ইরান শনিবার ঘোষণা করেছে, তাদের সেনাবাহিনী ‘অনিচ্ছাকৃতভাবে’ ইউক্রেনের যাত্রীবাহী বিমানকে ভূপাতিত করেছিল, যাতে ১৭৬ আরোহীর সকলেই নিহত হন। এর আগে ওই ঘটনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা বারবার ইরানকে দায়ী করলেও তারা সেটি অস্বীকার করে।
গত ৩ জানুয়ারি ইরাকের রাজধানী বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে মার্কিন বিমান হামলায় ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা কাসেম সোলাইমানি নিহত হন। এর মাত্র চার দিন পর গত মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাতে ইরাকে অবস্থিত দুটি মার্কিন বিমান ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এর কয়েক ঘণ্টা পরেই ইরানের রাজধানী তেহরানের পাশে ইউক্রেনের ওই বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ১৭৬ আরোহীর সবাই নিহত হন।
ইউক্রেনের বিমানটি তেহরানে বিধ্বস্ত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র দাবি করে আসছিল যে, ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতই এর কারণ। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বৃহস্পতিবার বলেন, সব প্রমাণ ইঙ্গিত দেয় যে, ইরানের একটি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতেই মঙ্গলবার রাতে ইউক্রেনের একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। তবে এই হামলা ‘অনিচ্ছাকৃত’ হয়ে থাকতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
পশ্চিমাদের এমন দাবির মধ্যেই নিজেদের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতেই ইউক্রেনের যাত্রীবাহী বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে শনিবার নিজেদের ভুলের কথা স্বীকার করে নিয়েছে ইরান।
ইরানের সামরিক বাহিনীর বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেলের প্রতিবেদনে বলা হয়, তারা অনিচ্ছাকৃতভাবে বিমানটিকে ভূপাতিত করেছে।
বিমানটি বিধ্বম্ত হওয়ার ঘটনাকে মানবিক ভুল আখ্যায়িত করে টিভি প্রতিবেদনে বলা হয়, বিমানটি ইরান রেভ্যুলিউশনারি গার্ডসের স্পর্শকাতর এলাকার খুব কাছ দিয়ে উড়ছিল। তবে যাদের কারণে এটি হয়েছে, তাদের দায় নিতে হবে।
প্রসঙ্গত, তেহরান থেকে ইউক্রেইনের রাজধানী কিয়েভের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ১৭৬ জন আরোহী নিয়ে ইউক্রেইন ইন্টারন্যাশনালের ফ্লাইট পিএস৭৫২ বুধবার সকালে বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় আরোহীদের সবার মৃত্যু হয়। আর বিমান যাত্রীদের অধিকাংশই ইরান ও কানাডার নাগরিক ছিল বলে জানা গেছে।