উপাচার্যকে ঘুষ দিতে এসে ৯ লাখ টাকাসহ ১ যুবক আটক

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষকে চাকরি প্রার্থী ইলিয়াস হোসেন (৩১) ৯ লাখ টাকা ঘুষ দিতে এলে ছাত্রদের সহায়তায় তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। আজ রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের বাংলা বিভাগে অধ্যাপক বিশ্বজিৎ এর অফিস কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত চাকরি প্রার্থীর ইলিয়াস হোসেন (৩১) পাবনা জেলার সুজানগর থানার মধ্যপাড়া ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামের মো আব্দুল হামিদ খান ও সুফিয়া খাতুনের ছেলে। পড়াশুনা করেছেন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে।

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি ডিরেক্টর মো গোলাম সারোয়ার সাংবাদিকদের বলেন, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ পান গত জুনে। বিভিন্ন পদে নিয়োগের জন্য সার্কুলার দেওয়া হয় এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে। ইলিয়াস তিনটি ‘অফিসার পদে’ আবেদন করেন। তারপর থেকেই এই লোক বিভিন্ন সময়ে উপাচার্যের কাছে চাকরির জন্য ধর্না দিতে থাকেন।

এর আগেও একবার ইলিয়াস অধ্যাপক বিশ্বজিৎকে ১৪ লাখ টাকা ঘুষ দিতে চান এবং নানা সময়ে চাকরি চেয়ে মোবাইলে নানান ধরনের মেসেজ দেন যেগুলোর প্রমাণ আছে বলে জানান গোলাম সারোয়ার।

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা রওশন আলম বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অবকাঠামো না থাকায় আমরা ধানমণ্ডিতে অবস্থিত একটি লিঁয়াজো অফিসে দাপ্তরিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। ভিসি স্যার সেজন্য ঢাকায় আছেন। চাকরির জন্য বেপরোয়া এই যুবক স্যারকে ফলো করার জন্য ঢাকার কাঁটাবনে অবস্থিত আল-বাড়াক টাওয়ারের ১২/বি২ ফ্ল্যাটে থাকা শুরু করেন।

সর্বশেষ আজ সকালে উপাচার্য অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ এর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজের বাংলা বিভাগের অফিস কক্ষে সকাল ১১ টার দিকে আসেন এই চাকরি প্রার্থী।

রওশন আলম বলেন, সে ভিসি স্যারের রুমে এসে বলে স্যার আপনার জন্য একটা উপহার আছে। এই বলে স্যারের টেবিলে ৯ লাখ টাকার একটি প্যাকেট রাখে। টাকা দেখে স্যার ধমক দিলে সে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এ সময় স্যারও পেছনে চিৎকার দিয়ে ধাওয়া করেন। সে সময় ছাত্ররা এসে ইলিয়াসকে ধরে ফেলে। পরে পুলিশ ডেকে তাকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়।

উপাচার্য অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ সাংবাদিকদের বলেন, সকাল ১১ টার দিকে আমি আমার অফিসে ছিলাম। এসময় ছেলেটি আসে। সে আমার টেবিলে একটি ব্যাগ রাখে। এতে কি আছে জানতে চাইলে, সে কিছু না বললে আমি ব্যাগ খুলে দেখি। আমি তাকে ধরে ফেলতে চাইলে সে দৌড় দেয়। এসময় কলাভবনের কয়েকজন ছাত্র তাকে ধরে আমার অফিসে নিয়ে আসে। পরে আমি তাকে ডিন অফিসে নিয়ে যাই। সেখান থেকে শাহবাগ থানার পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

শাহবাগ থানার ওসি (তদন্ত) বলেন, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে ঘুষ দিতে চাইলে তারা একজনকে ধরে ফেলেন। পরে আমরা গিয়ে তাকে থানায় নিয়ে এসেছি।

আজকেরবাজার/ আইএস/এস