ি পার্কে হামলা চালান। হামলায় একজন মুসলমান নিহত হন। তার বাড়ি বাংলাদেশে। এতে ১০ জনের বেশি আহত হন, যাদের মধ্যে কয়েকজন হয়তো চিরতরে পঙ্গু হয়ে যেতে পারেন।

প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, ১৯৬৯ সালে সিঙ্গাপুরে জন্ম হয় ড্যারেন অসবর্নের। বৃটেনের সমারসেটে তার শৈশব-কৈশোর কাটে। পরে দক্ষিণ ওয়েলসে চলে যান। অসবর্নের প্রতিবেশিরা জানিয়েছেন, তিনি (অসবর্ন) একজন নিবেদিত পিতা। পার্টনারের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ার পর তিনি সন্তানদের নিজের কাছে নিয়ে আসেন। গত শুক্রবারও তাকে বাচ্চাদের স্কুলে আনা-নেওয়া করতে দেখা গেছে।

পলিন নামে ৪৮ বছর বয়সী একজন প্রতিবেশি বলেন, আমি তাকে প্রায়ই রাস্তায় হাঁটাহাটি করতে দেখেছি। কিন্তু কখনোই তার সঙ্গে কথা হয়নি। তাকে আমার খুবই স্বাভাবিক মানুষই মনে হয়েছে।

তো এই শান্ত, স্বাভাবিক মানুষটি কীভাবে এমন হিংস্র আর মুসলিম-বিদ্বেষীতে পরিণত হয়েছেন সে বিষয়ে কেউ কিছু বলতে পারেন নি। এমনকি স্থানীয় পুলিশ আর গোয়েন্দা সংস্থা এমআই ফাইভ এর কাছেও তার সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে/ ২০ জুন ২০১৭