ইংল্যান্ড খেলোয়াড়দের বিপক্ষে বর্ণবাদী আচরনের তদন্ত করবে ফিফা

বুদাপেস্টে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ইংল্যান্ড খেরোয়াড়দের লক্ষ্য করে বর্ণবাদী ভাষা ব্যবহার করে আবারো সমালোচনার মুখে পড়েছে হাঙ্গেরির সমর্থকরা। বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রন সংস্থা বিষয়টি মোটেই ভাল চোখে দেখেনি। পুসকাস এরিনার ম্যাচটি ঘিড়ে এই ধরনের ঘটনা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটিকে নির্দেশ দিয়েছে ফিফা। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এই ধরনের ঘটনাকে ‘সম্পূর্ণভাবে অগ্রহনযোগ্য’ বলে মন্তব্য করেছেন।

বৃহস্পতিবারের ম্যাচটিতে ইংল্যান্ডের রাহিম স্টার্লিং ও বদলী খেলোয়াড় জুড বেলিংহ্যামকে উদ্দেশ্য করে স্বাগতিক সমর্থকরা বর্ণবাদী ভাষা শব্দ উচ্চারন করে। ম্যাচটিতে ইংল্যান্ড ৪-০ গোলে হাঙ্গেরিকে বিধ্বস্ত করেছে। ম্যানচেস্টার সিটি ফরোয়ার্ড স্টার্লিং দুর্দান্ত এই জয়ের প্রথম গোলটি করেছিলেন। কিন্তু সফরকারী কৃষ্ণাঙ্গ খেলোয়াড়দের নিয়ে এই ধরনের ঘটনাটি ম্যাচের ফলাফলের আনন্দকে ছাপিয়ে গেছে।

উত্তেজিত স্বাগতিক সমর্থকার ম্যাচ শেষে মাঠের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের দাহ্য বস্তুও ছুঁড়ে মেরেছে। এক বিবৃতিতে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থা ফিফা জানিয়েছে, ‘ম্যাচ রিপোর্ট পর্যালোচনা করে ফিফা গতকাল রাতে হাঙ্গেরি বনাম ইংল্যান্ডের ম্যাচটি ঘিড়ে যে ঘটনা ঘটেছে তার বিপক্ষে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ফিফার সবসময়ই যেকোন ধরনের বর্ণবাদী কিংবা সংঘষপূর্ণ ঘটনাকে বিরোধীতা করে আসছে।’

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জনসন টুইটারে লিখেছেন, ‘ফুটবলে এই বিষয়টির প্রতি ফিফা জিরো টলারেন্স সবসময়ই রয়েছে। যারাই এই ঘটনার জন্য দায়ী তাদেরকে কঠোর শাস্তির আওতায় আনার জন্য আমি ফিফাকে আহবান জানাচ্ছি। নাহলে ফুটবলের ভালদিকগুলো সব নির্মূল হয়ে যাবে।’

যদিও হাঙ্গেরিয়ান ফুটবল প্রধানরা তাদের সমর্থকদের পক্ষেই কথা বলেছেন। হাঙ্গেরিয়ান সমর্থকদের অশোভন আচরনের ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগে জুলাইয়ে ইউরোপীয়ান ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা উয়েফা ইউরো ২০২০’এ সমর্থকদের বিরুপ আচরনের জন্য শাস্তি স্বরূপ তিনটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ দর্শকবিহীন স্টেডিয়ামে আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছিল হাঙ্গেরিয়ান ফুটবল ফেডারেশনকে। যদিও ফিফা প্রতিযোগিতা হওয়ায় এই শাস্তি বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে কার্যকর হবে না।

বর্ন বৈষম্যের বিপক্ষে নিজেদের সমর্থনের কথা জানিয়ে ম্যাচ শুরুর আগে ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়রা হাঁটু গেড়ে মাটিতে বসে প্রতিবাদ জানিয়েছিল। ইউরো ২০২০‘র বাছাইপর্বে মন্টেনেগ্রো ও বুলগেরিয়ায় খেলতে গিয়ে ইংল্যান্ডের ম্যানেজার গ্যারেথ সাউথগেট তার কৃষ্ণাঙ্গ খেলোয়াড়দের নিয়ে এই একই ধরনের অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিলেন। জুলাইয়ে ইউরোর ফাইনালে ইতালির কাছে পরাজয়ের পর অনলাইনে বর্ণবাদের স্বীকার হয়েছিলেন মার্কোস রাশফোর্ড, জেডন সানচো ও বুকায়ো সাকা।

হাঙ্গেরির বিপক্ষে বড় জয়ের পর ইংলিম বস বলেছেন, ‘ম্যাচের শেষভাগে এসে আমরা কিছু বিরুপ মন্তব্য শুনতে পেয়েছি। কিন্তু আমরা সবাই একে অপরের পাশে আছি এবং এই ধরনের ঘটনা একেবারেই অগ্রহনযোগ্য। সবকিছুই রিপোর্ট করা হয়েছে। এখন দেখা যাক এর ফল কি হয়। বিশ্ব প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হলেও কিছু মানুষ তাদের কুসংষ্কার নিয়েই বেঁচে আছে।’ তথ‌্য-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান