আন্তর্জাতিক অপরাধ প্রতিরোধে সীমান্ত নিরাপত্তা বৃদ্ধি এবং উন্নত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতের সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সীমান্ত সম্মেলন।
বৃহস্পতিবার (১২ জুলাই) পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরে সম্মেলনের শেষদিনে উভয় দেশ মাদক চোরাচালান, অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়, নারী ও শিশু পাচার রোধে সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো এবং উভয় দেশের বিভিন্ন স্তরের কমান্ডারদের মধ্যে ক্রমাগত যোগাযোগের বিষয়ে ঐক্যমতে পৌঁছায়।
সম্মেলনের শেষে বিজিবির অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড ট্রেনিং) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুজিবুর রহমান এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানান।
সীমান্ত সম্মেলন শেষে যৌথ আলোচনার দলিলে (জয়েন্ট রেকর্ড অব ডিসকাশন্স- জেআরডি) দুই পক্ষই সীমান্ত অপরাধ সংক্রান্ত তথ্য বিনিময় করতে একমত হয়েছে বলে জানান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মুজিবুর রহমান।
এছাড়া দুই পক্ষের মধ্যে পূর্ব নির্ধারিত আরো বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয় বলেও জানান তিনি।
সম্মেলনে অনধিকার প্রবেশ, সীমান্তে গুলি চালানো-অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ড থেকে সরে এসে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য মিয়ানমারকে আহ্বান জানায় বাংলাদেশ। এসব থামাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের কথাও বলা হয়। জবাবে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে এসব সমস্যা দূর হবে বলে বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করা হয়।
সম্মেলনে বিজিবির অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আনিছুর রহমান ১৫ সদস্য বিশিষ্ট বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। অন্যদিকে মিয়ানমারের চিফ অব পুলিশ জেনারেল স্টাফ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মায়ো থানের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের মিয়ানমার প্রতিনিধিদল সীমান্ত সম্মেলনে অংশ নেয়।
সীমান্ত সম্মেলনে ইয়াবাসহ অবৈধ মাদকদ্রব্য পাচার প্রতিরোধ, সীমান্তবর্তী এলাকায় মিয়ানমারের বিজিপি ও সেনাবাহিনীর ফায়ারিং বন্ধ, মিয়ানমার নাগরিকদের অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ঠেকানো, সীমান্তবর্তী এলাকায় মিয়ানমারের সামরিক হেলিকপ্টার ও ড্রোন চলাচল বন্ধ, শূন্য লাইন থেকে মাইন ও আইইডি (ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) অপসারণ, বর্ডার লিয়াজোঁ অফিস স্থাপন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে বা অসতকর্তাবশত সীমান্ত অতিক্রমের কারণে আটক ও কারাভোগের পর নাগরিকদের স্বদেশে ফিরিয়ে নেয়া, সীমান্তবর্তী এলাকায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন এবং সীমান্তে নিরাপত্তা রক্ষায় পারস্পরিক সহযোগিতা ও আস্থা বৃদ্ধির বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হয়।
আজকের বাজার/এমএইচ