ইতিহাসকে কেউ নিশ্চিহ্ন করতে পারেনা : প্রধানমন্ত্রী

ইতিহাসকে কেউ নিশ্চিহ্ন করতে পারেনা, ইউনেস্কোর স্বীকৃতি তার বড় প্রমান বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামীলীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর দেওয়া ভাষণই মুক্তিকামী বাঙালির মুক্তির পথ তৈরি করে দিয়েছিলো। ৭ মার্চের ভাষণের আবেদন কখনো শেষ হয় না। এই ভাষণই আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলো। বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিলো ক্ষুধা এবং দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশের। আমাদের উচিত তার স্বপ্ন-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা। সেই লক্ষেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

বুধবার বিকেলে ভাষণের শুরুতেই শেখ হাসিনা বলেন, এখন যেটি শিশুপার্ক সেখানে মঞ্চ ছিল। সেখান থেকে জাতির পিতা ঘোষণা দেন -এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম …। সেই ডোকে সাড়া দিয়েছিল সারাদেশের মানুষ।

তিনি আরও বলেন, একাত্তর সালের যুদ্ধ ছিল জনযুদ্ধ। দেশের সব শ্রেণিপেশার মানুষ সে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। আর একশ্রেণির মানুষ হানাদার বাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছে, মা-বোনকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী জানান, ‘আইয়ুব খান তার ডায়েরিতে লিখেছিলেন, যখন কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধুকে বিচারের জন্য নিয়ে আসা হতো তখন তিনি এসে বসার সময় বলতেন ‘জয় বাংলাদেশ’। তোমরা আমার বিচার করে কী করবে, বাংলাদেশ স্বাধীন হবে। যদি আমাকে হত্যা করো, আমার লাশটা বাংলাদেশে পৌঁছে দিয়ে এসো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের প্রযু্ক্তি উন্নয়নে সরকার কাজ করছে। বাংলার মাটি থেকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ নির্মূলে যুব সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। আগামী মাসেই বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপন করতে যাচ্ছি। ফলে দেশ তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে অনেক বেশি এগিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় এসে দেশের উন্নয়নে কাজ করেছে। আর বিএনপি ক্ষমতায় থেকেও মানুষ মারে আবার ক্ষমতায় না থাকলেও ক্ষমতার লোভে আগুন দিয়ে মানুষ মারে।

শেখ হাসিনা বলেন, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হবে। আর ২০৪১ উন্নত দেশ হবে। বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। তাই শুধু দেশ নয়, প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাদেরও আমরা খাবারের ব্যবস্থা করতে পারছি।

তিনি বলেন, আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে খুব শিগগিরই সম্মান এবং স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছি। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে আমাদের এ অর্জন অনুপ্রেরণার।

প্রতি বছর ঐতিহাসিক ভাষণের এই দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হলেও এ বছর জাতিসংঘের শিক্ষা বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ায় ভিন্ন মাত্রা যোগ হয়েছে।

অন্যান্যবারের চেয়ে বেশি উজ্জীবিত হয়ে দিবসটি পালন করছে সারাদেশের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।

গত বছরের ৩০ অক্টোবর ইউনেস্কোর এই স্বীকৃতিতে বাংলাদেশের মানুষের গৌরব ও সম্মান আরেকবার আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

আরএম/