জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মঙ্গলবার চলমান ওয়ানডে ম্যাচটি ছাড়া এই ত্রিদেশীয় সিরিজে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের সব অভিজ্ঞতাই সুখের। ব্যক্তিগত অর্জনের দিক দিয়েও পিছিয়ে নেই খেলোয়াড়রা। বিশেষত তামিম ইকবাল। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটিতে প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে তিন সংস্করণ মিলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১১ হাজার রান পূর্ণ করেছেন। আর চলতি ম্যাচে করেছেন দু’টি রেকর্ড। প্রথমটি ওয়ানডেতে এক ভেন্যুতে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের বিশ্ব রেকর্ড। আর দ্বিতীয়টি প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডেতে ৬ হাজার রান করা। বাকিদের চেয়ে ভাল ব্যবধানে এগিয়ে আছেন ২৮ বছর বয়সী বাঁহাতি তামিম। ফর্মের তুঙ্গে থাকা এই ড্যাশিং ব্যাটসম্যান যে আরও অনেক দূরে যাবেন তা অনুমান করতেও কষ্ট হয় না।
তামিম ইকবাল শুধু ছয় হাজার নয়, প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে চার ও পাঁচ হাজার রানও পূর্ণ করেছিলেন। তামিমের পর সর্বোচ্চ যার রান তিনি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। অথচ সাকিবের অভিষেক তামিমের এক বছর আগে, ম্যাচও খেলেছেন বেশি। তারপরও এই বাঁহাতি ওপেনারই সবাইকে ছাপিয়ে অনেক উপরে। এমনকি সাকিবের চেয়ে প্রায় ৮০০ রানে এগিয়ে আছেন তামিম।
২০০৭ সালে অভিষিক্ত তামিম মোট ১৭৭টি ওয়ানডে খেলেছেন। ১৭৫ ইনিংসে তিনি ৩৫.৩৫ গড়ে করেছেন ৬০১০ রান। ক্যারিয়ারে মোট ৯টি সেঞ্চুরি ও ৪১টি হাফসেঞ্চুরি করেছেন। অন্য কোন বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানের তামিমের চেয়ে বেশি সেঞ্চুরি-হাফসেঞ্চুরি নেই।
তামিমের পরের জায়গাটিতেই আছেন সাকিব। ১৮৩ ম্যাচে ৭ সেঞ্চুরি ও ৩৭ ফিফটিতে ৩৫.১৩ গড়ে ৫২৩৫ রান করেছেন। এর পর আছেন উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহীম। ১৮২ ম্যাচের ১৬৮ ইনিংসে ৩৩.১২ গড়ে মুশফিক করেছেন ৪৬৭০ রান। ৫টি সেঞ্চুরির সাথে ২৮টি ফিফটি তার।
দেশের ইতিহাসের শীর্ষ দশের প্রথম তিনেই বর্তমান জাতীয় দলের শ্রেষ্ঠ তিন ব্যাটসম্যান। টপ টেনের চতুর্থ জায়গাটি বাংলাদেশের লিটল মাস্টার মোহাম্মদ আশরাফুলের। বিপিএলে ম্যাচ পাতানোর দায়ে ২০১৩ সালে নিষিদ্ধ হন তিনি। এর আগে ১৭৫ ওয়ানডের ১৬৮ ইনিংসে ২২.৩৭ গড়ে ৩৪৬৮ রান করেছেন। দেশের হয়ে ৩টি সেঞ্চুরির ও ২০টি হাফসেঞ্চুরি করেছেন আশরাফুল।
আশরাফুলের পরের জায়গাটি বর্তমান দলের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের। ১৫১ ম্যাচের ১৩১ ইনিংসে মাহমুদউল্লাহ ৩২৪৪ রান সংগ্রহ করেছেন ৩ সেঞ্চুরি ও ১৭ হাফসেঞ্চুরির সাহায্যে। তার ব্যাটিং গড় ৩৩.৭৯
তালিকার ছয় নম্বরে আছেন জাতীয় দল থেকে ছিটকে পড়া শাহরিয়ার নাফীস। ২০০৫ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ৭৫ ম্যাচ খেলেছেন এই বাঁহাতি। তাতে ১৩ হাফসেঞ্চুরি ও ৩ সেঞ্চুরিতে ২২০১ রান করেছেন নাফীস।
তারপরই আছেন বাংলাদেশের অন্যতম সফল অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমন। এক সময় এই মিস্টার ফিফটি সবার ওপরে ছিলেন। ১১১ ম্যাচে ২১.৬৮ গড়ে ২১৬৮ রান করছেন এই ঠান্ডা মাথার ব্যাটসম্যান। ১৪টি ফিফটি থাকলেও কোন সেঞ্চুরি করতে পারেননি হাবিবুল।
হাবিবুলের পরই আছেন বাংলাদেশের টেস্ট দলের নিয়মিত সদস্য ইমরুল কায়েস। ওয়ানডে দলে নিয়মিত সুযোগ না পাওয়ায় ৯ বছরে মাত্র ৭০টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ২ সেঞ্চুরি ও ১৪ ফিফটিতে ২৮.৯৫ গড়ে ইমরুল করেছেন ১৯৯৮ রান।
বাংলাদেশের একজন মারকুটে ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিত আফতাব আহমেদ ২০০৪ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন। ৮৫ ম্যাচে ১৪ ফিফটিতে ১৯৫৪ রান করেছেন আফতাব। দারুণ প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান ছিলেন। তারও কোন সেঞ্চুরি নেই।
এই তালিকার দশ নম্বরে আছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান খালেদ মাসুদ পাইলট। ১৯৯৫ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ১১ বছরে ১২৬ ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ১১০ ইনিংসে ২১.৯০ গড়ে তার রান ১৮১৮। মোট ৭টি ফিফটি করেছেন তিনি।
সুত্র: পরিবর্তন ডটকম
আজকের বাজার: সালি / ২৩ জানুয়ারি ২০১৮