ইলেক্ট্রিক্যাল ও ইলেক্ট্রনিক্স খাত উন্নয়নে রপ্তানিবান্ধব নীতি দরকার

দেশের ইলেকট্রনিকস শিল্প দিনে দিনে এগিয়ে যাচ্ছে। ১৫ বছর আগেও চায়না থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ভর করে চলত এই সেক্টর। এখন বেশ কয়েকটি কোম্পানি  দেশের বাজারে  নেতৃত্ব দেওয়ার পর্যায়ে চলে এসেছে। এর মধ্যে সুপারস্টার গ্রুপ একটি। শফিকুল আলম এফসিএ, এফসিএমএ, এফসিএস, দীর্ঘদিন ধরে কোম্পানিটির গ্রুপ সিএফও হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি তাঁর অভিজ্ঞতার আলোকে দৈনিক আজকের বাজার ও আজকের বাজার টেলিভিশনের (এবি টিভি) সাথে আলোচনা করেছেন। আলোচনার অনুলিখন তাঁরই জবানিতে প্রকাশ করা হলো।

আজ থেকে ১২ বা ১৫ বছর আগেও আমাদের দেশের ইলেকট্রনিকস সেক্টর থেকে শুরু করে প্রতিটি ক্ষেত্রেই চায়না থেকে আমদানি করা পণ্য দিয়েই কাজ হতো। ১০ বছরের পুরোনো একটি বিল্ডিংয়ে গেলেও দেখা যাবে যে সেখানে লিফট থেকে শুরু করে ইলেকট্রিক্যাল কেবল, সুইচ, সকেট সবই ইমপোর্ট করা। এখন সুপারস্টারসহ বেশ কয়েকটি কোম্পানি আস্তে আস্তে এই মার্কেটে লিড দেওয়ার পর্যায়ে এসেছে। এখানে দেশীয় কোম্পানিগুলো লোকাল লেবার ব্যবহার করছে, একইভাবে ‘র’ ম্যাটেরিয়ালস উপকরণগুলোও ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে আমাদের সার্বিক অর্থনীতিতে তারা একটা ভূমিকা রাখছে। এই সেক্টরে আরও উন্নতি সম্ভব এবং এর জন্য সরকারকে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।

সেক্টরের উন্নতি করতে হলে
এই সেক্টরকে ইমপ্রুভ করার জন্য সরকারকে অবকাঠামো স্থাপনসহ অন্যান্য বেনিফিট দিতে হবে। একইভাবে গ্লোবালি কমপিট করতে হলে এক্সপোর্টের ব্যবস্থাও করতে হবে। যেমন চায়না হিউজ পরিমাণ ভলিউম নিয়ে বিজনেস করছে। কারণ তারা লোকালি সেল করার পাশাপাশি আমাদের মতো সেকেন্ড ওয়ার্ল্ড, থার্ড ওয়ার্ল্ড কান্ট্রিগুলোতে এক্সপোর্ট করছে। আমাদের দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো এক্সপোর্ট না করার কারণে ভলিউমে মার খাচ্ছে।  একটা নীতিমালা তৈরি করা দরকার, যাতে করে ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকস প্রোডাক্টগুলো বাইরে এক্সপোর্টে যেতে পারে। তবে ওয়ালটন কিছুটা শুরু করেছে। সুপারস্টারও প্রতিবেশী দেশ ভারত, কুয়েতসহ মধ্যপ্রাচ্যের কিছু জায়গায় যাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু এটা যদি সরকারের পক্ষ থেকে স্পেশাল ইনসেনটিভ স্কিমের মধ্যে আসে, তাহলে এই সেক্টর আস্তে আস্তে গ্লোবালি কমপিট করার মতো জায়গায় পৌঁছে যাবে।

