আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধান নির্বাচন কমিশন (ইসি) সঙ্গে সংলাপে বসেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে১৮ অক্টোবর বুধবার সকাল ১১টায় দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে এ সংলাপ শুরু হয়।
সংলাপে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও উপস্থিত রয়েছেন দলটির আরো ২১ জন নেতা। জানা গেছে, গত মঙ্গলবার ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান এইচটি ইমাম সংলাপে অংশ নেওয়া প্রতিনিধিদলের তালিকা নিয়ে সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে যান। সেখানে তালিকার চূড়ান্ত অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে সংলাপে আরো উপস্থিত রয়েছেন, আমির হোসেন আমু এমপি, তোফায়েল আহমেদ এমপি, মতিয়া চৌধুরী এমপি, শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি, মোহাম্মদ নাসিম এমপি, এইচ টি ইমাম, ড. মসিউর রহমান, ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি, লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি, রমেশ চন্দ্র সেন এমপি, অ্যাম্বাসেডর জমির, মো. রশিদুল আলম. মাহবুব উল-আলম হানিফ এমপি, ডা. দীপু মণি এমপি, জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি, আব্দুর রহমান এমপি, এইচ এন আশিকুর রহমান এমপি, ড. হাছান মাহমুদ এমপি, ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ ও অ্যাডভোকেট এবিএম রিয়াজুল কবির কাওছার।
বর্তমানে দলটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম তার স্ত্রীর অসুস্থার কারণে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তাই সংগত কারণেই আজকের সংলাপে তার অংশ নেওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।
বাসস জানায়, সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান ও ইলেকট্রনিক ভোটিং পদ্ধতি (ইভিএম) চালুসহ বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা নির্বাচন কমিশনের সাথে অনুষ্ঠিত সংলাপে তুলে ধরবে আওয়ামী লীগ। মূলত ইসির সঙ্গে আজকের সংলাপে দলটি ১১টি প্রস্তাব তুলে ধরবে। সকল দলের অংশ গ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে বেশ কিছু প্রস্তাবনাও থাকবে। দলের পক্ষ থেকে যে সকল প্রস্তাব তুলে ধরা হবে তার মধ্যে অন্যতম প্রস্তাব থাকবে সংবিধানে নির্বাচনকালীন যে সরকারের কথা বলা হয়েছে , আওয়ামী লীগ চায় এ সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে।
ইভিএম ছাড়াও আওয়ামী লীগের প্রস্তাবনায় সেনা মোতায়েন না করা, আরপিওতে বড় ধরনের কোনও পরিবর্তন না আনা, একান্ত জরুরি না হলে সীমানা পুনর্বিন্যাস না করা, প্রবাসীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তিসহ তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, ভোটার তালিকার ভুলগুলো দূর করার বিষয় বৈঠকে গুরুত্ব দেয়া হবে।
তবে সেনাবাহিনী নিয়ে দলটির বক্তব্য থাকবে, নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন সম্পূর্ন ইসির এখতিয়ার। ইসি প্রয়োজন মনে করলে আইন-শৃংখলা নিয়ন্ত্রণে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনা মোতায়েন করতে পারে। তবে আরপিওতে আইন-শৃংখলা বাহিনীর সংজ্ঞায় প্রতিরক্ষাবাহিনীকে সংযুক্ত করার প্রয়োজন নেই।
সংলাপ বিষয়ে দলটির সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘বর্তমান সরকার শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। এই সরকারই নির্বাচনকালীন সময়ে অন্তবর্তিকালিন সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। এই সরকার রুটিন কাজ গুলো করবে। কিন্তু নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন।
তিনি বলেন, ‘আমরা সংবিধানের বাইরে যাব না। সংবিধানের বাইরে যাওয়া মানেই হচ্ছে রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করা। নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু বিএনপি এটা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করছে।’
এর আগে গত রোববার দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সচিবালয়ে সাংবাদিকদের জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) চলমান সংলাপে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগ সুনির্দিষ্ট ১১ দফা প্রস্তাবনা দেবে। এটা গোপন কিছু নয়।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইসি ঘোষিত কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত ৩১ জুলাই নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, ১৬ ও ১৭ আগস্ট গণমাধ্যমের প্রতিনিধি সঙ্গে সংলাপে বসে ইসি। এরপর ২৪ আগস্ট থেকে কমিশনে নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ শুরু করে নির্বাচন কমিশন। এ পর্যন্ত ৩৫টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করেছে ইসি।
আজকের বাজার:এলকে/এলকে ১৮ অক্টোবর ২০১৭