উত্তরে আ.লীগের চমক সোহেল তাজ!

সদ্য প্রয়াত ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যুর পর তার শূন্য পদে কে হচ্ছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী এ নিয়ে আলোচনা এখন সর্বত্র। দলীয় সুত্রে জানা গেছে, শুরু থেকেই ব্যক্তি জীবনে সফল, এমন কাউকে দলীয় মনোনয়ন দিবে আওয়ামীলীগ। কে পাচ্ছেন সেই কাঙ্ক্ষিত মনোনয়নের টিকেট? এটিই এখন আলোচনায় কেন্দ্রবিন্ধুতে।

দলীয় সুত্রে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকাকে রাজনৈতিকভাবে নিজেদের দখলে রাখতে, জনপ্রিয়তা ও সাংগঠনিক শক্তির জানান দিতে আওয়ামী লীগ এমন কাউকে প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে চাইছে যিনি জনপ্রিয়তা ও ভোটব্যাংকের ভিত্তিতে সবার থেকে এগিয়ে। আর এ মনোনয়ন তালিকায় এগিয়ে রয়েছেন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদের পুত্র সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ। ঢাকা উত্তর সিটি মেয়র পদে উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হচ্ছেন তিনিই!

দ্বিতীয় সারিতে রয়েছেন, প্রয়াত আনিসুল হকের স্ত্রী রুবানা হক, ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) সভাপতি ও ঢাকা-৯ আসনের এমপি সাবের হোসেন চৌধুরী ও এক সময়ের সাড়া জাগানো চিত্র নায়িকা কবরী।

গত ৪ ডিসেম্বর আনিসুল হকের মৃত্যুতে ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র পদ শূন্য ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। প্রকাশিত ওই গেজেটে বলা হয়, স্থানীয় সরকার (সিটি নির্বাচন) আইনের ১৫ (ঙ) ধারা অনুযায়ী, ১ ডিসেম্বর থকে মেয়র পদটি শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে।

গেজেট প্রকাশের ৯০ দিনের মধ্যে ঢাকা উত্তরের মেয়র পদে উপ নির্বাচন দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এরই মধ্যে সেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে ইসি।

দলটির নীতিনির্ধারকরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিগত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের মতো এবারের উপনির্বাচনে দলীয় প্রাথী নির্বাচনে চমক দেখাবেন। এছাড়া আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এই নির্বাচন দলের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ এই উপনির্বাচন অনেকটাই আগাম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বার্তা বহন করবে।

আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সোহেল তাজের ব্যাপারে দলীয় ফোরামে এখনো কোনো আলোচনা হয়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এসব আলোচনা হচ্ছে। তবে দলীয় ফোরামে আলোচনা হলে সাংবাদিকদের জানানো হবে।

তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশনের উপনির্বাচনে প্রার্থী বাচাইয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চমক দিবেন। পরিস্কার ইমেজের কাউকে দলের পক্ষ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হবে। শুধু এটুকু বলতে পারি। আর তফসিল ঘোষণার পরই দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলটির এক প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে জনপ্রিয় ও ক্লিন ইমেজের প্রার্থীকেই দলীয় মনোনয়ন দিবে আওয়ামী লীগ। প্রার্থী মনোনয়ন দেবে দলের স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ড। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সেখান থেকেই আসবে।

আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে সোহেল তাজের নাম শুনা যাচ্ছে বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না। এটা দলীয় সিদ্ধান্ত।

এ বিষয়ে দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলীয় জোটের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আমি কিছু বলতে পারবো না। যখন সময় হবে সবাই জানতে পারবেন।

দলীয় সুত্রে জানা গেছে, গাজীপুর-৪ আসনের পদত্যাগী সংসদ সদস্য তানজিম আহমেদ সোহেল তাজকে অচিরেই ডেকে পাঠাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোহেল তাজের সায় থাকলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে তাকেই বেছে নেওয়া হবে।

কারণ হিসেবে নেতারা বলছেন, মেয়র হওয়ার পূর্বে সদ্য প্রয়াত আনিসুল হক তেমন আলোচনায় ছিলেন না। কিন্তু মেয়র হওয়ার পর নিজের কর্মের মাধ্যমেই তিনি নিজেকে জানান দিয়েছেন।

যুক্তি হিসেবে তারা বলছেন, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ পরিস্কার ইমেজের জন্য সবার কাছে গ্রহণযোগ্য। এছাড়া দলের জন্য তিনি নিবেদিত প্রাণ। তার প্রমাণ ইতোমধ্যে তিনি অনেকবার দিয়েছেন।

তাছাড়া ঢাকা শহরে সাংগঠনিক শক্তি বাড়ানোর ক্ষেত্রে তার কোনো বিকল্প নেই। একদিকে গ্রহণযোগ্যতা অন্যদিকে সাংগঠনিক শক্তি সব কিছু মিলিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সোহেল তাজ একমাত্র যোগ্য প্রার্থী।

আজকের বাজার:এলকে/১৩ ডিসেম্বর ২০১৭