ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী হামাসের সাথে প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করেছে ইসরাইলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা। গতকাল শুক্রবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ভোটাভুটির পর চুক্তিটি অনুমোদন করে নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা।
নেতানিয়াহুর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সমস্ত রাজনৈতিক, নিরাপত্তা ও মানবিক দিক পর্যবেক্ষণের পর এবং প্রস্তাবিত চুক্তি যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জনকে সমর্থন করে’ এটা বোঝার পর চুক্তিটি অনুমোদন করেছে নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, মন্ত্রিসভা ‘সরকারকে প্রস্তাবিত রূপরেখা অনুমোদন করার’ সুপারিশও করেছে। চুক্তিটি এখন আলোচনা ও আনুষ্ঠানিক ঘোষণার জন্য পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রিসভায় যাবে।
যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের মধ্যস্থতায় টানা ১৫ মাসের সংঘাতের পর গত বুধবার গাজায় দ্বিতীয় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে একমত হয় ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী হামাস যোদ্ধারা। কাতারের ও মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামীকাল ১৯ জানুয়ারি রোববার থেকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হবে।
হামাস প্রায় সঙ্গে সঙ্গে চুক্তি অনুমোদন করলেও কিছুটা বিলম্ব করে ইসরাইল। চুক্তি অনুমোদনে বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও নেতানিয়াহু হামাসের বিরুদ্ধে ‘শেষ মুহূর্তে সংকট’ তৈরি করছে বলে অভিযোগ করে বৈঠক পিছিয়ে দেন।
চুক্তিটি অনুমোদনের জন্য শুক্রবার বিকেলে নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি সই হওয়ার পর শেষ মুহূর্তেও গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। গত দুইদিনে গাজাজুড়ে অন্তত ১১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে অন্তত ২৮ জন শিশু এবং ৩১ জন নারী রয়েছেন।
এতে মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৬ হাজার ৮৭৬ জন। নতুন করে ১৮৯ জন আহত নিয়ে মোট আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ৬৪২ জনে।
এএফপি জানায়, চুক্তিতে ছয় সপ্তাহের তথা ৪২ দিনের একটি প্রাথমিক যুদ্ধবিরতির সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
চুক্তির শর্তের মধ্যে রয়েছে, গাজা উপত্যকা থেকে ইসরাইলি বাহিনী প্রত্যাহার করা হবে এবং হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরাইলের কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেয়া হবে।
চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম ধাপে ৩৩ জন ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তি দিবে হামাস। যাদের মধ্যে নারী, শিশু ও ৫০ বছরের বেশি বয়সি পুরুষ রয়েছেন।
চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ কার্যকরের বিষয়ে আলোচনা প্রথম ধাপের ১৬তম দিনের মধ্যে শুরু হবে। সেখানে অবশিষ্ট সব ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তি, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরাইলি বাহিনী সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহারের বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
তৃতীয় ধাপে অবশিষ্ট মৃতদেহগুলোর ফেরত দেয়া এবং গাজা পুনর্গঠনের কাজ শুরুর কথা রয়েছে। এই কাজ মিশর, কাতার ও জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে। (বাসস)