বাজারে চায়না পণ্য
এখনো আমাদের বাজারে  চায়না পণ্যের প্রাধান্য দেখা যায়। এখন বাজার ধরতে হলে আগে কোয়ালিটি এনশিওর করতে হবে। একজন শপকিপার যখন একটু বড় স্কেলে এসেই চায়না থেকে বা যেকোনো জায়গা থেকেই প্রোডাক্ট ইমপোর্ট করে মার্কেটে সেল করার সুযোগ পাচ্ছে, তখন এটা স্বাভাবিকভাবেই দেশের প্রোডাক্টের ওপর একটা প্রভাব ফেলে। এ ছাড়া রাস্তায় দেখা যায় মাত্র ১০০ টাকায় এনার্জি বাল্ব বিক্রি হচ্ছে; এটা পরিবেশের যেমন ক্ষতি করে, তেমনি প্রোডাক্টের কোয়ালিটিও ঠিক রাখতে পারে না। আজ ভালো কোম্পানিগুলোকে দুই বছরের গ্যারান্টি দিতে হচ্ছে। এখানে কিন্তু প্রোডাক্টের গুণগত মান নিশ্চিত করা হচ্ছে।

বাংলাদেশে ক্লিয়ার বাল্ব
বাংলাদেশে জিএলএস বাল্ব বা ক্লিয়ার বাল্ব বলতে যেটা বোঝানো হয়, তা সুপারস্টারই ফুল রেঞ্জে, ফুল ম্যানুফ্যাকচারিং শুরু করে এবং এখনো ওটা আমাদের লার্জেস্ট প্ল্যান্ট হিসেবে রয়েছে। এরপর এনার্জি সেভিং বাল্বে যদিও ফুল ম্যানুফ্যাকচারিং করতে পারিনি, তবে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক পার্টস অ্যাসম্বল করা হয়। এলইডিটাও একইভাবে শুরু হয়েছে। একইভাবে ফ্যান ১০০ পার্সেন্ট উৎপাদন করা হচ্ছে। এভাবে প্রতিটি প্রোডাক্টই কোয়ালিটি ঠিক রেখে গ্রাহকের হাতে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এখন সারা দেশে সুপারস্টারের সাড়ে পাঁচ হাজার ডিলার এবং সাড়ে পাঁচ শতাধিক ডিস্ট্রিবিউটর রয়েছে। এ ছাড়া সাড়ে ৩ হাজার এমপ্লয়ি কাজ করছে। এখন এদের বিক্রি যত বাড়বে, ততই ন্যাশনাল ইকোনমিতে কন্ট্রিবিউট করা সম্ভব হবে।

প্রসঙ্গ ট্যাক্স
আজ একটি প্রতিষ্ঠান বিভিন্নভাবে ট্যাক্স দিচ্ছে। করপোরেট ট্যাক্স, ইনডিভিজ্যুয়াল ট্যাক্সসহ সব জায়গাতেই কন্ট্রিবিউট করছে। এ জন্য বলা হয়, লোকাল ইন্ডাস্ট্রি যত গ্রো করবে, ততই সরকারের রাজস্ব বাড়বে। এখন কিন্তু একটি ইন্ডাস্ট্রির মাধ্যমেই দেশের আয়ের ভিত শক্ত হচ্ছে।

সেক্টরের প্রতি সরকারের আন্তরিকতা
এই সেক্টরের প্রতি সরকারের বেশ আন্তরিকতা রয়েছে। কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে কো-অর্ডিনেশনের অভাব দেখা যায়। যেমন গত বাজেটের আগে হঠাৎ একটা সিনারিও গ্রো করল। যারা এলইডি সংযোজন করছে, তাদের ডিউটি স্ট্রাকচার ১২৫-এর কাছাকাছি করা হলো। অপর দিকে যারা ফিনিশড গুড ইমপোর্ট করছে, তাদের ডিউটি হচ্ছে ৩৫-এর মতো। সো, এখানে একটু অবাক লাগাটা কিন্তু স্বাভাবিক। যেখানে সরকারের একটা সদিচ্ছা আছে; এনবিআরের চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে প্রত্যেকেরই আন্তরিকতায় কোনো ঘাটতি নেই। বাট অ্যাসেম্বল প্রোডাক্টের ডিউটি যখন ফিনিশড গুড ইমপোর্টের থেকে বেশি হয়, তখন ভেতরে একটু হতাশা কাজ করে। এখান থেকে উত্তরণের একটা উপায় সরকারকেই বের করতে হবে।

