ইরাক-ইরান সীমান্তে শক্তিশালী ভূমিকম্প: বাড়ছে মৃতের সংখ্যা

আজকের বাজার প্রতিবেদন: ইরাক ও ইরানের সীমান্তবর্তী এলাকায় শক্তিশালী ভূমিকম্পে কমপক্ষে ৩৩৯ জন ছুঁয়েছে। আহত হয়েছে হাজারেরও বেশি মানুষ। এতে ইরানেই মারা গেছে ১৪১ জন। ইরাকে ৬ জন মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে সাড়ে ৫ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছে বলে রেডিও তেহরানের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে।

জেদ্দাভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আরবনিউজ জানিয়েছে রোববার রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৩ মাত্রার এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়।

ইরাকের আধা স্বায়ত্ত্বশাসিত কুর্দিস্তান অঞ্চলে ভূকম্পনটি আঘাত হানে, ফলে ওই অঞ্চলের সীমান্তে অবস্থিত ইরানের কুর্দিস্তান ও কেরমানশাহ প্রদেশও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভূমিকম্পের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে তা তুরস্ক, আরমেনিয়া, কুয়েত, জর্দান, লেবানন, সৌদি আরব ও বাহরাইন ও কাতার থেকেও অনুভূত হয়েছে বলে জানা গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) বলছে, ভূমিকম্পটি ছিল ৭ দশমিক ৩ মাত্রার। তবে ইরাকের আবহাওয়া বিভাগ দাবি করছে, এর মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৫। ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল ইরান সীমান্তবর্তী ইরাকের আধা স্বায়ত্তশাসিত কুর্দিস্থানের সুলাইমানিয়া প্রদেশের পেঞ্জভিনে। এলাকাটি ইরানের সঙ্গে প্রধান সীমান্ত ক্রসিংয়ের খুব কাছাকাছি। এ ঘটনায় হতাহতের সংখ্যাও ইরানেই বেশি। ইরানের জরুরি সহায়তা বিভাগের প্রধান জানিয়েছেন, বেশিরভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন শারপল-ই জাহাব শহরে।

ভূমিকম্পের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে তা তুরস্ক, আরমেনিয়া, কুয়েত, জর্দান, লেবানন, সৌদি আরব ও বাহরাইন ও কাতার থেকেও অনুভূত হয়েছে বলে জানা গেছে।

ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা ফার্স জানিয়েছে, এ ভূমিকম্পে সেদেশের কেরমানশাহ প্রদেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ওই প্রদেশে ১২৯ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ‘শারপোল জাহহাব’ শহরে ৬৮ জন, ‘কাসরে শিরিন’ শহরে ৩৮ জন এবং কেরমানশাহ শহরে ২৩ জন প্রাণ হারিয়েছে।

ইরাকি অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সুলাইমানিয়া শহর থেকে ৭৫ কিমি পূর্বে কুর্দিস্তান অঞ্চলের দারবান্দিখান শহরে। দেশটির সুলাইমানিয়া প্রদেশে অন্তত ৩০ জন নিহত ও কয়েকশ মানুষ আহত হয়েছে।

কুর্দিস স্বাস্থ্য মন্ত্রী রেখাত হামা রাশিদ অবস্থা খুবই সংকটপূর্ণ বলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন।

ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার মুখপাত্র বেহনাম সাঈদি জানিয়েছেন, ইরানে অন্তত ১৪১ জন নিহত ও ৮৫০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। দেশটির বেশ কয়েকটি প্রদেশে ভূমিকম্পটি অনুভূত হলেও সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সুলাইমানিয়া শহর থেকে ৭৫ কিমি পূর্বে  কুর্দিস্তান অঞ্চলের দারবান্দিখান শহরে। দেশটির সুলাইমানিয়া প্রদেশে অন্তত ৩০ জন নিহত ও কয়েকশ মানুষ আহত হয়েছে। কর্তৃপক্ষ প্রদেশটিতে তিনদিনের শোক ঘোষণা করেছে।

ইরাকি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইরানের কমপক্ষে ৮টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আরও অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ এবং টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। ভূমিকম্পের পর ভূমিধ্বসের কারণে উদ্ধারকাজও ব্যাহত হচ্ছে।

ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ভূমিকম্প কবলিত এলাকাগুলোতে জোরেসোরে ত্রাণ ও উদ্ধার তৎপরতা চালানোর জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুররেজা রাহমানি ফাজলিকে নির্দেশ দিয়েছেন।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে ১৩ নভেম্বর ২০১৭