পদ্মা সেতু এখন দৃশ্যমান বাস্তবতা বলে উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন,একটা স্প্যান যখন পিলারে বসে গেছে, এখন বাকি স্প্যানগুলো একটার পর একটা বসে যাবে।
৩০ সেপ্টেম্বর শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে পদ্মা সেতু দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন মন্ত্রী। এর আগে সকাল সাড়ে আটটার দিকে শরীয়তপুরের জারিরা প্রান্তে ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারে ১৫০ মিটার দীর্ঘ স্প্যানটি বসানো শুরু হয়। সাড়ে ১০টার দিকে সেটি পিলারে স্থাপন করা হয়।
সেতুমন্ত্রী বলেন, তিন হাজার ২০০ টন ওজনের স্প্যান বসানোর মধ্যদিয়ে আকাশের কালো মেঘ কেটে দৃশ্যমান পদ্মা সেতু। বাংলাদেশের ইতিহাসে রচিত হলো এক নতুন অধ্যায়ের।
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে বিশ্বব্যাংকের সরে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক যখন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছিল,পদ্মা সেতুর আকাশে তখন কালো মেঘ জমে অনিশ্চতায় রূপ নেয়। তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একক নেতৃত্বে মশাল হাতে নেন,পদ্মা সেতুর কাজকে এগিয়ে নিয়ে যান।’
নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুর সার্বিক অগ্রগতি ৪৭.৫ শতাংশ বলে জানান মন্ত্রী। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই শেষ হবে পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পলারের ওপর স্প্যান স্থাপনের মাধ্যমে নানা প্রতিকূলতা এখন কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে। পিলারে যখন স্প্যান বসানো শুরু হয়ে গেছে, এখন একটার পর একটা বাকি স্প্যানগুলো বসতে থাকবে। নির্দিষ্ট সময়ে সেতুর কাজ শেষ হবে।’
প্রধানমন্ত্রী দেশে আসার পর দৃশ্যমান পদ্মা সেতুর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে বলে জানান মন্ত্রী। তবে প্রধানমন্ত্রীর দেশে আসার অপেক্ষায় এক মিনিটের জন্যও পদ্মা সেতুর কাজ বন্ধ না করতে নির্দেশ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘নেত্রী দেশে আসার পর দুই পাড়ের লোকজন, জনপ্রতিনিধি, নেতাকর্মী এবং কর্মকর্তাদের নিয়ে আনুষ্ঠানিকতা করা হবে।’ ওবায়দুল কাদের জানান, পদ্মা সেতুর ৪৭ শতাংশ কাজ শেষ। মাওয়ার দিকে সংযোগ সড়কের কাজ ১০০ শতাংশ এবং জাজিরার দিকে ৯৯ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সুপার স্ট্রাকচার পিলারের ওপর স্থাপনের মাধ্যমে দৃশ্যমান পদ্মা সেতুর অবকাঠামো ঘুরে দেখেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বড় একটি সিবোটে করে স্প্যান বসানোর এলাকা ঘুরে দেখেন তিনি।
মন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মুন্সীগঞ্জ-২ আসনের এমপি সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি, মেজর জেনারেল মাসুদ সাইদ, প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলামসহ পদ্মা সেতু প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী ও কর্মকর্তারা।
৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু ২০১৮ সালের শেষ নাগাদ জনসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এযাবৎকালে দেশের সবচেয়ে বড় এই প্রকল্পের নির্মাণকাজ ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে প্রায় ২৯ হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতু। এতে মোট ৪২টি পিলার থাকবে, যার ৪০টি নির্মিত হচ্ছে নদীতে এবং দুটি নদীর তীরে।
আজকের বাজার:এলকে/এলকে/ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৭