ট্যাক্সের আওতা বাড়ালে আদায়ও বাড়বে
বর্তমানে যে প্যাকেজ ভ্যাট থেকে বের হয়ে কমন ভ্যাট সিস্টেম চালু করা হয়েছে, এতে বড় প্রতিষ্ঠানগুলো কিছুটা লাভবান হচ্ছে। কিন্তু ছোট কোম্পানিগুলোকে হয়তো কিছুটা হোঁচট খেতে হবে। আমার মনে হয় ট্যাক্সের আওতাটা বাড়ানো জরুরি। যারা অলরেডি ভ্যাটের আওতায় আছে, তাদের বিভিন্নভাবে প্রেসার দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে যারা একদমই লিস্টেড না, তাদেরও ট্যাক্সের আওতায় আনতে হবে। তবে আস্তে আস্তে। একবারে করতে গেলে ছোট কোম্পানিগুলোকে বেগ পেতে হবে। একজন মফস্বল ব্যবসায়ী বা জেলা শহরের ব্যবসায়ী প্যাকেজ ভ্যাট দিচ্ছেন, হঠাৎ করে যদি তাঁকে ফুল ট্যাক্স ব্র্যাকেটে নিয়ে আসা হয়, তখন তাঁরা প্রফেশনালি নিতে পারবেন না। ফলে পারস্পরিক সম্মানবোধ ও আস্থাবোধ তৈরি করতে হবে। আর এ জন্য জনসচেতনতাও দরকার। বিজনেসম্যানদের নিয়ে কন্টিনিউয়াস সচেতনতামূলক প্রোগাম করা বা ট্যাক্স সম্পর্কে বোঝানোর মাধ্যমে ট্যাক্স আদায় আরও বাড়তে পারে। এভাবে করলে মনে হয় না কেউ ট্যাক্স ফাঁকি দেবে।

বিএসটিআইকে সচেতন হতে হবে
দেশের অভ্যন্তরীণ স্ট্যান্ডার্ড সার্টিফিকেট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বিএসটিআইয়ের সমস্ত ফর্মুলা বা নিয়মের মধ্যে থেকেই আমাদের বিজনেস করতে হচ্ছে। অথচ হঠাৎ করে একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী চায়নায় গিয়ে, একটা প্রোডাক্ট নিয়ে এসেই বাজারজাত করা শুরু করল। ওই প্রোডাক্টটা বিএসটিআই করা হলো কি না, সেগুলো কিন্তু আমরা জানি না। ফলে রিটেইল শপে আমার পণ্যের পাশেই দেখা যায় ওরকম একটা মানহীন পণ্য রাখা হচ্ছে। এরপর ক্রেতা যখন দেখছে আমার প্রোডাক্টটি ৩০০ টাকা আর ওটার মূল্য ২৫০ টাকা, তখন অটোমেটিক্যালি সে ওতেই প্রলুব্ধ হচ্ছে। এটা বন্ধে বিএসটিআইকে একটু সচেতন হতে হবে। ব্যবসায়ীদেরও কোয়ালিটি প্রোডাক্ট বাজারে ছাড়তে হবে।

ইকোনমিক জোন ভালো উদ্যোগ
সরকারের পক্ষ থেকে যদি একটা গভর্নমেন্ট কন্ট্রোলড ইকোনমিক জোন এনসিওর করা হয়, তাহলে একজন উদ্যোক্তা ট্যাক্স হলিডে না পেলেও যদি একটা জায়গা পায়, তাহলে আর ট্যাক্স হলিডের প্রয়োজন নেই। সে ওই জায়গা দিয়েই বিজনেস করতে পারবে। হতে পারে সে লংটাইম লিজ নেবে অথবা রিজনেবল প্রাইসে কিনে নিয়ে একটা ফ্যাক্টরি করতে পারে। একই সঙ্গে স্পেশাল ইকোনমিক জোনটা যদি একটু বড় পরিসরে করা যায় এবং কন্ট্রোলটা যদি সরকারের হাতে থাকে, তাহলে এটাও একটা ইনসেনটিভ হতে পারে।
অলরেডি থিউরিটিক্যালি প্রসেসটা আছে। বিকজ, স্পেশাল ইকোনমিক জোন প্রসঙ্গে বলা আছে, সেখানে গ্যাস, ইউটিলিটিসহ সব সার্ভিস উদ্যোক্তারা টাইমলি পাবে। কিন্তু এটা যেভাবে বলা আছে, সেটা কার্যকর করতে সমস্যা রয়েছে। কারণ এর ব্যাকগ্রাউন্ডে কাজ করা হয়নি। বাংলাদেশে বেশ কয়েকটা বড় গ্রুপ যেমন এ কে খান গ্রুপ, আব্দুল মোনেম গ্রুপÑ এদের স্পেশাল ইকোনমিক জোন দেওয়া হয়েছে। বাট সেই স্পেশাল জোনের জন্য যে স্পেশাল ফোকাস দরকার, সেটা কতটুকু পাচ্ছে বা পাবে, এতে সন্দেহ রয়েছে। তবে নিঃসন্দেহে বলতে হয়, এটা একটা ভালো উদ্যোগ।

বাজেটে প্রত্যাশা
গত বাজেটে একটা সমস্যা হওয়ার কারণে এই সেক্টরের লোকদের  শ্রমঘণ্টা নষ্ট হয়েছে। এনবিআরে যেতে হয়েছে, অ্যাসোসিয়েশনে মুভ করতে হয়েছে, যা খুব ব্যয়বহুল। তাই এবারের বাজেটে প্রত্যাশা থাকবে, চায়নিজ বা যেসব জায়গা থেকে পণ্য আসছে, সেটা হতে পারে আমাদের প্রতিবেশী দেশ থেকেও, এসব ইমপোর্টেড প্রোডাক্টের ডিউটি স্ট্রাকচার যেটা আছে, তার থেকে ভালো একটা স্ট্রাকচার পাব। এ ছাড়া কিছু স্পেসিফিক প্রোপোজাল অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে। তবে প্রধান চাওয়া হচ্ছে, যারা উৎপাদক তাদের ডিউটি স্ট্রাকচার ইমপোর্টারদের থেকে কম হবে এবং এক্সপোর্টের জন্য একটু বিশেষ সুবিধা দেওয়া হবে।

ট্যাক্স হলিডেটা কন্টিনিউ করাও এই সেক্টরের অন্যতম দাবি। এখন দেখা যাচ্ছে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুরÑ এসব জায়গায় কিন্তু ট্যাক্স হলিডে থাকছে না। লজিক্যালি থাকছে না। বিকজ সরকার চাচ্ছে এসব জায়গার বাইরে গিয়ে উদ্যোক্তারা ইন্ডাস্ট্রি করুক। সো, এটা করতে হলে যেটা করা যায় তা হলো, পাঁচ বছরের জন্য যে ট্যাক্স হলিডেটা আছে, সেটা বাড়ানো যায় বা সাত বছরেরটা বাড়ানো যায়। কারণ এর ইফেক্টটা কিন্তু লং টাইমে ইকোনমিতে পড়বে। আজ যদি একটা ইন্ডাস্ট্রিকে শুরুতে একটু সহযোগিতা করা হয়, তাহলে এটিই একসময় পে ব্যাক করবে।

সুপারস্টার গ্রুপের মাইলস্টোন প্রোডাক্ট
সুপারস্টার গ্রুপের অন্যতম মাইলস্টোন প্রোডাক্ট হচ্ছে ডিএলএইচ বাল্ব। যেটা এই কোম্পানির মেইন প্রোডাক্ট। এরপর যখন এনার্জি সেভিং আনা হলো, ফ্লোরোসেন্ট ল্যাম্প, ওটায়ও সুপারস্টার বেশ ভালো করেছে। ওটা অতটা পরিবেশবান্ধব নয়। তবে এলইডি যেটা এসেছে, এটাকে থার্ড জেনারেশন বাল্বও বলা হয়। এটা পরিবেশবান্ধব, যে কারণে এটাকে গ্রিন এনার্জিও বলা হচ্ছে। সুপারস্টার এটাকে প্রোমোট করেছে। বিজনেসের সঙ্গে সঙ্গে এলইডির ক্যাম্পেইনটাকে সিএসআর হিসেবেও দেখা হচ্ছে। যেমন স্কুলে স্কুলে ক্যাম্পেইনে গিয়ে বাচ্চাদের চোখের যতেœ ক্ষতিকারক আলো ব্যবহারে সতর্ক করা হচ্ছে।

