ঋণ প্রবাহ বাড়িয়ে বিনিয়োগ সহায়ক মুদ্রানীতি ঘোষণা

বিনিয়োগ সহায়ক পরিবেশ বজায় রাখতে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে এবং সরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ কমিয়ে চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়াধের্র মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন মুদ্রানীতিতে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রাও একটু বৃদ্ধি করে ধরা হয়েছে ৬ শতাংশ। যা আগে ছিল ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।

সোমবার রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সম্মেলন কক্ষে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জানুয়ারি-জুন সময়ের এই মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন। মুদ্রানীতির ঘোষণাপত্রে গভর্নর বলেন, অভ্যন্তরীণ ঋণ যোগানের বেসরকারি খাতের অংশের প্রবৃদ্ধি আগের ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ মাত্রার চেয়ে উচ্চতর ১৬ দশমিক ৮ শতাংশে প্রক্ষেপিত হয়েছে। সরকারি অর্থায়নে ব্যাংক ঋণের ব্যবহার কমে যাওয়ায় বেসরকারি খাতের জন্য ঋণপ্রবাহ বাড়ানো সম্ভব হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধের (জুলাই-ডিসেম্বর) মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ বিতরণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ১৬ দশমিক ২ শতাংশ ধরা হয়েছিল। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাবে ডিসেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণ বিতরণ ল্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১৯ শতাংশে উঠেছে। অন্যদিকে নতুন মুদ্রানীতিতে সরকারি ঋণ প্রবাহের লক্ষ্যমাত্রা আগের ১২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮ শতাংশ দশমিক ৩ শতাংশ করা হয়েছে।

নির্বাচনী বছরকে সামনে রেখে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে সরকারি খাতে ঋণ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা বাড়তে পারে- অর্থনীতিবিদদের এমন মতামতকে সমর্থন করেই বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহের সীমাটা না কমিয়ে বরং বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

ব্যাংকের ঋণ-আমানত অনুপাত বা এডিআর যৌক্তিকভাবে নির্ধারণ করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর। তবে এই অনুপাত কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে আগামী জুন মাস পর্যন্ত ব্যাংকগুলোকে সময় দেওয়া হবে বলে জানান ফজলে কবির । চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। কোন ধরনের ব্যাংকে এডিআর হার কত হবে তা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রকাশ করা হবে বলে জানান গভর্নর।

ফজলে কবির বলেন, আমরা ব্যাংকের ঋণ-আমানত অনুপাত বা এডি রেশিও যৌক্তিকভাবে নির্ধারণের জন্য একটি গাইড লাইন মেনে করি। এবারও সেই গাইড লাইন মেনে এই রেশিও নির্ধারণ করা হবে। ক্ষেত্র সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর সার্বিক অবস্থা, এনপিএলসহ (নন পারফরমিং লোন) বেশ কিছু বিষয় বিবেচনায় নিয়ে তা নির্ধারণ করা হবে। তার মতে, ব্যাংকগুলো আমানত বাড়ানোর মাধ্যমে এটি করবে বলে তাদের কোনো তি হবে না।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতি বছর দুই বার মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও প্রকাশ করে থাকে। একটি অর্থ বছরের প্রথম প্রান্তিকে অর্থাৎ জুলাই মাসে এবং অন্যটি জানুয়ারি মাসে। সাধারণত মুদ্রার গতিবিধি প্রপেণ করে এই মুদ্রানীতি। মুদ্রানীতির অন্যতম কাজগুলো হলো, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ , ঋণের প্রক্ষপেণের মাধ্যমে সরকারি-বেসরকারি ঋণের যোগান ধার্য করা এবং মুদ্রার প্রচলন নিয়ন্ত্রণ করা।

আজকের বাজার: জেএস/ ওএফ/ ২৯ জানুয়ারি ২০১৮