ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে কুমিল্লায় জমে উঠেছে কেনাকাটা

ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে কুমিল্লায় জমে উঠেছে কেনাকাটা। নগরীর সব কয়টি মার্কেটে বইছে ঈদের হাওয়া। ঈদ সামনে রেখে বাহারি ডিজাইন আর মডেলের পোশাক শোভা পাচ্ছে বিপণি বিতানগুলোতে। ফুটপাত এবং হকার্স মার্কেট থেকে শুরু করে শহরের অভিজাত শপিংমলগুলোতে নেমেছে ক্রেতার ঢল।

কুমিল্লা শহরের কান্দিরপাড়স্থ সাত্তার খান কমপ্লেক্স, খন্দকার হক টাওয়ার, ময়নামতি গোল্ডেন টাওয়ার, হোসনেয়ার ম্যানসন, রিয়াজ ম্যানসন, হাজী প্লাজা, সুফিয়া ম্যানসন, গণি ভূঁইয়া ম্যানসন, সমবায় মার্কেট, চৌরঙ্গী শপিং সেন্টার, বিবি সমতট, কুমিল্লা টাওয়ার শপিং সেন্টার, টাউন হল সুপার মার্কেট, কিউ টাওয়ার, আলভি টাওয়ার. ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজা, হিলটন টাওয়ারসহ নগরীর বিভিন্ন খাদি দোকানগুলোকে চলছে জমজমাট কেনাকাটা।

পোশাক বিক্রেতা মনিরুল ইসলাম বলেন, ১৫ রমজানের পর ক্রেতাদের ভিড় সামলাতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। তিনি বলেন, এবারে দেশি পোশাকের পাশাপাশি বিদেশি পোশাকও মিলছে। তবে দাম ক্রয় ক্ষমতার মধ্যেই রয়েছে।

এবারে কুমিল্লার তরুণীদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে গুলজার, মান্নাত, মিনহাল, নূর, কারিজমা, রিলেশা, মিলান, আনজারা এবং লং কামিজ। এ ছাড়া হিন্দি সিরিয়াল ও সিনেমার বিভিন্ন নায়িকাদের নামানুসারে থ্রি পিসের চাহিদাও ব্যাপক বলে জানান বিক্রেতারা। এ ছাড়া বিভিন্ন ডিজাইনের কুর্তিরও চাহিদা রয়েছে।

তরুণীদের পোশাক এক হাজার থেকে শুরু করে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। ছোটদের পোশাকেও রয়েছে ভিন্নতা। মেয়ে শিশুদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে লং ফ্রক ও পার্টি ফ্রক। এ ছাড়া মার্কেটগুলোতে উঠেছে লেহেঙ্গা ও লং কামিজ। গরমকে সামনে রেখে ছেলে শিশুদের চাহিদার শীর্ষে রয়েছে সুতি টি-শার্ট ও বাবা স্যুট। এ ছাড়া বিভিন্ন ডিজাইনের প্যান্ট। তবে এবারে দেশী পোশাক খাদি ও বাটিক কাপড়ের পোশাকের একচেটিয়া প্রাধান্য রয়েছে।

ঈদে তরুণদের পোশাকেও রয়েছে ভিন্নতা। তবে প্রতিবারের মতো এবারেও ভিন্ন ভিন্ন ডিজাইনের পাঞ্জাবির সমাহার দেখা গেছে মার্কেটগুলোতে। তবে পাঞ্জাবি কেনার ক্ষেত্রে মার্কেটের চেয়ে কুমিল্লার খাদি দোকানগুলোতে ভিড় দেখা গেছে অনেক বেশি। কুমিল্লা নগরীর লাকসাম রোডস্থ খাদি কাপড়ের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় হচ্ছে প্রতিদিন। বিশেষ করে ঈদকে সামনে রেখে খাদি পাঞ্জাবির যোগান ও চাহিদা উভয়ই বাড়ছে। ঐতিহ্য আর আধুনিকতার মিশেল মিলিয়ে খাদি পাঞ্জাবির সমাহার রয়েছে নগরীর রাজগঞ্জ মনোহরপুর, কান্দিরপাড়ের দোকানগুলোতে।

কয়েকজন খাদি কাপড় বিক্রেতার সাথে কথা বলে জানা যায়, পাঁচশ থেকে দুই হাজার টাকার মধ্যে খাদি পাঞ্জাবি বিক্রয় করছেন তারা। সিল্কের ব্যবহার করে খাদি পাঞ্জাবির আকর্ষণীয়তা বাড়ানো হচ্ছে।

খাদি ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে বিক্রি বাট্টাও বেড়ে চলেছে। আশা করি সামনে আরও বিক্রি করব। খাদি কাপড়ের কয়েকটি কারখানা রয়েছে চান্দিনা উপজেলায়। ঈদ উপলক্ষে দিনরাত কাপড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন সেখানকার কারিগররা।

ঐতিহ্য, আধুনিকতা এবং সুলভ মূল্যের কারণে এবারের ঈদে অন্যান্য পোশাকের মত খাদি কাপড়ের আবেদন শীর্ষ পর্যায়ে থাকবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া পোশাক ছাড়াও জুতা ও প্রসাধনীর দোকানে ভিড় বাড়ছে। অনেকে পোশাকের সঙ্গে ম্যাচিং জুয়েলারিও কিনে নিচ্ছেন।

এদিকে, কুমিল্লার নিম্ন আয়ের মানুষের কেনাকাটার জন্য ফুটপাথের দোকানগুলোতেও ভিড় রয়েছে। এ ছাড়া কুমিল্লার কান্দিরপাড় টাউন মার্কেটে হকার্স ঈদ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষ তাদের সাধ্যের মধ্যে পছন্দসই পোশাক কিনে নিচ্ছেন এসব দোকানগুলো থেকে। ফুটপাতে পোশাক কিনতে আসা শ্রমিক কামরুল ইসলাম বলেন, হকার্স মার্কেট থেকে একটি পাঞ্জাবি ও একটি লুঙ্গি কিনেছে। দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় কম বলে মনে হয়েছে বলে তিনি জানান। খবর-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান