যমুনা নদীর পানির বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় উত্তরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। উত্তরের জেলা বগুড়া, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ ও কুড়িগ্রাম জেলার বেশ কয়েটি এলাকা নতুন করে প্লাবিত হয়েছে।
৮ জুলাই শনিবার সন্ধ্যা ৬টায়, যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে। এতে করে বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা এবং ধুনট উপজেলার ২৫ থেকে ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ২০ হাজার মানুষ।
এসব এলাকার গ্রামীণ কাঁচা সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে।
এদিকে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর গত কয়েক দিনের টানা বর্ষনে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ এলাকায় বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার কাজিপুর, শাহজাদপুর, চৌহালী, বেলকুচি এবং সদর উপজেলার ৫টি উপজেলার ২৮টি ইউনিয়নের চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বন্যা কবলিত মানুষ বাড়ি ঘর ছেড়ে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান ইমাম জানিয়েছেন, আগামী আরো ৫ থেকে ৭ দিন ধরে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে।
কুড়িগ্রামেও ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ১১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি ৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জামালপুরে বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে যমুনার পানি বিপদসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বগুড়ায় বেরি বাধে আশ্রয় নেওয়া লোকজনের অভিযোগ, খোলা আকাশের নিচে তাঁরা গবাদিপশু আর মানুষে একসঙ্গে বসবাস করছেন। আশ্রয়শিবিরে বিরাজ করছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট; নেই পর্যাপ্ত টিউবওয়েল।
বগুড়া জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা শাহারুল মোহাম্মদ আবু হেনা জানান, শনিবার পর্যন্ত সারিয়াকান্দি উপজেলার দুর্গত এলাকার মানুষের জন্য ৫০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বাঁধে আশ্রয় নেওয়া এক হাজার পরিবারের মধ্যে স্থানীয় সাংসদ আবদুল মান্নান ২০ কেজি করে চাল বিতরণ করেছেন। খাবার পানির সংকটের বিষয়টি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরকে জানানো হবে।
এদিকে জামালপুরে বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে যাওয়ায় পানিবন্দী মানুষের দূর্ভোগ বাড়লেও ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
আজকের বাজার:এলকে/ এলকে/ ০৯ জুলাই ২০১৭