গ্রামে গেলে দেখা যায়, বাচ্চাদের চশমা লাগছে না। অথচ শহরের একটা ওয়ানের বাচ্চারও মোটা ফ্রেমওয়ালা চশমা লাগছে। পর্যাপ্ত আলো পাচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে এলইডিটা বেশ সহায়ক।

২৪৭ কিলোওয়াটের একটা পাওয়ার প্ল্যান্ট করা হয়েছে। যেসব জায়গায় আগামী ১৫-২০ বছরেও ইলেকট্রিসিটি যাওয়ার সম্ভাবনা নেই, ওই সব জায়গায় আমরা সোলার সাপ্লাই দিয়েছি। সোলারের ব্যাপারেও সরকারের পক্ষ থেকে কিছু সহযোগিতা আশা করছি।

ইলেকট্রিক্যাল ফ্যানের বিষয়ে বলতে গেলে, আগে শুধু সিলিং ফ্যান করা হতো। এখন নিজস্ব ফ্যাক্টরিতে অত্যাধুনিক মেশিনে টেবিল ফ্যানসহ বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্ট তৈরি হচ্ছে।

কৃষি ব্যবসার চিন্তা আছে
এ ছাড়া আরেকটি উদ্যোগ আছে। এগ্রি বিজনেসের প্ল্যান করা হচ্ছে। যেহেতু বাংলাদেশে খাদ্যে ভেজালের বিষয়টি বেশ আলোচিত। আর সুপারস্টার গ্রুপ তো শুধু ব্যবসাই করে না;  আমদের সামাজিক দায়বদ্ধতাও রয়েছে। সে থেকেই মানুষকে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার দেওয়ার জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রথম দিকে মাছ ও ফ্রুটস নিয়ে চিন্তা করা হচ্ছে। এরপর সেকেন্ড টাইমে হয়তো দুগ্ধজাত খাবার যোগ করা যাবে। প্রথমে এটা মৌলভীবাজারে চালু করার চিন্তা করা হচ্ছে।

পুঁজিবাজার বিষয়ে
বাংলাদেশে পুঁজিবাজারকে কেন্দ্র করে দুটি শ্রেণি রয়েছে। একটা হচ্ছে, যারা এত বেশি বিজনেস করেছে, তাদের আর পুঁজিবাজারে আসার প্রয়োজন নেই। আরেকটা শ্রেণি হচ্ছে, যাদের নিজেদের একাউন্ট নিজেদেরই এনসিওর করতে হয়। এ ধরনের কোম্পানিগুলোকে মার্কেটে আনতে চাইলে সরকারের প্রসেসটা কিন্তু অনেক সময় টাইম কনজিউমিং হয়। বলছি না যে কোনো পেপার না দেখেই লিস্টিংয়ের সুযোগ দেওয়া হোক। কিন্তু যারা একটু স্বচ্ছতা চায়, তাদের একটু আগে আনা যায় কি না, সেই ব্যবস্থা করলে বোধ হয় ভালো হয়।

কন্ট্রোল ম্যাকানিজম ভালো জায়গায় রেখে, প্রসেসটা স্মুথ করে এবং কস্ট অব কামিং ইন টু দ্য মার্কেটÑ এটা যদি একটা রিজনেবল লেভেলে আসে, তাহলে অনেক কোম্পানি উঠে আসবে।

বাজারে বিদেশি কোম্পানির স্টেক থাকতে হবে
শুধু সুপারস্টার নয়, ইউনিলিভার, গ্রামীণসহ যে কটি এমএনসি বা কোম্পানি কাজ করছে, তাদের প্রোডাক্ট কিন্তু এ দেশের মানুষই ব্যবহার করছে। দেশের মানুষের কাছ থেকেই মুনাফা অর্জন করছে। যাদের থেকে বিজনেস আসছে, সেই দেশের পুঁজিবাজারে তাদের অংশগ্রহণ থাকবে না, হার্ন্ডেড পার্সেন্ট ফরেন ওনারশিপ থাকবে; এটা কিন্তু শুধু বাংলাদেশেই আছে; অন্য কোনো দেশে এমনটা পাবেন না। সো, যেসব গ্রোয়িং গ্রুপ করপোরেট কালচারে আসতে চাচ্ছে, তাদের এনকারেজ করা উচিত।

শফিকুল আলম
প্রধান অর্থ কর্মকর্তা, সুপারস্টার গ্রুপ