এটি স্পেশাল ও বিশাল জয় : হোল্ডার

করোনাভাইরাসের কারনে ১১৬ দিন স্থগিত থাকার পর সাউদাম্পটনে ফেরা ক্রিকেটে জয়ের হাসি হাসলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে ক্যারিবীয়রা। তাই এই জয়কে স্পেশাল বলে অভিমত ব্যক্ত করলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক জেসন হোল্ডার।

প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডের চেয়ে ১১৪ রান বেশি করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ইংল্যান্ডের ২০৪ রানের জবাবে ৩১৮ রান করে ক্যারিবীয়রা। দ্বিতীয় ইনিংসে ঘুড়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিলো ইংল্যান্ড। কিন্তু প্রথম ইনিংসের মত দ্বিতীয় ইনিংসেও ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের বেকাদায় ফেলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার শ্যানন গাব্রিয়েল। দ্বিতীয় ইনিংসে শেষ পর্যন্ত ৩১৮ রানে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড। বল হাতে দূর্দান্ত পারফরমেন্স করা গাব্রিয়েল প্রথম ইনিংসে ৬২ রানে ৪টি ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৭৫ রানে ৫ উইকেট শিকার করেন। দুই ইনিংস মিলিয়ে ১৩৭ রানে ১০ উইকেট শিকার করেন গাব্রিয়েল।

জয়ের জন্য ২০০ রানের সহজ টার্গেট ৬ উইকেট হারিয়ে স্পর্শ করে ফেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দলকে জয়ের স্বাদ দিতে প্রধান ভূমিকা রাখেন মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান জার্মেই ব্ল্যাকউড। ১৫৪ বলে ১২টি চারে ৯৫ রান করেন তিনি। তাই করোনা আবহের মাঝেও শুরু হওয়া ক্রিকেটের প্রথম ম্যাচে দুর্দান্ত এক জয়ের স্বাদ নিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

তাই এটাকে ‘বিশেষ’ জয় হিসেবে অভিহিত করেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক হোল্ডার নিজেও। ম্যাচ শেষে হোল্ডার বলেন, ‘এটা সত্যিই স্পেশাল ও বিশাল এক জয়। ইংল্যান্ডে এসে তাদেরকে হারানো মোটেই সহজ নয়। ২০১৭ সালেও আমরা ওদেরকে এক ম্যাচে হারিয়েছিলাম, তাই জয়ের স্বাদটা আমরা জানি। তবে এই জয়ের স্বাদটা পুরোপুরি ভিন্ন। পাঁচ দিন দারুন লড়াই করার পর এই জয় স্পেশালই।’

জয় দিয়ে সিরিজ শুরু করায় দলের পারফরমেন্সের প্রশংসা করেছেন হোল্ডার। তিনি বলেন, ‘সিরিজ এভাবে শুরু হবে ভাবতেই পারিনি। নিজেদের পারফরম্যান্সে আমরা অবশ্যই গর্বিত। দলের সবাই নিজেকে উজার করে দিয়েছে। সিরিজের বাকী ম্যাচগুলোর আগে আমরা এখন অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী।’ প্রথম ইনিংসে বড় ব্যবধানে পিছিয়ে থাকায় দ্বিতীয় ইনিংসে বড় স্কোর গড়ার পথেই ছিলো ইংল্যান্ড।

চতুর্থ দিন শেষ সেশনে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক বেন স্টোকস ও জ্যাক ক্রাউলি দলকে বড় স্কোরের পথেই নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু তাদের আউটের পর ইংল্যান্ডের হাল ধরতে পারেনি আর কোন ব্যাটসম্যান।

স্টোকস-ক্রাউলির আউটের পর ম্যাচ নিজেদের দিকে হেলে পড়ে উল্লেখ করে হোল্ডার বরন, ‘স্টোকস ও ক্রাউলি যখন ব্যাট করছিল, মনে হচ্ছিল আমাদের জয়ের সম্ভাবনা কমে যাচ্ছে। তবে আমরা হাল ছাড়িনি।

আমরা এই ম্যাচটি জিততে চেয়েছি। স্টোকস-ক্রাউলির জুটি ভাঙ্গতে মরিয়া ছিলো বোলাররা। শুধু বোলাররাই নয়, ফিল্ডাররাও নিজেদের সেরাটা দিয়েছে। অনেক কষ্ট করতে হয়েছে আমাদের। এ ম্যাচে ঐ দিনটিই ছিলো চরম উত্তেজনার। একদম শেষ ভাগে দিনটি আমাদের পক্ষে চলে আসে। এটিকে আমি সেরা দিন বলছি, কারন যতবারই বোলারদের বলেছি উইকেট নিতে, তারা সর্বাত্মক চেষ্টা করে গেছে। কেউ বলেনি, সে ক্লান্ত। শেষ পর্যন্ত বোলাররা সফল হয়েছে। আমাদের জয়ের পথ তৈরি করে দিয়েছে বোলাররা।’

ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের পথ তৈরি করতে প্রধান ভূমিকা রাখেন গাব্রিয়েল। ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়ে তাই সেরাও হয়েছেন তিনি। তাই গাব্রিয়েলকে বিশাল হৃদয়ের এক ক্রিকেটার অভিহিত করেন হোল্ডার, ‘এই ম্যাচে গাব্রিয়েল যা করেছে, তা মোটেও বিস্ময়কর নয়। সে দারুন এক বোলার। বিশাল হৃদয়ের এক ক্রিকেটার সে। অনেক সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে তাকে। সাম্প্রতিক সময়ে তার শরীর তার পক্ষে ছিলো না। ফিট হতে সাফল্য পেতে অনেক পরিশ্রম করেছে সে। আমরা সবাই জানতাম, গাব্রিয়েল ফিট থাকলে কতটা ভয়ংকর হতে পারে। শেষ পর্যন্ত সাফল্য ধরা দিয়েছে তাকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ে ভূমিকাও রেখেছে সে। এই সাফল্যের সবটুকু তার প্রাপ্য। তার পারফরমেন্সে আমরা পুরো দল সত্যিই অনেক খুশি।’ খবর-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান